×

জাতীয়

নির্বাচনের প্রভাব স্টল নির্মাণেও

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২০, ১১:৪০ এএম

নির্বাচনের প্রভাব স্টল নির্মাণেও
মেলায় প্রবেশ করতেই কানে এলো হাতুড়ি-পেরেকের ঠক ঠক আওয়াজ। কোথাও বাঁশ কাটার কাজ চলছে। কোথাও ইট দিয়ে মেঝে পাকা করার তোড়জোড়। অন্যদিকে বসানো হচ্ছে নাম ফলক। কোথাও দেখা গেল কাঠ দিয়ে চলছে স্টলের ভেতরে সাজসজ্জার কাজ। কোথাও আবার রংতুলিতে রাঙানো হচ্ছে স্টলের ব্যানার বা প্রচ্ছদ। নির্বাচনী প্রভাবে এখনো সেজে উঠতে পারেনি সব স্টল। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে এই দৃশ্য দেখা গেছে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রায় আসন্ন। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বইমেলা। সে জন্য চলছে স্টল নির্মাণের জোর প্রস্তুতি। অন্য বছরের তুলনায় এবারে বইমেলার লটারি অনুষ্ঠিত হয়েছে বেশ আগে। এর পরপরই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে চলছে প্রকাশকদের স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজ। কিন্তু এখনো কাজ চলছে ঢিমে তালে। এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন নির্বাচনের প্রভাব। এ প্রসঙ্গে জার্নিম্যান বুকসের সিইও কবি তারিক সুজাত বলেন, নির্বাচনের প্রভাব তো রয়েছেই। কেবল তাই নয়, এর ফলে আমাদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন জাতীয় কবিতা উৎসবেরও অনেক শিডিউলে পরিবর্তন আনতে হয়েছে। অনেক বিদেশি কবি এসে একটু বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই পড়বেন। এটা মাথায় রাখা উচিত ছিল কিন্তু তা উপেক্ষিতই থাকল। গত বছরের তুলনায় এ বছর বইমেলার পরিধি বেড়েছে, প্যাভিলিয়নের সংখ্যাও বেড়েছে। পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে এখন সেই ব্যস্ততাই লক্ষ্য করা গেছে। গত বছরের চাইতে এ বছর এবার প্যাভিলিয়ন হচ্ছে ৩৪টি। মূলত বড় বড় প্রকাশক প্যাভিলিয়ন পেয়ে থাকেন। উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, কিছু প্যাভিলিয়নের কাজ অনেকটাই শেষের পথে হলেও অনেক প্যাভিলিয়ন পুরোপুরি সেজে উঠতে পারেনি। তেমনি যারা এক ইউনিট, দুই ইউনিট, তিন ইউনিট বা চার ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছেন, তারাও অর্ধ নির্মিত স্টল দ্রুত নির্মাণের কাজের প্রতিই বেশি জোর দিচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে কথাপ্রকাশের বিক্রয় প্রতিনিধি জাফরুল ইসলাম জানান, প্যাভিলিয়ন তত্ত্বাবধানের কাজে তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবস্থান করছেন। ঘুরে দেখা যায়, এই প্রকাশনীর কর্মচারীরা সব কিছু দেখাশোনা করছেন। মুক্তচিন্তা প্রকাশনীর প্রকাশক শিহাব বাহাদুর জানান, প্রতিদিন বিকেলে এসে স্টল নির্মাণের কাজ দেখে যাচ্ছেন। আরো কিছু টুকটাক কাজ বাকি রয়েছে। সেসব গোছানো হচ্ছে। এ ছাড়া মেলা ঘিরে স্টল নির্মাণে অসংখ্য শ্রমিক কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন শিল্প নির্দেশকরা। সব কিছু তদারকি করছেন প্রকাশকরা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাজ করতে আসা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বইমেলার স্টল নির্মাণকে ঘিরে তারা এখন খুব ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সকাল থেকে তাদের কাজ শুরু করতে হয়। সন্ধ্যার পরও কাজ চলে। সুলাইমান রহমান নামের এক শ্রমিক বলেন, প্রায় দেড় দশক বছর ধরে বইমেলার স্টল নির্মাণের কাজ করছি। প্রতি বছর মেলার আগে আগে মন চনমন করে কখন সোহরাওয়ার্দীতে আসব, কখন মেলার কাজে অংশ নেব এই উৎসাহে। ভালোই লাগে বইমেলার স্টল নির্মাণের কাজ করতে। নির্মিতব্য স্টলগুলো ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো প্রকাশক ডিজাইন ধরে ধরে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করে নিচ্ছেন। এ বছর বইমেলায় ৩২২টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। দুই প্রবেশ পথের কাছে বাংলা একাডেমির প্যাভিলিয়ন থাকবে দুটি। সেগুলোর নির্মাণকাজও চলছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রকাশক ভোরের কাগজকে জানান, নির্বাচনের কারণে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে মেলায়। উল্লেখ্য, প্রতি বছরের মতো এ বছরও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকবে শিশু চত্বর। এটাকে মূলত শিশুদের বিনোদন ও শিক্ষামূলক সাজসজ্জা দিয়ে সাজানোর কাজ চলছে। সেই সঙ্গে গত বছর থেকে উদ্যানে নতুন করে শুরু হয়েছে নতুন মঞ্চ, লেখক মঞ্চ। এ বছরও লেখক মঞ্চ হচ্ছে। সব মিলিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উদ্বোধনের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত চলবে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণের কাজের গতি দেখে তাই মনে হলো। তারপর বসবে মাসব্যাপী প্রাণের মেলা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App