×

সারাদেশ

সংঘর্ষের গ্রাম হোসেনপুর, নিহত আরেকজন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২০, ০৫:৪০ পিএম

সংঘর্ষের গ্রাম হোসেনপুর, নিহত আরেকজন

এক মাসে ৩/৪ বার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এই হোসেনপুর গ্রামে।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার উত্তর হোসেনপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে এক রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় জুলফিকার খালাশী (৫০) নামে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১১ জানুয়ারি) ভোর রাত তিনটার দিকে তার মৃত্যু হয়। সে একই এলাকার রজব আলী খালাশীর পুত্র। এ সংঘর্ষে মারাত্মক আহত বাবুল মুন্সী গত শুক্রবার দুপুরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সে একই গ্রামের মজিদ মুন্সীর ছেলে। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাড়াল দুই জনে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অপর আরেকজন কহিনুর খালাশীর(৪৫) আশংকাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তাকে আইসিউতে রাখা হয়েছে। এদিকে মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে হামলাকারি পক্ষের লোকজন নিজেদের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে খুনীদের ফাসির দাবীতে এলাকার নারী, পুরুষ ও শিশুরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। গ্রেপ্তার এড়াতে হামলাকারিরা ঘরে তালা মেরে পালিয়ে গেছে। এ সংঘর্ষেও সাথে জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ এ পর্যন্ত ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদেও জন্য আটক করেছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুনরায় সংঘর্ষের আশংকাং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সালিস ও এলাকার নেতৃত্ব নিয়ে উপজেলার হরিদাসদি মহেন্দ্রদি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দেলোয়ার মুনশির সঙ্গে একই এলাকার জামাল খালাসির বিরোধ চলে আসছিল। তাঁদের মধ্যে গত এক মাসের ব্যবধানে তিন থেকে চারটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে দেলোয়ার মুন্সীর পক্ষের কয়েক যুবক মিলে এলাকার জঙ্গল পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা করার নাম করে দা, কাচি ও ছ্যান নিয়ে বের হয় । কিন্ত্র এ ঘটনা দেখে প্রতিপক্ষ জামাল খালাশীর লোকজন-ওই যুবকরা তাদের উপর হামলা করতে এসেছে ভেবে- ওই যুবকদের পরিছন্নতা কাজে বাঁধা দেয় এবং বাকবিতণ্ডা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এঘটনায় আরো সংঘর্ষ হতে পারে আশংকায় পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতেই সাবেক মেম্বারসহ তিনজনকে আটক করে। কিন্তু বিধিবাম। ওই ঘটনার জের ধরে শুক্রবার ফজরের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে দেলোয়ার মুন্সীর লোকজন বাবুল খালাশী উপর অতর্কিত হামলা করে এবং কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে ফেলে রেখে হামলাকারিরা মসজিদ পাশ্ববর্তী প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা চালায় এবং সেখানেও জুলফিকার খালাশী (৫৫), কহিনুর খালাশী (৪৫) ও সজিব মুন্সীসহ ৬/৭জনকে কুপিয়ে জখম করে। এছাছাড়াও লাঠিসোটার আঘাতে আরো প্রায় ১৫জন আহত হয়। এসময় নারী ও শিশুরা আতংকিত হয়ে দিগবিদিগ ছোটাছুটি করতে থাকে। এদিকে নৃশংশ হামলার ঘটনা চালিয়ে হামলাকারিা তাদের বিজয় হয়েছে মর্মে শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় হামলার নেপথ্যে ইন্ধনদাতা শাহিন চৌধুরী সহ বেশ ক’জনের নেতৃত্বে বিজয় মিছিল করে এলাকা ত্যাগ করে। নিহত জুলফিকারের স্বজনরা জানান, দুই খুনের ঘটনার পর এলাকায় আরো অশান্ত ও আমাদের ফাঁসানোর জন্য প্রভাবশালী শাহিন চৌধুরী, চুন্নু চেয়ারম্যান, আয়নাল সহ আরো কয়েকজন বিভিন্ন অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। তারা কোন অঘটন ঘটিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়ার পাঁয়তারা করছে। এ বিষয়ে হরিদাসদি মহেন্দ্রদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ভোরের কাগজকে বলেন, দেলোয়ার ও জামাল এই দুজনই আওয়ামী লীগ করে। তারা দুজনই ১ নম্বর ওয়ার্ডের নেতৃত্ব চান। তাদের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিনের কলহ রয়েছে। তাদের এ কলহের কারণে সাধারণ দু’জন মানুষ মারা গেল। বর্তমানে এলাকা এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সহকারি পুলিশ সুপার আবির হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যপারে রাজৈর থানার ওসি খোন্দকার সওকত জাহান জানান, ওই এলাকার শান্তি রক্ষায় পুলিশ মোতায়েন আছে। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা দায়ের হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App