×

সাহিত্য

আনা ইসলামের ‘নভেরা: বিভুঁয়ে স্বভূমে’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

Icon

nakib

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:২১ পিএম

আনা ইসলামের ‘নভেরা: বিভুঁয়ে স্বভূমে’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব
আনা ইসলামের ‘নভেরা: বিভুঁয়ে স্বভূমে’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব
আনা ইসলামের ‘নভেরা: বিভুঁয়ে স্বভূমে’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

‘নভেরা: বিভুঁয়ে স্বভূমে’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

নভেরা আহমেদ বাংলাদেশের আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পের অন্যতম অগ্রদূত। এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম বাংলাদেশী ভাস্কর নভেরা আহমেদ আমাদের শিল্প জগতের এক অনন্য নাম। তার কাজ, শিল্পচেতনার উৎস, তার জগত অনুধাবনে সচেষ্ট থেকেছেন কথাশিল্পী-শিল্পসমালোচক আনা ইসলাম। প্রায় দুই দশকের এই অন্বেষণে তিনি রচনা করেছেন ‘নভেরা: বিভুঁইয়ে স্বভূমে’ গ্রন্থটি। বুধবার শাহবাগের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বইটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হলো। এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। আলোচনা করেন নভেরা আহমেদের স্বামী গ্রেগোয়ার দ্য ব্রুনস, শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, শিল্পসমালোচক মঈনউদ্দীন খালেদ এবং গ্রন্থের লেখক আনা ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্যপ্রকাশ এর প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। সমাপনী বক্তব্য রাখেন জার্নিম্যান বুকস এর সিইও তারিক সুজাত। অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় প্রয়াত নভেরা আহমেদের শেষ সাক্ষাৎকারের তথ্যচিত্র। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, আমাদের ব্যর্থতা নভেরা বাংলাদেশের সর্বত্র পরিচিত নন। ভাস্কর্য চর্চার ক্ষেত্রে নভেরা পথিকৃৎ। শহীদ মিনারের সঙ্গে তার সংযোগ- তার যে সৃষ্টি তা ভোলার মতো নয়। তার সময়ের চেয়ে নভেরা অগ্রবর্তী ছিলেন। সেজন্য ঢাকার সমাজ তাকে গ্রহণ করেনি। আজ আমরা নভেরাকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি। এটা সম্ভব হয়েছে আনা ইসলামের বইটির কারণে। শ্রমলব্ধ বইটির মধ্য দিয়ে নভেরার জীবন ও কর্মের সবটাই উঠে এসেছে। বইটি নতুন করে নভেরাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, উপমহাদেশে নভেরার মতো ভাস্কর এখনও আসেনি। তিনি যে কতটা প্রাগ্রসর ছিলেন তার প্রমান পাওয়া যায় শহীদ মিনারের নকশায়। ভাষা আন্দোলনের শহীদ মিনারের অনুপ্রেরণাতেই বাংলাদেশের সৃষ্টি। গ্রেগোয়ার দ্য ব্রুনস বলেন, মেডেল, অর্থ এসবের প্রতি নভেরার আগ্রহ ছিল না। নভেরা জীবনকে ভালোবাসতেন। নভেরা তার সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা মানুষ ছিলেন। শিল্পচর্চার ক্ষেত্রেও তাই। কোনো নিয়ম তাকে বাঁধতে পারতো না। শামসুজ্জামান খান বলেন, লুপ্ত সম্পদ উদ্ধারের যে আনন্দ হয় আজ সেরকমই আনন্দ হচ্ছে। এর চাইতে সুন্দর মুহূর্ত আর হতে পারে না। সৌন্দর্য ও নান্দনিকতার প্রতীক নভেরাকে নিয়ে আনা ইসলাম যে কাজ করেছেন তা সাধারন কাজ নয়। তিনি বলেন, আমি জাতীয় জাদুঘরে যখন ছিলাম তখন অনেক কষ্টে নভেরা হল করেছিলাম। কিন্তু এরপর যারা আসে তারা সেটা বন্ধ করে দেয়। মঈনুদ্দিন খালেদ বলেন, আধুনিক ভাস্কর্য চর্চায়, শহীদ মিনারের নকশাকার নভেরা আহমেদের জীবনের সত্য জানতে বইটি সহায়ক হবে। এটি একটি সত্যনিষ্ঠ দলিল। নভেরা সম্পর্কে যে গল্প জুড়ে হয়েছিল তা যে ফাঁপা তার প্রমাণ এই বই। এ বই নন্দন তত্বে একটা বড়ো সংযোজন। শহীদ মিনারের স্থপতি হিসেবে নভেরা আহমেদের নাম ঘোষণার দাবি জানিয়ে আনা ইসলাম বলেন, দীর্ঘ তিন বছর অপেক্ষার পর নভেরাকে খুঁজে বের করেছি।এরপর আমাদের সম্পর্ক অন্তরঙ্গ হয়ে উঠেছিল ছোট বোন বড় বোনের মতোই। এরপর প্রত্যেক শনিবারে তার সঙ্গে দেখা করতে যেতাম।এমনকি শেষ বিদায় জানিয়েছি কপালে কালো তিলক এঁকে দিয়ে।  আনা আরো বলেন, এই গ্রন্থটি যুক্তি-তথ্য দিয়ে আমি লিখেছি। যারা সত্যিকারের সৎ মানুষ তারা নভেরার সম্মানটাকে ফিরিয়ে দেবেন। আনা ইসলাম নভেরার নামে সড়কের নামকরণেরও দাবি জানান। স্বাগত বক্তব্যে তারিক সুজাত বলেন, বহু বছর ধরে নভেরা সম্পর্কে যে মিথ্যার ধুম্রজাল তৈরী হয়েছিলো-আনা ইসলাম তথ্য-যুক্তি-প্রমাণ সহ তার উত্তর খোঁজার চেষ্ট করেছেন। নভেরা বিষয়ে ব্যক্তি-রাষ্ট্র ও আমাদের চিরচেনা শিল্প ভুবনের যে উদাসীনতা তার একটি জোড়ালো জবাব এই বই। একইসঙ্গে নভেরা আহমেদের নামে সড়কের নামকরণের কথাও উল্লেখ করেন। বইটি যৌথভাবে প্রকাশ করেছে অন্যপ্রকাশ ও জার্নিম্যান বুকস। বইটির মূল্য ১৫০০ টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App