×

জাতীয়

ননদ-ভাবির সঙ্গে পরকীয়া, অতঃপর কঙ্কাল...

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:১৩ পিএম

ননদ-ভাবির সঙ্গে পরকীয়া, অতঃপর কঙ্কাল...

প্রতীকী ছবি

অবশেষে উদ্ঘাটিত হলো উজিরপুরে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালের মৃত্যুরহস্য। ননদ-ভাবির সঙ্গে ত্রিভূজ প্রেমের কারণে পরিকল্পিত ভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন কাওছার হোসেন (৩২)। আর ভয়ঙ্কর এ প্রেম কেড়ে নিয়েছে এক তরুণের জীবন। ভেঙে তছনছ করে দিয়ে গেছে দুই নারীর সংসার।

দীর্ঘদিন ধরে তদন্তের পর রহস্য উদ্ঘাটিত হলো। পুলিশ নিশ্চিত করলো উজিরপুরে ডোবার পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি বিবাহিত ননদ-ভাবির সঙ্গে ত্রিভূজ প্রেমে জড়িয়ে পড়া কাওছারের। শুধু তাই নয়, যতই সময় যাচ্ছে ততই একের পর এক বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, একই সময়ে একই পরিবারের ননদ আর ভাবির সঙ্গে পরকীয় প্রেম করতে গিয়েই করুণ পরিণতির শিকার হতে হয় উজিরপুরের পূর্ব ওটরা গ্রামের হালিম হাওলাদারের ছেলে কাওছারকে। তিনি প্রেমে জড়িয়ে পড়েছিলেন উজিরপুরের কেশবকাঠির ছালাম মৃধার (৬০) মেয়ে ও পুত্রবধূর সঙ্গে। যে প্রেম গড়িয়েছিল গভীর অন্তরঙ্গতায়। এসব কথা জানতে পেরেই ছালাম মিয়া শেষ পর্যন্ত পরিবারের সম্মান বাঁচাতে কাওছারকে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন। আর পরিকল্পনা করে পরিবারিকভাবেই কাওছারকে হত্যার ছক আঁকেন।

প্রাথমিকভাবে তদন্তে পুলিশ শুধু ছালাম মিয়াই নয়, হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া আরো কয়েকজনকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। চল্লিশ দিন তদন্ত চালিয়ে ক্লু উদ্ঘাটন হলে পুলিশ ছালাম মৃধা (৬০) ও তার ছেলে রিয়াজ মৃধাকে (২৫) গ্রেপ্তার করে। গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে বাবা ছেলেকে বরিশালের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের বিচারক সানা মো. মাহরুফ হোসাইন তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায, গেল বছরের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন কাওছার হোসেন। এরপর দীর্ঘদিন ধরে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রায় বছর খানেক পর গেল বছরের ৫ ডিসেম্বর সকালে পূর্ব ওটরা গ্রামের জনৈক মান্নান মিয়ার বাগানের শুকনা ডোবা থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে হালিম হাওলাদারসহ তার স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কঙ্কালের শরীরে জড়ানো সাদা রংয়ের জ্যাকেট আর একটি মানিব্যাগের মাধ্যমে কাওছারের কঙ্কলা বলে সনাক্ত করেন। ওইদিনই কাওছারের বাবা অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে কাওছারের ত্রিভূজ প্রেমের পরকীয়ার গল্প। ছালাম মিয়ার মেয়ে ও তার প্রবাসী পুত্র তুহিন মৃধার সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে কাওছারের পরকীয়া ছিল। আর কাওছারের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমেই তুহিনের সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যায় তার স্ত্রীর। একই সঙ্গে তুহিনের বোনের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের কারণে তার বোনের সংসারেও ঝড় উঠে। এমনকি তুহিনের বোনের কাছ থেকে অর্থও হাতিয়ে নিয়েছিল কাওছার। যা নিয়ে তুহিনের বোনের সংসারেও ছিল অশান্তি। এসব ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন তুহিনের বাবা ছালাম মৃধা আর তার আত্মীয় স্বজনরা।

পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসা সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নিখোঁজের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ওটরা ওটরা গ্রামের বাজারে ছালাম মৃধা, তার ছেলে রিয়াজ মৃধা আর তাদের সহযোগিদের সঙ্গে কাওছার চা পানও করে। তবে রাত বেশি হয়ে যাওয়ার অজুহাতে কাওছারকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার জন্য আসামিরা মোটরসাইকেলে তুলে নেন। এরপর থেকে কাওছার নিখোঁজ হন। মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে গিয়ে কাওছারকে খুন করে ডোবায় ফেলে দেয়া হয়েছিল।

জানতে চাইলে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান ভোরের কাগজকে বলেন, আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে বাবা ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App