×

মুক্তচিন্তা

আমাদেরও সতর্ক থাকতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ১০:২৮ পিএম

বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল বিকেলে এই সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ভাইরাসটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ভাইরাসটি যাতে মহামারি হয়ে না ওঠে সে ব্যাপারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সজাগ দৃষ্টি রাখছে। উদ্বেগজনক হলো, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের নিবিড় বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এ দুই দেশে যাতায়াত করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশেও বিপজ্জনক এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্কতা জরুরি। চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে গত ডিসেম্বরে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয়, এরপর তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা ধরণা করছেন, বিষধর চাইনিজ ক্রেইট বা চাইনিজ কোবরা করোনা ভাইরাসের মূল উৎস হতে পারে। চীনের রাজধানী বেইজিং, বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও কানাডা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এমনকি আমাদের পাশের দেশ নেপালেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। চীন ভাইরাসটি সামাল দিতে পারবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ভাইরাসের সংক্রমণ সীমাবদ্ধ রাখা চীনের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ একজন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে গড়ে আড়াই জন আক্রান্ত হতে পারে। এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে। তবে এর পরিণামে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া, নিউমোনিয়া এবং মৃত্যু ঘটারও আশঙ্কা রয়েছে। এ ভাইরাস ঠিক কতটা ভয়ঙ্কর তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন কীভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে এবং কীভাবে ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায়, তা বের করার। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার কথা বলা হলেও ভাইরাসটি কীভাবে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে স্থানান্তর হচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়। ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ভাইরাসটির বিস্তার সীমাবদ্ধ করতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। করোনা ভাইরাস যেহেতু ছোঁয়াচে, তাই এ ব্যাপারে প্রত্যেকের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। ভাইরাসটির সংক্রমণের প্রধান লক্ষণগুলো হলো শ^াসকষ্ট, জ্বর ও কাশি; পর্যায়ক্রমে শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল ও নিউমোনিয়ার মধ্য দিয়ে এটি অবসান ঘটায় জীবনের। করোনা ভাইরাস সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন করার পাশাপাশি সরকার প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এটাই প্রত্যাশা। পাশাপাশি উহানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে দ্রুত উদ্যোগ নেয়া উচিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App