×

মুক্তচিন্তা

সরকার ও নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:০৫ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মেয়েদের শিক্ষাগ্রহণের ব্যাপারে ব্যাপক জোর দিয়েছে, কেননা শিক্ষা ব্যতীত ক্ষমতায়ন সম্ভব নয়। বিনামূল্যে ৬-১০ বছরের সব শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা দেয়া হয়ে থাকে। বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয় মাধ্যমিক পর্যন্ত, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের ভর্তির হার এখন ৫১% এবং মাধ্যমিকে তা ৫৩%, যেখানে ছেলেদের ক্ষেত্রে তা ৪৭% মাত্র কিছু বছর পেছনে ফিরে দেখা যাবে যখন ছেলেদের হার ছিল ৬৫% এবং মেয়েদের হার ছিল মাত্র ৩৫%। আবার নারীর সম্পত্তিতে সমান অধিকার ও ব্যবসায়ে সমান সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকার ২০১১ সালে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি পাস করে। পারিবারিক সহিংসতা (দমন এবং নিরাপত্তা) আইন ২০১০ পাস করা হয়। পাশাপাশি সরকার মানব পাচার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ প্রণয়ন করেছে। সরকার নারীর প্রতি সব প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডো) বাস্তবায়ন করেছে। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা আরো ৫টি বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে চলমান দশটি কর্মসূচির মধ্যে নারীর ক্ষমতায়ন একটি। নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতা নির্ধারণে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ৪টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে নারীর সামর্থ্য উন্নীতকরণ, নারীর অর্থনৈতিক প্রাপ্তি বৃদ্ধিকর, নারীর মতপ্রকাশ ও মতপ্রকাশের মাধ্যম সম্প্রসারণ এবং নারী উন্নয়নে পরিবেশ সৃষ্টিকরণ। এ ছাড়াও দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে নারী উন্নয়নের বাজেটে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ২৭.৯৯ শতাংশ। এ ছাড়াও নারীর ক্ষমতায়নসহ তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ৭৯৫ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিগত বছরগুলোর বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সাত বছরে নারী উন্নয়নে বরাদ্দ পাঁচগুণেরও বেশি বেড়েছে। এ ছাড়াও বর্তমান সরকারের তিনবারের শাসনামলে বাংলাদেশের নারীর অবস্থান মৌলিকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ১. দেশের প্রথম নারী স্পিকার হিসেবে ৩০ এপ্রিল ২০১৩ সালে শপথ ও দায়িত্ব গ্রহণ করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। ২. ২০১৫ সালে সেনাবাহিনীতে প্রথম নারী সৈনিক এবং সীমান্ত প্রহরায় অর্থাৎ বিজিবিতে প্রথম নারী জোয়ান নিয়োগ। ৩. ২০১৭ সালে দেশের প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার হন কবিতা খানম। ৪. ২০১৮ তে দেশের প্রথম নারী মেজর জেনারেল হন ডা. সুসানে গীতি। ৫. সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতিসহ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পদে নারীরা নিয়োগ পাচ্ছে। লিঙ্গ-সমতা স্থাপনের অন্যতম নিয়ামক রাজনৈতিক ক্ষমতায় নারী-পুরুষের আনুপাতিক অবস্থান। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে সৃষ্টি করেছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম প্রকাশিত গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৩ অনুযায়ী, ১৩৬টি দেশের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্য নিরসনে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৫তম, যা ১০ বছরে এগিয়ে ১১ ধাপ। নারী শিক্ষা ও নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রগতি অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ‘গ্লোবাল সামিট অব উইমেন’-এর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘গ্লোবাল উমেন লিডারশিপ’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ দুটি গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে নিজস্ব ব্যক্তিত্ব আর প্রায়োগিক সামর্থ্যকে আরো বেগবান করেছেন তিনি। শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App