×

সারাদেশ

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুলে ছাত্রত্ব হারাচ্ছে ইবি ছাত্রলীগ নেতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ০১:০৮ পিএম

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুলে ছাত্রত্ব হারাচ্ছে ইবি ছাত্রলীগ নেতা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়/ ফাইল ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুলে চার বছর পর কোর্স পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখানোতে, ছাত্রত্ব হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী এক নেতা। ঐ নেতার নাম তৌকির মাহফুজ মাসুদ। সে ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। গত ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) এ কে আজাদ লাভলু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তার অকৃতকার্য হওয়ার বিষয়টি জানা যায়।

বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, তৌকির মাহফুজ ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও স্নাতক প্রথমবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দেয় ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস কর্তৃক সংশোধিত ফলাফলে দেখা যায়, মাসুদের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা ২০১৩ তে অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে তার একটি কোর্সে (১০৬ নং) অকৃতকার্য দেখানো হয়। ২০১৭ সালে ওই শিক্ষাবর্ষের (২০১১-১২) চতুর্থ বর্ষের স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অকৃতকার্য থাকা সত্ত্বেও চতুর্থ বর্ষের ফলাফলে তৌকির মাসুদকে কৃতকার্য দেখানো হয়। বিষয়টি নজরে আসার পর বিভাগ থেকে চূড়ান্তভাবে সংশোধন করে দিলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে পুনরায় (রিভিউ) ফলাফল প্রকাশ করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, যদি কোন শিক্ষার্থী মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে, তাহলে তাকে আর দ্বিতীয়বার মান উন্নয়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয় না। মাসুদের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ বর্ষ মান উন্নয়ন (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তিনি ওই মান উন্নয়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। মাসুদ বিশেষ মান উন্নয়নের জন্য আবেদন করলেও একাডেমিক কাউন্সিল তা গ্রহণ করেন নি।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে তৌকির মাসুদের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় তার সিজিপিএ ২.২৯। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষে সিজিপিএ পায় যথাক্রমে ২.৫৩ ও ২.২৮। যা তিন বর্ষ মিলিয়ে গড়ে ২.৩৭ হয়। তৃতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য একজন শিক্ষার্থীর প্রয়োজন সিজিপিএ ২.৫০। এর থেকে কম পেলে তাকে অকৃতকার্য বলে বিবেচিত করা হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস ও বিভাগের গাফিলতিতে আমি আজ স্নাতকের সার্টিফিকেট হারাতে বসেছি। যা আমার জীবনের মূলবান একটি সম্পদ। তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অকৃতকার্যের বিষয়টি তখন জানালে আমি মানোন্নয়নে অংশ নিতে পারতাম। আমি এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সাইদুজ্জামান বলেন, ফলাফলের এ ভুলটি বিভাগীয় পরীক্ষা কমিটি এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কারো চোখেই পড়েনি। ভুলক্রমে তার তৃতীয় বষের্র ফলাফলে অকৃতকার্য হওয়া সত্ত্বেও কৃতকার্য দেখানো হয়েছে। পরে সংশোধন করে দেয়া হয়েছে।

মাসুদের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. সালমা সুলতানা। এ বিষয়ে ড. সালমা সুলতানাকে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, আমার কাছে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে কোথাও অসঙ্গতি রয়েছে। পুরো ব্যাপারটা খতিয়ে দেখে একটা রিপোর্ট করার জন্য আমি একটি কমিটি করব এবং পরবর্তীতে ব্যবস্থা নিব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App