সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজার কারণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি-ডিএসসিসি) ভোটগ্রহণের তারিখ পেছানো হবে কি-না, সে বিষয়ে আজ রবিবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠক হলেও বৈঠকে দিন পরিবর্তনের কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি নির্বাচন কমিশন ইসি। এ বিষয়ে আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কক্ষে বৈঠক করেন তারা । সিইসি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অন্য চার নির্বাচন কমিশনারও। তবে আলোচনা হলেও কোন সিদ্ধান্তে তারা আসতে পারে নি। এনিয়ে আজ সোমবার আবারও বৈঠক হতে পারে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে আদালতে রিট হয়েছে তাই আদালতের শুনানী ও নির্দেশনার দিকে ইসি তাকিয়ে আছে বলে ইসির একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, সিটি নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে এরই মধ্যে এটা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট হয়েছে। তবে আদালত যদি কোন সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে আদালতের কোন নির্দেশনা না এলে সিটি নির্বাচন পেছানো কোন সুযোগ নেই। যদিও বৈঠকের আগে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচন পেছানোর কোন সুযোগ নেই। কবিতা খানম এ বিষয়ে বলেন, তফসিলে ৩০ জানুয়ারি ভোটের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি আদালতেও গিয়েছে। কিন্তু আদালত নির্বাচন পেছানোর কথা বলেননি। আমরাও আমাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছি না। নির্বাচন ৩০ জানুয়ারিই থাকছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.)শাহাদাত হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন পেছানোর ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুসারে, আগামী ৩০ জানুয়ারি ডিএনসিসি-ডিএসসিসিতে ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা। কিন্তু সেদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা উদযাপন হবে। নির্বাচনের তারিখ পেছাতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়। পরে ডিএসসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করতে ইসিতে চিঠি দেন ডিএসসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন। আজ সকালে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ছাত্র নেতারা ইসিতে সরস্বতী পূজার দিন নির্বাচন না করার জন্য একটি আবেদনও জমা দেন। চিঠিতে তারা পূজার সময় একই ভেনুতে ভোট কিভাবে হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এতে হিন্দু ধর্মালম্বীদের পূজাচর্চনায় বিঘ্ণ ঘটবে বলে তারা অভিযোগও জানান। এদিকে পূজোর দিনে ভোট না করার বিষয়ে আদালতে একটি রিটও হয়। যদিও রবিবার এটি শুনানীর কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কার্যতালিকা থেকে বাদ রাখা হয়। সোমবার আবার অন্য বেঞ্চে শুনানী হতে পারে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। মূলত আদালত যদি পূজোর কারণে ঢাকার দু’সিটির ভোট পিছিয়ে দেবার নির্দশনা দেয় তাহলে ইসিও ভোটের তারিখ পরিবর্তন করতে পারে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।