×

অর্থনীতি

পাঁচ মিনিটে ব্যাংক-বিমা-পুঁজিবাজারে হিসাব খোলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২০, ০৩:৩৪ পিএম

পাঁচ মিনিটে ব্যাংক-বিমা-পুঁজিবাজারে হিসাব খোলা

ফাইল ছবি

মাত্র পাঁচ মিনিটেই খোলা যাবে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স হিসাব (বিও), ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিমা পলিসি। জাতীয় পরিচয়পত্রধারী যে কোনো ব্যক্তি সহজেই এই তিনটি হিসাব খুলতে পারবে। একই সঙ্গে ব্যাংকবহিভর্‚ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ব্যাংকিংসহ যে কোনো ডিজিটাল আর্থিক সেবাদাতারা এ পদ্ধতিতে দ্রুত অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এ জন্য গ্রাহককে নির্দিষ্ট শাখায় যেতে হবে না। ঘরে বা অফিসে বসে ই-কেওয়াইসি পদ্ধতিতে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ই-কেওয়াইসি নীতিমালা প্রকাশ করেছে। গত বুধবার এ সংক্রান্ত নীতিমালা সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।

কেওয়াইসি বা ‘গ্রাহককে জানো’ হলো, গ্রাহকের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতি। বর্তমানে অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে বেশ কয়েক পৃষ্ঠার ফরম পূরণ করতে হয়। সেখানে কী লেখা থাকে অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহক তা জানেন না। তবে ই-কেওয়াইসি পূরণ করা যাবে মাত্র পাঁচ ধাপে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শাখা বা এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে কিংবা এজেন্ট সেবাগ্রহীতার কাছে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলবেন। এমনকি ব্যাংকের নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রাহক নিজেই হিসাব খুলতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলের ‘মুভিং’ ছবি দিতে হবে। পরে জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবির সঙ্গে মিলে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হিসাব খুলে যাবে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে এবং গ্রাহক হয়রানি ও ব্যাংকের ব্যয় কমাতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে অ্যাকাউন্ট খোলা ও কেওয়াইসি সংরক্ষণে ব্যাংকের খরচ ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমবে। এর মধ্যে ১৯টি ব্যাংক, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ৩৩ জেলার ৫২টি স্থানে পরীক্ষামূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, আঙুলের ছাপ ও মুখচ্ছবির ম্যাচিং- এ দুই পদ্ধতি অনুসরণ করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে। আঙুলের ছাপের ক্ষেত্রে শাখা বা এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে পাঁচ ধাপ অনুসরণ করতে হবে। প্রথম ধাপে এনআইডি, জন্ম তারিখ ও বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন করতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার নাম-পরিচয় চলে আসবে এবং সেখানে নমিনির নাম ও ছবি যুক্ত করতে হবে। তৃতীয় ধাপে ব্যক্তির ছবি তোলা হবে। এরপর গ্রাহক সই বা পিন নাম্বার দেবেন। শেষ ধাপে অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে তিনি নোটিফিকেশন পাবেন। এর বাইরে মাসিক আয়, মোবাইল নাম্বারসহ কিছু তথ্য নেবে ব্যাংক।

দ্বিতীয় পদ্ধতিতে গ্রাহক নিজেই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এ উপায়ে প্রথম ধাপে গ্রাহকের এনআইডির ছবি তুলে পাঠাতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে গ্রাহকের নিজের মুভিং ছবি দিতে হবে। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার নাম-পরিচয় চলে আসবে এবং সেখানে নমিনির নাম ও ছবি যুক্ত করতে হবে। এরপর গ্রাহক ডিজিটাল সই বা পিন নাম্বার দিলে তিনি অ্যাকাউন্ট খোলার একটি নোটিস পেয়ে যাবেন। ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে সফটওয়্যার ডিজাইন করে ই-কেওয়াইসি পদ্ধতি চালু করতে পারবে। এ জন্য উপযুক্ত সফটওয়্যার স্থাপনের পাশাপাশি ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য নির্দিষ্ট ডিভাইস, ছবি তোলার জন্য ওয়েব বা মোবাইল ক্যামেরা, অনলাইনে এনআইডি যাচাই ও ইলেকট্রনিক সই ক্যাপচার ডিভাইস থাকতে হবে। উভয় ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টধারীর এনআইডি ও জন্ম তারিখ শতভাগ মিলতে হবে। তবে ফিঙ্গার প্রিন্ট এবং নিজের ও পিতা-মাতার নাম ৮০ শতাংশ মিল থাকলে চলবে।

এ উপায়ে খোলা মোবাইল ব্যাংকিংসহ ডিজিটাল আর্থিক সেবা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত হারে লেনদেন করা যাবে। এসব ব্যাংক হিসাব থেকে মাসে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা উত্তোলন করা যাবে। একবারে ১০ লাখ টাকা মেয়াদি আমানত করা যাবে। মেয়াদ পূর্তিতে একবারে ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করা যাবে। অন্যদিকে বিও হিসাবে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করা যাবে। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১০ লাখ টাকা লেনদেন করা যাবে। জীবন বিমার ক্ষেত্রে তিন থেকে ২০ লাখ টাকা লেনদেন করা যাবে। তবে বার্ষিক প্রিমিয়াম আড়াই লাখের বেশি হবে না। সাধারণ বিমার ক্ষেত্রে ২০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকার বেশি প্রিমিয়াম নেয়া যাবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App