×

জাতীয়

আতিকের নির্বাচনী ইশতেহারে যা আছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ০২:১৮ পিএম

আতিকের নির্বাচনী ইশতেহারে যা আছে

ইশতেহার ঘোষণা করেন মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।

‘সচল, সুস্থ ও মানবিক ঢাকা’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। রবিবার(২৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।

সুস্থ ঢাকা

আমাদের এই নগরী কোটি মানুষের আশ্রয়স্থল। এই শহরে বসবাস করা নাগরিকদের সুস্থতা নির্ভর করে এই শহরের সুস্থতার উপর। একটি সুস্থ ঢাকা নিশ্চিত করতে হলে অতি দ্রুত কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা জরুরি, যা বাস্তবায়িত হলে ঢাকাবাসী আবারও গর্বের সঙ্গে বলতে পারবে ঢাকা পৃথিবীর অন্যতম সুস্থ শহর। একটি সুস্থ ঢাকা গড়ার জন্য আমার প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে :

১. উন্নত বিশ্বের মত IVM (Integrated Vector Management পদ্ধতিতে DNCC, DACC, WASA স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, পার্শ্ববর্তী সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা সাথে নিয়ে বছরব্যাপী মশা নিধন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ২. টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমিনবাজারে RRF (Resource Recovery Facilities) স্থাপনের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য অপসারণ ও জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তর ৩. তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বাড়াতে শহরের সকল ওয়ার্ডে নিয়মিত পাড়া উৎসব উদযাপন ৪. বস্তিবাসীদের জন্য নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকরণ ৫. প্রতিটি এলাকার জলাশয় দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন করে নাগরিকদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া ৬. উঘঈঈ’র বর্ধিত এলাকায় নারীবান্ধব CRHCC (Comprehensive Reproducrive Health Care Center) Ges PHCC (Primary Health Care Center) নির্মাণ ৭. মিরপুরে উঘঈঈ’র নিজস্ব জায়গায় বৃক্ষ অনুরাগীদের জন্য বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষ্য প্রাণী ক্লিনিক নির্মাণ ৮. সকলের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এলাকাভিত্তিক দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত পার্ক ও আধুনিক খেলার মাঠ নির্মাণ ৯. নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক পশু জবাইকেন্দ্র স্থাপন ১০. উঘঈঈ’র প্রতিটি স্থাপনায় মাতৃদুগ্ধ কক্ষ নির্মাণ ১১. বিশেষভাবে সক্ষম এবং নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সকলের জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিখ টয়লেট নির্মাণ ১২. ঢাকা উত্তরের উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন জায়গায় গরংঃ নষড়বিৎ এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়ুদূষণ কমানো ১৩. উঘঈঈ’র প্রতিটি ওয়ার্ডে নানাবিধ সুবিধা সম্বলিত ওয়ার্ড কমপ্লেক্স তৈরি করা

সচল ঢাকা ঢাকা শহরের বাসিন্দারা তাদের পাড়া মহল্লাসহ সকল রস্তাঘাটে চলতে গেলেই নানারকম বাধার সম্মুখীন হন। রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনায় শিকার হন অনেকেই। প্রতিটি এলাকায় পরিকল্পিত ফুটপাত, ফুট ওভারব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং, সাইকেল ও মোটরসাইকেল লেন, আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল না থাকায় নগরবাসীর অবাধ চলাচল ব্যাহত হয়। তাই, ঢাকাকে একটি সচল নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আমি একটি দুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করেছি :

১. ফুটপাথ দখলমুক্ত করে এলাকাভিত্তিক পথচারী-বান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাথ নেটওয়ার্ক তৈরি করা ২. যানজট নিরসনে DMP, DTCA, BRTA, DSCC, পরিবহন মালিক সমিতিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা ৩. নিরাপদ পথচারী পারাপারের জন্য ঢাকা উত্তরে বিভিন্ন জেব্রা ক্রসিং-এ Digital Push Button Signal স্থাপন করা। ৪. আধুনিক নগর-পরিবহন ব্যবস্থার জন্য ডিজিটাল e-ticketing সেবাপ্রদান, অ্যাপ-নির্ভর সময়সূচি প্রবর্তন এবং সুনিয়ন্ত্রিত ও নারীবান্ধব গণপরিবহন নিশ্চিতকরণ ৫. স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তন ৬. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণস্থাপনা এবং গণপরিবহন নিশ্চিতকরণ ৭. নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ ৮. হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা ৯. প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত পরিকল্পনা- ঢাকা বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন-এর কাজ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সকলকে নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা ১০. নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে প্রয়োজন অনুযায়ী অধিকাংশ স্থানে এস্কেলেটরসহ নতুন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ ১১. সাইকেলের জন্য আলাদা লেন (যেখানে সম্ভব) এবং সাইকেল পার্কিং তৈরি করা ১২. নাগরিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য পরিকল্পিত স্মার্ট বাস স্টপ ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ ১৩. প্রতিটি মহল্লার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং সেন্সর-এর মাধ্যমে জলাবদ্ধতার স্থান ট্র্যাক করে সমাধান করা

আধুনিক ঢাকা উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্নত বিশ্বের রাজধানীগুলোর মত ঢাকার আধুনিকায়ন না হলে বর্তমান বিশ্বের সাথে আমরা তাল মিলিয়ে চলতে পারব না। কাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বর্তমান সময়ে শুধু প্রয়োজনীয়ই নয়, অপরিহার্য। ঢাকার আধুনিকায়ন হলে নগরীর সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাবে। স্বপ্নের আধুনিক ঢাকা নির্মাণের জন্য আমার পরিকল্পনা হচ্ছে :

১. সবার ঢাকা App-এর মাধ্যমে নাগরিক সমস্যার অভিযোগ গ্রহণ ও সার্বক্ষণিক তদারকিসহ সকল নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরণ, যেখানে মেয়রের সাথে নাগরিকদের সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকবে ২. ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য নাগরিক সেবা প্রদান ৩. ব্যবসায়ীদের কোন প্রকার অসুবিধার সম্মুখীন না করে, ডিএনসিসির মালিকানাধীন কাঁচা বাজার ও মার্কেটগুলোর আধুনিকায়নের জন্য চলবে স্ট্রাকচারাল আপগ্রেডেশেন ৪. একটি সার্বক্ষণিক Digital Command Center তৈরি, যার মাধ্যমে শহরের নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, Smart Neighbourhood পরিচালনা ইত্যাদি সম্পন্ন হবে ৫. নগরের সার্বিক উন্নয়নে নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতিসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞগণের সহায়তায় সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ৬. সকল লেক-খালের সংস্কার, উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন, মশা নিয়ন্ত্রণ, পাবলিক স্পেস বৃদ্ধি করা, টেকসই পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ ৭. বায়ু দূষণ রোধে ইলেস্ট্রিক বাস সার্ভিস চালুকরণ ৮. ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহির কর্মকর্তার কার্যালয়ে তৈরি হবে হেল্প ডেস্ক ৯. উত্তর ঢাকাকে একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি এলাকাকে Smart Neighbourhood হিসেবে গড়ে তোলা, পর্যায়ক্রমে প্রতিটি পাড়া-মহল্লাকে এই উদ্যোগের আওতায় আনা ১০. তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে প্রতিটি এলাকায় সাংস্কৃতিক ও সেবা কেন্দ্র গঠন, যেখানে থাকবে হেল্প-ডেস্ক, ট্রেনিং সেন্টার, স্টার্ট-আপ কো-ওয়ার্কিং স্পেস, লাইব্রেরি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও অন্যান্য সুবিধাদি ১১. প্রতিটি এলাকার কমিউনিটি সেন্টারগুলোর আধুনিকায়ন ও বহুমুখী ব্যবহার (আর্ট ক্লাস, গানের ক্লাস, ইয়োগা, আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ) নিশ্চিতকরণ ১২. জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ‘জনতার মুখোমুখি মেয়র’ শীর্ষক নিয়মিত মতবিনিময়-এর মাধ্যমে ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যার সমাধান

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App