×

মুক্তচিন্তা

সড়কে আর কত প্রাণ ঝরবে?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২০, ০৫:৩৭ পিএম

আলোচনা-নির্দেশনা-ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হলেও সড়ক দুর্ঘটনা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না সড়কে মৃত্যুর মিছিল। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থা গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে ৮ জানুয়ারি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে তারা বলছে, ২০১৯ সালে সারাদেশে সংঘটিত ৪ হাজার ৬৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ২১১ জন নিহত এবং আহত হন ৭ হাজার ১০৩ জন মানুষ। নিহতের মধ্যে শিশু ৬১৩ এবং নারী ৭৮৯ জন।

এককভাবে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। ১ হাজার ১৮৯টি মোটরবাইক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯৪৫ জন, যা মোট নিহতের ১৮.১৩ শতাংশ। মোটরবাইক দুর্ঘটনার হার ২৫.৩৩ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানে নজর দিলে বুঝা যায় বিষয়টি কতটা ভয়াবহ। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারের প্রচেষ্টা থাকলেও আন্তরিকতার বিষয়টি বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ। অথচ সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারকেই বড় ভ‚মিকা পালন করা উচিত। ২০১১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে বাংলাদেশ জাতিসংঘে অঙ্গীকার করেছিল। এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে বাংলাদেশ সইও করেছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বিভিন্ন সময় সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে নানা কর্মপরিকল্পনার কথা শোনা গেলেও কিছু সড়কের বাঁক সোজা করা এবং মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ছাড়া দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক হলেও তা রোধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।

এই অকাল মৃত্যু থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে হলে সরকারি উদ্যোগ যেমন প্রয়োজন, তেমনি দরকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিগত উদ্যোগের। দেশে কিছু বেসরকারি সংস্থা সড়ক দুর্ঘটনায় বরাবরই তাদের উদ্বেগ জানিয়ে থাকেন এবং তা প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকেন। এই ক্ষেত্রে সরকারের ভ‚মিকা মুখ্য। সরকারের উদ্যোগে ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো রাস্তা থেকে সরিয়ে এবং অন্যদিকে শুধু দক্ষ, লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালকদের গাড়ি চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশেই কমে আসবে। সেই সঙ্গে চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করেও অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত আইনে শাস্তির বিষয়টিও বিবেচনা করা দরকার।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষতি মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ১ দশমিক ৬ শতাংশের সমান। এটা বারবার বলা হচ্ছে, সচেতনতা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারে। সম্ভবত যাদের সচেতনতার কথা বলা হচ্ছে, তাদের কান পর্যন্ত এ কথা পৌঁছাচ্ছে না। তারা কথা শোনার কোনো প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না। অপ্রিয় হলেও সত্যি, সচেতনতা সৃষ্টিতে যে যার সার্বক্ষণিক ভ‚মিকা রাখার প্রয়োজন, সেই পুলিশ বাহিনী বিশেষ সময় ছাড়া অসচেতনই থাকছে। প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করলে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App