মাতারবাড়ি বন্দর দ্রুত বাস্তবায়নে জাইকার তাগিদ

আগের সংবাদ

৪২ তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কীতে পদাতিকের ‘গুণজান বিবির পালা’

পরের সংবাদ

ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদককে ধাওয়া, রণক্ষেত্র ইবি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২০ , ৬:১৬ অপরাহ্ণ আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২০ , ৬:৪৫ অপরাহ্ণ

ছাত্রলীগের দলীয়বিদ্রোহী কর্মীদের হামলায়, ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাস। এতে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে ইবির প্রধান ফটকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ হয়।

এর আগে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ক্যাম্পাসে এলে চার বার তাকে ধাওয়া দিয়ে বের করে দেয় কর্মীরা। এরপর ঘটনার প্রতিবাদে ও রাকিবকে গ্রেপ্তার দাবিতে দুপুর দেড়টা থেকে ইবি প্রধান ফটকে তালা দিয়ে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী কর্মীরা। বিকেলে কুষ্টিয়া শহর থেকে সাধারণ সম্পাদক রাকিবকে আটক করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, কর্মীদের দ্বারা অবাঞ্ছিত ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ এবং সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ক্যাম্পাসে প্রবেশের খবরে সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিলো ক্যাম্পাস। বেলা ১১টায় ছাত্রলীগকর্মী অনিক, বিপুল, সোহাগ, আদিত, আবির, ইমনের নেতৃত্বে দলীয় টেন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি প্রধান ফটকে গিয়ে সভাপতি সম্পাদক গ্রুপের তিনজন কর্মীকে মারধর করে। এরপর থেকে বিভিন্ন গ্রুপে মহড়া দিতে দেখা যায়। পরে বেলা দেড় টার দিকে সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন কর্মী এবং স্থানীয় বাহিরাগত ২ জন ক্যাডার নিয়ে থানা গেট থেকে মিছিল দিয়ে প্রধান ফটকে আসে।

এসময় বিদ্রোহী কর্মীরা দলীয় টেন্ট থেকে মিছিল নিয়ে প্রধান ফটকে যায়। পরে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উভয় পক্ষের হাতে বাঁশ, লাঠি-সোটা এবং রড ছিলো বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের সময় তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করে কর্মীরা। এতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ প্রায় ২০ জন কর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে দুইজনকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে নেয়া হয়েছে। বাকিদের ইবি চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

বিদ্রোহী গ্রুপের হামলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের ওপর। ছবি: প্রতিনিধি।

এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং রাকিবকে গ্রেপ্তার দাবিতে দুপুর দেড়টা থেকে ইবি প্রধান ফটকে তালা দিয়ে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। বেলা আড়াইটায় মহাসড়ক অবরোধ তুলে নিলেও ক্যাম্পাসের ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাখে তারা। এতে ক্যাম্পাসের দুই শিফটের গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে।

এদিকে বহিরাগত নিয়ে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত করায় তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী পক্ষের কর্মী হানিফ হুসাইন (আইন) বাদী হয়ে সাধারণ সম্পাদক রাকিবকে এক নম্বর এবং সভাপতি পলাশকে দুই নম্বর আসামি করে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ইবি ছাত্রলগের সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কর্মসূচি ঘোষণার জন্য ক্যাম্পাসে যাই। কিন্তু ক্যাম্পাসে পৌঁছানোর আগেই আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। প্রতিবাদে মিছিল বের করলে আমার ওপরও হামলা হয়। সাধারণ সম্পাদকও গুরুতর আহত হয়েছে।’

দায়িত্বরত প্রক্টর ড. আনিছুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগের এমন সংঘর্ষের ঘটনার গোয়েন্দা তথ্য ছিলো। সকাল থেকেই পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। র‌্যাবও টহল দিয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’

ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আরিফ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক সময় মাঠে ছিলাম। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কেন, কী জন্য, কীভাবে ঘটনা ঘটলো তা তদন্ত করে আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই পলাশকে সভাপতি ও রাকিবকে সম্পাদক করে ইবি ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এক মাস পরেই ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে নেতা হয়ে আসার অডিও ফাঁস হলে এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন কর্মীরা। এরপর একাধিকবার ক্যাম্পাসে ঢুকলেও ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়েন রাকিব।

হামলায় আহত এক ছাত্রনেতা। ছবি: প্রতিনিধি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়