×

পুরনো খবর

ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া হচ্ছে কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ১১:৩৮ এএম

ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া হচ্ছে কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ
ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া হচ্ছে কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ

প্রশিক্ষণ নিয়ে হাাঁসের খামার করেছেন নাসিমা বেগম।

ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া হচ্ছে কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ

কম্পিউটার শিক্ষণ নিয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় চাকুরী করছেন গৃহবধূ রিয়ামনি

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় চলছে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। এখানে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে তৃতীয় গভীর সমুদ্রবন্দর পায়রা ও ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো একাধিক মেঘা প্রজেক্ট। এসব উন্নয়ন কাজকে অগ্রসর করার জন্য সরকারের পাশাপাশি একাধিক সংস্থা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। পায়রা বন্দরের উন্নয়নের জন্য ভ‚মি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এসব কর্মমুখী শিক্ষার প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ)। ডরপের অধীনে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেসিক কম্পিউটার, ড্রাইভিং, টার্কি পালন, হাঁস-মুরগি পালন, সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণ, রাজমিস্ত্রি প্রশিক্ষণসহ ১০টি ভিন্ন ভিন্ন কোর্সে মোট ১ হাজার ৩৮৫ জন শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ শেষ করেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত হয়ে উপকৃত হয়েছেন বলেও জানা যায়। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, হারুন হাওলাদার নামে এক শিক্ষার্থী ডরপ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বানাতি বাজারে কম্পিউটার কম্পোজের ব্যবসা খুলেছেন। রিয়ামনি ব্যাংকে চাকরি পেয়েছেন। ৩০০ শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজকর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন। হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে হাজেরা বেগম, নাছিমা বেগম ও রিনি বেগমসহ অনেকেই খুঁজে পেয়েছেন তাদের সুখের ঠিকানা। এরা সবাই পায়রা বন্দরের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার হিসেবে ‘ডরপ’ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কর্মসংস্থান খুঁজে নিয়েছেন। বর্তমানে ডরপের অধীনে মোট ৫টি কোর্স চালু রয়েছে। পায়রা বন্দরের মূল ফটকের পাশের ভবনে বেসিক কম্পিউটার কোর্স চালু রয়েছে। এতে ২৫ জন করে ২ শিফটে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিতে দেখা যায়। সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি ডরপের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নিয়ে সব শিক্ষার্থীই সন্তেুাষ প্রকাশ করেন। লালুয়া ইউনিয়নের সুমনা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, সরকার পায়রা বন্দরের কাজের জন্য আমাদের পৈতৃক ভিটেবাড়ি নিয়ে গেছে। আবার ভ‚মি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে আমাদের কর্মমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে। ডরপের অধীনে প্রশিক্ষণ নিতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত। নাহিদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ডরপ আমাদের অত্যন্ত যত্ন সহকারে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আমরা যাতায়াতের জন্য ভাতাও পাচ্ছি। [caption id="attachment_196280" align="aligncenter" width="700"] প্রশিক্ষণ নিয়ে হাাঁসের খামার করেছেন নাসিমা বেগম।[/caption] ডরপের অধীনে বেসিক কম্পিউটার কোর্স ছাড়াও উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সেলাই প্রশিক্ষণ, রাজমিস্ত্রি প্রশিক্ষণ, টার্কি প্রশিক্ষণ ও হাঁস-মুরগি পালন প্রশিক্ষণ কোর্স চালু রয়েছে। প্রতিটি কোর্সে ২ শিফটে ২৫ জন করে মোট ৫০ জন শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণে সুযোগ পায়। এ ছাড়াও কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ মাঠে ডরপের অধীনে ড্রাইভিং কোর্সের প্রশিক্ষণ চালু রয়েছে। ডরপের এ প্রশিক্ষণ প্রকল্পের টিম লিডার জেবা আফরোজা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত আনুমানিক ৪২টি পরিবার থেকে একজন করে সদস্যকে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। ৩ সপ্তাহ ও এক মাসের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা প্রতিদিন ৩০০ টাকা ও ৩ মাস ও ৬ মাসের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে প্রশিক্ষণ ভাতা পাচ্ছে। [caption id="attachment_196282" align="aligncenter" width="700"] কম্পিউটার শিক্ষণ নিয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় চাকুরী করছেন গৃহবধূ রিয়ামনি[/caption] পায়রা বন্দর প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মুনিরুজ্জামান জানান, সরকার পায়রা বন্দর নির্মাণ করার ফলে যারা ভ‚মি ও বাড়িঘর হারিয়েছে তাদের প্রতিটি পরিবারকে পুনর্বাসনের পর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছে। যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব পরিবারের সদস্যদের জীবনযাত্রার মান যাতে ব্যাহত না হয়, তারা যাতে উন্নত জীবনযাপন করতে পারে সে জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিকল্প আয়ের পথ তৈরি করতে তাদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণের পর তারা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা পাচ্ছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা বলছেন, প্রশিক্ষণ শেষে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য তাদের প্রয়োজন ঋণ সুবিধা। সরকার যদি তাদের ঋণ সুবিধা প্রদান করেন তাহলে তারা ভবিষতে কর্মসংস্থানেও সফল হবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App