×

অর্থনীতি

বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে পদক্ষেপ আসছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২০, ১০:০৪ এএম

নীতি সুদ হারে কোনো পরিবর্তন না এনে অর্থনীতির সার্বিক সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ বাড়াতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে দেশের পুঁজিবাজারসহ বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে মুদ্রানীতি পলিসি কমিটির (এমপিসি) ৪৫তম সভায় এ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা দিয়েছেন গভর্নর ফজলে কবির। গভর্নরের সভাপতিত্বে সভায় বৈশি^ক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির ওপর বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতে চলতি অর্থবছরের মুদ্রা ও ঋণ কর্মসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ ও অতিসম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক উৎপাদন প্রবৃদ্ধির শ্লথ গতি সত্তে¡ও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশের কাছাকাছিই থাকবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। জানা যায়, গত জুনের মুদ্রানীতিতে চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) বেসরকারি খাতের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। সভায় বছরভিত্তিক প্রবৃদ্ধির হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ পরিমিত রেখে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত ঋণ প্রবাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মুদ্রানীতিতে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ ঋণপ্রবাহ ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে গৃহীত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে অর্থাৎ বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবদ্ধি ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ থাকবে। এমপিসির সভায় বলা হয়, ব্যাংকিং খাতে নিট বৈদেশিক সম্পদ বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যাংকবহিভর্‚ত খাত (প্রধানত সঞ্চয়পত্র) হতে সরকারের ঋণ সংগ্রহের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় চলতি অর্থবছরের চলমান মুদ্রা ও ঋণ কর্মসূচিতে সরকারি খাতে গৃহীত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। যার ফলে বেসরকারি খাতে গৃহীত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা অপরিবর্তিত রেখে ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। এদিকে গত মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ঋণাত্মক ২ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে আগামী ৬ মাসে অর্থাৎ জুন পর্যন্ত এটি আরো বাড়িয়ে নতুন করে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর অভ্যন্তরীণ ঋণ বিদ্যমান কর্মসূচি ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ ধরা হয়েছে। গত মুদ্রানীতিতে ব্যাপক মুদ্রার সরবরাহ ধরা হয় ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী ৬ মাসে অর্থাৎ জুন পর্যন্ত এটি আরো বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ১৩ শতাংশ। একই সঙ্গে রিজার্ভ মানির লক্ষ্য ১২ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নিট বৈদেশিক সম্পদ শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। তবে কিছুটা কমানো হয়েছে নিট অভ্যন্তরীণ সম্পদের প্রবৃদ্ধি। ১৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, সার্বিক অর্থ ও ঋণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নীতি সুদ হারে কোনো পরিবর্তন না এনে সার্বিক সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি ও দেশের পুঁজি বাজারসহ বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উল্লিখিত মাত্রায় ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলসহ অন্যান্য পণ্যের মূল্যেও কিছুটা ঊর্ধ্বগতি থাকায় গড় সাধারণ মূল্যস্ফীতি ৫.৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হলেও অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ পরিস্থিতির কাক্সিক্ষত উন্নতির ফলে অর্থবছর শেষে তা লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছিই থাকবে বলে ধারণা করা হয়। প্রসঙ্গত, গত মুদ্রানীতিতেই বলা হয় অর্থবছরের দুই অর্ধের জন্য দুবারের পরিবর্তে অর্থবছরের শুরুতে গোটা বছরের জন্য একবার ঘোষণা করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App