২০০ বছরে দেহের তাপমাত্রা কমে গেছে ১ ডিগ্রির বেশি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৪৭ এএম
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমরা কিন্তু ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছি ধীরে ধীরে। আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রার পারদ উত্তরোত্তর নামতে শুরু করেছে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব মেডিসিন’ এক সাম্প্রতিক গবেষণায় জানায়, ১৬০ বছর বা তার কিছুটা বেশি সময় আগে আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা যা ছিল, সেই উনিশ শতকের উষ্ণতা আমরা ধরে রাখতে পারিনি। দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা কমে গিয়েছে ১ ডিগ্রি ফারেনহাইটেরও বেশি। ফলে, জ্বর মাপার সময় থার্মোমিটারে যে তাপমাত্রাকে (৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) আমরা স্বাভাবিক বলে ধরে নিই, তা-ও এখন অ-স্বাভাবিক! গত ২০০ বছরে সেই স্বাভাবিকতা নেমে পৌঁছেছে ৯৭.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। তবে মহিলাদের শরীরের গড় স্বাভাবিক তাপমাত্রা এখনও ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অনুপম মাজি জানান, আমাদের দেহের গড় স্বাভাবিক তাপমাত্রার এই অবনমন হঠাৎই হয়নি। তা ধাপে ধাপে নেমেছে। এর পরেই রসিকতা করে তিনি বলেন, ফলে, দেহের তাপমাত্রার পারদ এখন ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছুঁলেই আমি, আপনি অফিস থেকে একটা ক্যাজুয়াল লিভ নিয়ে নিতে পারি!
অনুপম জানান, ১৬০ বছর আগে জার্মান চিকিৎসক ভান্ডারলিক যখন হিসাবটা কষেন, তখন আমাদের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৩৮ বছর। যক্ষা থেকে সিফিলিস এবং নানা রকমের প্রদাহে তখন আকছায় মৃত্যু হতো আমাদের। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের গড় স্বাভাবিক তাপমাত্রা কমে যাওয়া আর প্রদাহে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সেই তাপমাত্রা বাড়ার ঘটনার রেকর্ড থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কেন তরুণ প্রজন্মের গা প্রবীণদের চেয়ে তুলনায় বেশি গরম। বিভিন্ন রকমের প্রদাহে বেশি আক্রান্ত হয় তরুণ প্রজন্মই। তার ফলে তাদের দেহের গড় স্বাভাবিক তাপমাত্রাও বাড়ছে।
৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ম্যাজিক নম্বরটির উৎপত্তি কী ভাবে? কলকাতার বিশিষ্ট হেমাটোলজিস্ট সুদীপ্ত শেখর দাস জানান, সেটা ১৮৫১ সালের কথা। আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা কত জানতে ২৫ হাজার রোগীর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় তখন। তার পর তার গড় কষে চিকিৎসকরা পৌঁছান ওই ম্যাজিক নম্বরে।