ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চায় এমপিরা
nakib
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২০, ০৮:০৬ পিএম
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দাবি করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। প্রয়োজনে বন্দুক যুদ্ধে গুলি করে মেরে ফেলার দাবি জানিয়েছেন তারা। এতে সমর্থন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান নেতা ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একাদশ জাতীয় সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনের তৃতীয় দিনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিষয়টির অবতারণ করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্ন। পরে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ একই দাবি করেন। পরে তাদের সাথে একমত পোষাণ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, মাদকের ব্যাপারে যদি সাথে সাথে শেষ করে দেয়া যায়, তাহলে ধর্ষনের মত আরো খারাপ কাজ করলে কেন ক্রস ফায়ারে দেয়া যাবে না? তিনি বলেন, ভারতে একবার বাসে এক নারী ডাক্তারকে ধর্ষণ করা হয়। পরে সেখানে ওই ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করে ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলা হয়। তারপর ভারতে ধর্ষণের ঘটনা কমে যায়। কাজেই আমি অন্য দুই সদস্যের সাথে একমত। আমি যদি চিনি যে ওনি ধর্ষক, সেই এ কাজ করেছে তার আর এই পৃথিবীতে থাকার অধিকার নেই।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, টাঙ্গাইলে বাসে ধর্ষণের পর পর পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করল। সেদিন যদি পুলিশ ৫ জনকে মধুপুরে নিয়ে গুলি করে মারত, তাহলে কিন্তু আবার ধর্ষিত হত না।
তিনি বলেন, একটার পর একটা ধর্ষণ হচ্ছে। মেয়েরা বাসে ওঠে ওই বাসে আগে থেকেই ৪-৫জন থাকে। নারীরা ওঠার পর দেখা যায় যাত্রী না ওরা ধর্ষক। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের পর একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হোক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, সেখানে গুলি করে মারা হোক। সবাই দেখুক ধর্ষকের লাশ পড়ে আছে।
তিনি বলেন, ধর্ষকদের একমাত্র শাস্তি এনকাউন্টারে দিয়ে মেরে ফেলা। যাতে আর কোন ধর্ষক যেন সাহস না পায়। ধর্ষক গ্রেফতার হওয়ার সাথে সাথে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নিয়ে ওইখানে গুলি করে মেরে ফেলানো হোক।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ঢাবির ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হলো। ধর্ষণের পর যদিও সরকারের পক্ষ থেকে জরুরিভাবে সেই ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও গ্রেফতার করার পরেও জনমনে অনেক প্রশ্ন এটার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের পর পরই সাভারে একটি ধর্ষণ করা হয়, সেখানে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়। এরপর ধামরাইতে একই ঘটনা ঘটে। পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ২০১৯ সাল ধর্ষণের মহাৎসব। এটা সঠিক। এজন্য তিনি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, কেন ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এথেকে পরিত্রাণের উপায় কি? এজন্য সংসদে ২ ঘণ্টার আলোচনার দাবি করছি।
চুন্নু বলেন, আমাদের দলের প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদ যখন ক্ষমতায় ছিলেন, ওই সময় এসিড হত্যাকান্ড বেড়ে যায়, তখন এরশাদ সাহেব ওটাকে প্রতিরোধ করার জন্য এসিড মারার জন্য প্রমাণিত হলে অপরাধীকে মৃত্যুদন্ডের বিধান করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবৎ জীবন কারাদন্ড। যাবৎজীবন কারাদন্ড দিয়ে ধর্ষণ কন্ট্রোল হচ্ছে না। তাই সময় এসেছে, চিন্তা করার ধর্ষণের দায়ে যদি প্রমাণ হয় তার সাজা যাবৎ জীবন না দিয়ে, মৃত্যুদন্ডের ব্যবস্থা করা হোক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এতো ঘটনা ঘটছে, মাদকের জন্য এতো ক্রস ফায়ার হচ্ছে, সমানে বন্দুক যুদ্ধে মারা যায়, এই ধর্ষণের মতো জঘণ্য অপরাধ, জঘণ্য ঘঠনার জন্য কেন আজ পর্যন্ত একটা বন্দুক যুদ্ধে মারা যায় না? বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে যদি ব্যবস্থা না নেয়া যায় কোন ক্রমেই কেন্ট্রাল হবে না।
তরিকম ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডরী বলেন, টপি দাঁড়ি মাথায় নিয়ে আল্লাহকে হাজির নাজির করে বলছি এদের ক্রসফায়ার করলে বেহেস্তে যাওয়া যাবে। কোন অসুবিধা নাই।