×

সম্পাদকীয়

জনশক্তি রপ্তানি সিন্ডিকেটমুক্ত করুন

Icon

nakib

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:২৪ পিএম

দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান খাত জনশক্তি রপ্তানি। আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এখনো জনশক্তি রপ্তানির প্রধান টার্গেট। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানির বাজার দিন দিন সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে সরকার নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে আসছে, সাফল্য আসছে না। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিএমইটি, বায়রা নানাভাবে চেষ্টা করলেও শ্রমবাজারের মন্দাভাব কাটছে না কিছুতেই। সিন্ডিকেট ও পদে পদে দুর্নীতির কারণে এই হাল তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। জিটুজি চুক্তিতে তৃতীয় পক্ষ থাকায় দেশের অন্যতম প্রধান শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। দ্রুত এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে আমাদের। সরকারি হিসাব মতে, প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি অভিবাসী বিশ্বের ১৬২টি দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছে। কিন্তু বাস্তবে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ওমান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, লেবানন, জর্ডান ও লিবিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি সীমাবদ্ধ। এর বাইরে অন্য দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকরা গেলেও তার হার অনেক কম। শ্রমবাজার সম্প্রসারণের চেষ্টার অংশ হিসেবে উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ, পশ্চিম ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, জাপান, ব্রাজিল, ইতালি ও সুইডেনে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের যথাযথ উদ্যোগ এবং সিন্ডিকেটের কবল থেকে বের হতে পারলে এসব দেশে শ্রমবাজারে সম্ভাবনার পথ সহজ হতে পারত। এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জিটুজি প্লাস বাতিল করে দেয় মালয়েশিয়া সরকার। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম ক্ষেত্র হলো রেমিট্যান্স। জনশক্তি রপ্তানি এ ক্ষেত্রে বড় ভ‚মিকা পালন করছে। বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়াতে আমাদের শ্রম অভিবাসীরা কাজ করছেন। মালয়েশিয়া কর্মী প্রেরণে অবশ্যই আগের ভুলত্রুটি মোকাবেলা করে এই শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করতে হবে। সে ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সহনশীল ব্যয়ের মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ করাটাই এখন বড় কর্তব্য। সিন্ডিকেট সমস্যাটি এখানে প্রকট। সিন্ডিকেটের কারণে এ বিশাল বাজার আমরা হারাতে বসেছি। কোনোভাবেই সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে যাতে ব্যয় বেড়ে না যায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যাতে কেউ নতুন করে সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সৌদি আরব, মালয়েশিয়া শ্রমবাজার যাতে দ্রুত আবার উন্মুক্ত হয় এ লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভ‚মিকা বাংলাদেশ সরকারকেই পালন করতে হবে। কারণ অভিবাসনপ্রত্যাশী শ্রমিক তার অভিবাসন ব্যয়ের সমুদয় অর্থ বাংলাদেশেই প্রদান করে থাকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App