×

মুক্তচিন্তা

শহীদ জগৎজ্যোতির হত্যার বদলা আমরা নিয়েছি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:৩৩ পিএম

জগৎজ্যোতিকে যে এখন কেউ চেনেই না তার প্রমাণ হচ্ছে যে তার মৃত্যুদিবসে কেউ একটু আহা-উহুও করে না। যে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেই রাজনীতির উত্তরাধিকারীর বস্তুত এখন অস্তিত্বহীন। তারা জগৎজ্যোতি তো দূরের কথা অন্য কারো আত্মাহুতিকে স্মরণ করার কথাও মনে রাখে না। হয়তো সেজন্য তারা ও অন্য রাজনৈতিক দলগুলো জগৎজ্যোতি সম্পর্কে নিশ্চুপ। আমরা এই মহান বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

জগৎজ্যোতির লাশ নিয়ে সবচেয়ে হৃদয়বিদারক কাজটি করেন তার মা। তিনি ছেলের লাশ ভুল বলে শনাক্ত করেন। জগৎজ্যোতির লাশ তার ছেলের নয় এমন ভুল তথ্য দেয়ার পরও জ্যোতির পরিবারের যে ক্ষতি হওয়ার তা হলোই। বাড়ি ফিরে যেতে যেতে জ্যোতির বাবা-মা দেখলেন, তাদের ভিটায় আগুন, জ্বলছে সব। ওদিকে নর্দমার ময়লায় লুকিয়ে থাকা রাজাকার তেলাপোকাগুলো জ্যোতির লাশটা নৌকার সামনে বেঁধে নিল, জলসুখা থেকে আজমিরীগঞ্জ পর্যন্ত ঘাটে ঘাটে উৎকট উৎসাহের সঙ্গে প্রদর্শন করল ‘গাদ্দার’-এর লাশ, পৈশাচিক উল্লাসে। তারপর আজমিরীগঞ্জ পৌঁছে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেয়নেটে ক্ষতবিক্ষত লাশটা বেঁধে রাখল তারা, সবাইকে দেখিয়ে দেখিয়ে জানাল, এই হচ্ছে সেই কুখ্যাত ভারতীয় দালাল, গাদ্দার...। হাসান মুর্শেদের দেয়া তথ্য থেকে আরো জানা যায় যে, ‘১৬ নভেম্বর জগৎজ্যোতির শহীদ হওয়ার দিন। প্রথম বীরশ্রেষ্ঠ হওয়ার কথা ছিল জগৎজ্যোতি দাসের, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জগৎজ্যোতির মৃত্যুর পর তাকে সর্বোচ্চ বীরত্বভ‚ষণ দেয়ার কথা বলা হয়েছিল বারবার, কিন্তু অব্যাখ্যানীয় কোনো কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি, বীরশ্রেষ্ঠ তো দূরে থাক, ভাটি অঞ্চলের কিংবদন্তি জগৎজ্যোতিকে আজ প্রায় কেউই চেনে না।’ একাত্তরে আমরা সবাইকে ভারতের দালাল আর গাদ্দার বলে পাকিস্তানিরা চিহ্নিত করত। জগৎজ্যোতিকে যে এখন কেউ চেনেই না তার প্রমাণ হচ্ছে যে তার মৃত্যুদিবসে কেউ একটু আহা-উহুও করে না। যে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেই রাজনীতির উত্তরাধিকারীর বস্তুত এখন অস্তিত্বহীন। তারা জগৎজ্যোতি তো দূরের কথা অন্য কারো আত্মাহুতিকে স্মরণ করার কথাও মনে রাখে না। হয়তো সেজন্য তারা ও অন্য রাজনৈতিক দলগুলো জগৎজ্যোতি সম্পর্কে নিশ্চুপ। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এই মহাবীরকে স্মরণ করতে শুনিনি। হাওর এলাকার কেউ তাকে স্মরণ করে না। তিনি যে স্কুলে লেখাপড়া করেছেন, যে এলাকায় তার বাড়ি এবং যে এলাকায় তিনি যুদ্ধ করেছেন তাদের কেউ তাকে স্মরণে রাখার মতো কোনো কর্মকাÐ করেন না। ক’দিন আগে আজমিরীগঞ্জ থেকে একটি পাঠাগারের চিঠি আমার কাছে আসে, যাতে পাঠাগারটির নাম জগৎজ্যোতি বলে উল্লেখ করা হয়। তার কোনো স্মৃতিসৌধ কোথাও আছে বলে খবর পাইনি। স্বাধীনতার এত সময় পরও কেবল বইয়ের পাতায় বা অনলাইনে একজন জাতীয় বীরের বিবরণ সীমিত থাকবে সেটি প্রত্যাশিত নয়। যে সময়ে দেশে স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আছে সেই মুহূর্তে আমরা এই প্রত্যাশাটি করতেই পারি যে এই বীর তার প্রাপ্য সম্মান পাবে। আমি রাজনৈতিক নেতাসহ নীতি-নির্ধারকদের সবার কাছে আবেদন জানাই যেন এই বীর পুরুষটিকে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। নিজে হাওর এলাকার মানুষ হিসেবে আমি এটিও চাই যে, এই এলাকার মানুষের কাছে জগৎজ্যোতি দাসের যুদ্ধ এবং তার বীরত্ব যেন তুলে ধরা হয়। তবে এই নিবন্ধের শেষ প্রান্তে একটি বীরত্ব কাহিনীর কথা আমি উল্লেখ করতে পারি। আমরা সবাই জানি ১৬ নভেম্বর জগৎজ্যোতি শহীদ হওয়ার এক মাসের মাঝেই দেশটি স্বাধীন হয়। পাকিস্তানিরা নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করলেও তারা এমনকি তাদের বাংলাদেশি দালালদের দিকে নজরও দেয়নি। শাল্লা থানায় যেসব রাজাকার অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও পাকিস্তানি বাহিনীর পদলেহন করেছিল তারা পরাজয়ের পর আত্মগোপন করে। শাল্লা আমার পাশের থানা বলে ১৬০ জনের সেই রাজাকার বাহিনী আমাদের থানা খালিয়াজুরিতে বিভিন্ন গ্রামে তাদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। শাল্লার সদর দপ্তর ঘুঙ্গিয়ারগাওয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প স্থাপন করে। তাই ভয়ে ওরা সেই থানায় যাওয়ার কথা ভাবেনি। কিন্তু যখন টের পেল যে পাকিস্তানের পতন হয়েছে তখন আত্মসমর্পণের পথ খুঁজতে থাকে। আমি তখন আমার থানার মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প লিপ্সায় ছিলাম। জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সম্ভবত ১২/১৩ তারিখে আমার গ্রামের বাড়ি কৃষ্ণপুর থেকে একজন লোক একটি টেলিগ্রাম ও বাবার একটি নির্দেশ বহন করে আনেন। টেলিগ্রামটি ছিল আফতাব আহমদ নামক আমার এক বন্ধুর। সে লিখেছিল, কাম শার্প আফতাব। ঢাকা থেকে পাঠানো সেই টেলিগ্রামটি আমার ঢাকা ফেরার রাস্তা গড়ে তুলে। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস আমরা দুই বন্ধু বিচ্ছিন্ন ছিলাম। বাবার আদেশটি ছিল গ্রামের বাড়ি যাওয়ার। বাবার আদেশ মানতে গিয়ে বাড়ি এসে জানতে পারি যে, শাল্লা থানার রাজাকাররা আমার কাছে আত্মসমর্পণ করতে চায়। আমার গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কাশেমকেও তারা আমার সঙ্গে দেখতে চায়। কাশেম যেহেতু শাল্লার মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে ছিল সেহেতু তাকেও আমি বাড়ি পৌঁছার আগেই খবর দিয়ে বাড়িতে আনা হয়। কাশেমদের বাড়িতেই অস্ত্রসমর্পণ করার ব্যবস্থা করা হয়। কাশেমরা ওদের আত্মীয় ছিল। কাশেমদের পরিবারের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল শাল্লার সুলতানপুরের ও দিরাইয়ের শ্যামারচরের দুই চেয়ারম্যান বাড়িতে। তাই তারা অনেক ভরসা করে তাদের বাড়িটাকেই নিরাপদ মনে করে। যেদিন তারা আত্মসমর্পণ করে সেই দিনটি ছিল সম্ভবত শনিবার ১৫ জানুয়ারি। রাজাকাররা দল বেঁধে কাশেমদের বাড়িতে আমার পদতলে অস্ত্রসমর্পণ করে। ওদের অনুরোধ ছিল আমি যেন তাদের লিপ্সা নিয়ে যাই। কিন্তু ওদের আত্মসমর্পণ এর পর আমি তাদের এবং অস্ত্রগুলোকে শাল্লা পাঠানোর ব্যবস্থা করি। ১৫ জানুয়ারি রাতটা তারা আমাদের গ্রামেই কাটায়। আমি সম্ভবত ওদের আত্মসমর্পণের পরই ১৫ জানুয়ারি বিকেলে হেঁটে আজমিরীগঞ্জে চলে আসি। এটি তাদের লিপ্সা না পাঠানোর একটি কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বস্তুত আমি রাজাকারদের লিপ্সার মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে পাঠাতে চাইনি। এর দুটি কারণ ছিল। প্রথমত, তারা শাল্লার রাজাকার, তাদের শাল্লায় পাঠানো সঠিক। ওদের বিচার শাল্লার মুক্তিযোদ্ধাদেরই করা উচিত। দ্বিতীয়ত, আমি ঢাকা চলে এসেছি, লিপ্সা যাইনি। তাই লিপ্সা নিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। শাল্লায় তখন ক্যাম্পের দায়িত্ব গোবিন্দপুরের সুকুমার নামক আমার এক বন্ধুর হাতে। রাজাকাররা শাল্লা পৌঁছালে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করে। এরপর সম্ভবত ১৬ জানুয়ারি রাতে তাদের সভার নামে একসঙ্গে জড়ো করা হয়। সেই সভা থেকেই তাদের ঘুঙ্গিয়ারগাওয়ের কাছে ভেরামোহনা নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করা হয়। সেখানে থেকে কেউ কেউ পালিয়ে বাঁচে। তবে মূল নেতা দুই চেয়ারম্যানসহ তাদের স্বজন ও নেতারা সবাই মারা যায়। এর মধ্য দিয়ে জগৎজ্যোতির ঘাতকদের সরাসরি বিচার করা হয়। ঘুঙ্গিয়ারগাও ওরফে শাল্লা থানার হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ও সম্পদ ফিরে পায়নি। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সেই সান্ত¦নার জায়গাটুকু প্রদান করতে সক্ষম হয় যে অত্যাচারের পতন কোনো না কোনোভাবে হয়ই।আমার জানা মতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যেমনি জগৎজ্যোতির মতো বীর আমরা খুব বেশি পাইনি তেমনি শাল্লার রাজাকারদের মতো অন্য কোনো এলাকার রাজাকারদের তাদের কৃতকর্মের শাস্তিও তেমনভাবে দেয়া যায়নি। এ ঘটনার বহু বছর পর আমি সুকুমারের খোঁজ করছিলাম। কিন্তু তার কোনো খোঁজ আমি আর পাইনি। কাশেম মুক্তিযুদ্ধের পর ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করার পর টঙ্গীর একটি স্কুলে শিক্ষকতা করে এখন টঙ্গীতেই অবসর জীবনযাপন করে। আমি কাশেমের কাছে শাল্লার ঘটনার বিবরণ জানতে চেয়েও হতাশ হয়েছি। কোনো বিষয়েই কাশেম কোনো কথা বলে না। এটি কাশেমের জন্য বিব্রতকর মনে হতে পারে। এবার ২০১৯ সালে এসে জগৎজ্যোতির পরিবারের বর্তমানের কিছু খবরাখবর পেয়েছি। জগৎজ্যোতির ডাক নাম ছিল শ্যাম। তার বাবার নাম ছিল জিতেন্দ্র চন্দ্র দাস। পেশায় তিনি ছিলেন রাজমিস্ত্রি। সেই সময়ে জলসুখার মতো গ্রামে থেকে এমন একটি বিরল পেশা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করাটা খুবই কঠিন কাজ ছিল। তিনি অতি সহজ-সরল ও সাধারণ মানুষ ছিলেন। তার মা ছিলেন হরিমতি দাস। গ্রামের নাম জলসুখা, ডাকঘর জলসুখা, উপজেলা আজমিরীগঞ্জ, জেলা হবিগঞ্জ। জগৎজ্যোতি ১নং জলসুখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করেন। এরপর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন আজমিরীগঞ্জ এ বি সি উচ্চ বিদ্যালয়, বিরাট (বর্তমান নাম আজমিরীগঞ্জ এ বি সি সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বিরাট)-এ। সেখান থেকে আমাদের এক বছর আগে আমার ভাই আব্দুল হান্নান, ভাগ্নে আবিদ ও হেলিমের সঙ্গে ১৯৬৫ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। এরপর তিনি ভারতের আসাম চলে যান এবং আসামের নওগা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তারপর তিনি সুনামগঞ্জ কলেজে ডিগ্রি শ্রেণিতে ভর্তি হন। তিনি জলসুখা কে জি পি উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শিক্ষক হিসেবে প্রায় ২ বছর অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করেন। শ্যামেরা ২ ভাই ও ২ বোন। তার প্রথম বোন দুলু রানী দাস ভারতে বসবাস করতেন। বর্তমানে মৃত। তার ভাইবোনদের মাঝে দ্বিতীয় ভাই জীবনানন্দ দাস (ডাক নাম জীমু)। তার পেশাও ছিল রাজমিস্ত্রি। তিনিও এখন আর বেঁচে নেই। তার ভাইবোনদের মাঝে তৃতীয় ফুলু রানী দাস। স্বামী মৃত সুবল চন্দ্র দাস। গ্রাম টোক দিরাই, উপজেলা দিরাই, জেলা সুনামগঞ্জ। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জগৎজ্যোতি দাসের উত্তরাধিকারী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহোদয়ের কাছ থেকে ক্রেস্ট গ্রহণ করেছিলেন। পরিবারের সবার ছোট ছিলেন জগৎজ্যোতি দাস বা শ্যাম। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। জগৎজ্যোতির ভাই জীবনানন্দ দাসের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে মৃত্যুবরণ করেন। জগৎজ্যোতির সহযোদ্ধা যারা এখনো বেঁচে আছেন তারা হলেন : ১. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী, সেকেন্ড ইন কমান্ড, দাস পার্টি। অবসরপ্রাপ্ত উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা। বর্তমানে সপরিবারে কিশোরগঞ্জ বসবাস করেন। ২. মোহাম্মদ আলী মুমিন। বিশিষ্ট সাংবাদিক। বানিয়াচং, হবিগঞ্জ। ৩. মো. মতিউর রহমান লাল, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, গ্রাম কাকাইলছের, আজমিরীগঞ্জ, হবিগঞ্জ। ৪. মো. আব্দুর রশিদ (শহীদ জগৎজ্যোতি দাসের বাল্য বন্ধু), গ্রাম ও ডাকঘর জলসুখা, আজমিরীগঞ্জ, হবিগঞ্জ। ৫. মো. রাশেদুল হাসান কাজল, গ্রাম ও ডাকঘর শিবপাশা, আজমিরীগঞ্জ, হবিগঞ্জ। জগৎজ্যোতির ভিটেমাটি এখন আর তাদের নেই। অভাবের তাড়নায় বাড়িটা তার পরিবার বিক্রি করে দেয়। বাড়িটি ক্রয় করেন ডা. মহিতোষ দেবনাথ। বর্তমানে তার শিক্ষক পুত্র মিন্টু দেবনাথ সপরিবারে এ বাড়িতে বসবাস করেন। আমরা এই মহান বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। মোস্তাফা জব্বার : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও কলাম লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App