×

মুক্তচিন্তা

তৈরি পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ ও করণীয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:৩৫ পিএম

ভোরের কাগজের খবরে প্রকাশ, দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের প্রবৃদ্ধি কমছে। ডিসেম্বরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও তা আশানুরূপ নয়। খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিশ্ববাজারে মন্দা আর চীন, ভারত, ভিয়েতনামের মতো প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে সক্ষমতার অভাবে এমন নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে পুরো রপ্তানি খাত। বিদায়ী বছরের শুরুতে অনেক প্রতিশ্রুতি ছিল পোশাক খাতে। বছরের শুরুতে ২০২১ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলার অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে পুরো উদ্যমে কাজ করলেও কিছু অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এ দেশের পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্য অর্জনে বেশ বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের শ্রমিক অসন্তোষ পোশাক খাতের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। রপ্তানিও কমে অব্যাহতভাবে। তবে মৌসুমের কারণে গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি কিছুটা ইতিবাচক। কিন্তু এ অবস্থা বেশি দিনের জন্য স্থায়ী হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া অবমূল্যায়ন, জিএসপি ও কম মজুরির সুবিধা নিতে চীনারা মিয়ানমারে কারখানা করছে। সেখানেও অনেক ক্রয়াদেশ চলে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে শুরুতে অনেক চীনা ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে এসেছে। তবে মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে সেসব ক্রয়াদেশ আবার ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারে সরে যাচ্ছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্র্যান্ডগুলোর বিক্রি কিছুটা কমে গেছে। সেজন্য ক্রয়াদেশ কিছুটা কমে গেছে। তৈরি পোশাকশিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত। অনেক চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে গত কয়েক দশকের পথপরিক্রমায় দেশের তৈরি পোশাকশিল্প আজকের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অনেক প্রতিক‚লতা এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির পথে। দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে পোশাক শিল্পের কোনো বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশ থেকে যে রেমিট্যান্স আসছে তার অন্যতম খাত হলো গার্মেন্টস শিল্প। প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক অর্থ আয় করছে। যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে পোশাক রপ্তানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিজিএমইএ। এই লক্ষ্যমাত্রাকে অনেকে উচ্চাভিলাষী বললেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এর জন্য বিদ্যমান অনেক সমস্যা দূর করতে হবে। বিশ^ পোশাক বাজার এখন ৬৫০ বিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশ এর মাত্র ৫ শতাংশ সরবরাহ করে। এ হার ৮ শতাংশে উন্নীত করতে পারলেই ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এই টার্গেট পূরণে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক ও বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। নিশ্চিত করতে হবে শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা। একই সঙ্গে পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ আরো উন্নত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App