×

বিনোদন

নির্মিত হলেও আসেনি প্রেক্ষাগৃহে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:২২ এএম

নির্মিত হলেও আসেনি প্রেক্ষাগৃহে

কাজ শুরু হয়েছিল বেশ আগেই। কোনো সিনেমার নির্মাণ কাজও শেষ। আবার কোনোটির কিছু অংশ বাকি। মুক্তির আওয়াজ তুলেও মুক্তি পায়নি কিছু সিনেমা। কী কারণে মুক্তি পেতে এত বিলম্ব? কবেই বা দেখতে পাবে মুক্তির আলো? সিনেমাগুলো নির্মাতাদের সঙ্গে কথা বলে সাজানো হয়েছে এ প্রতিবেদন। লিখেছেন শাকিল মাহমুদ।

এতো প্রেম এতো মায়া পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত তারকাবহুল সিনেমা ‘এতো প্রেম এতো মায়া’। এই সিনেমায় মানিক মেলবন্ধন ঘটিয়েছেনে ববিতা, শাবনূর, ফেরদৌসের পাশাপাশি এ প্রজন্মের সাইমন সাদিক ও পিয়া বিপাশার। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে কাজ শুরু হয় সিনেমাটির। কিন্তু সিনেমার কাজ ৭০ ভাগ সম্পন্ন হওয়ার পর শুটিং বন্ধ করে দিতে হয় পরিচালককে। শাবনূরের মুটিয়ে যাওয়ার কারণে দীর্ঘদিন সিনেমাটির কাজ বন্ধ থাকে। ২০১৭ সালের মাঝে এসে শাবনূর চেয়েছিলেন সিনেমার বাকি কাজ শেষ করে দিতে। সেই অনুযায়ী সিনেমার একটি গানে প্লেব্যাকও করেন তিনি। অংশ নেন টাইটেল গানের শুটিংয়েও। তবু বাকি থেকে যায় সিনেমার কিছু কাজ। পরিচালক জানালেন, শাবনূর আর মাত্র ১ সপ্তাহ সময় দিলেই ছবির পুরো কাজ শেষ হয়ে যাবে। তারপরই মুক্তির প্রস্তুতি নেবো। দুই মাসের সময় চেয়েছেন শাবনূর। এরপরই তিনি সিনেমার বাকি কাজ শেষ করে দিবেন। আশা করছি এ বছরই একটা ভালো দিন দেখে সিনেমাটি মুক্তি দিতে পারবো।

রূপসা নদীর বাঁকে সরকারি অনুদানে তানভীর মোকাম্মেলের পরিচালনায় নির্মিত হয় রূপসা নদীর বাঁকে। এক ত্যাগী বামপন্থী নেতাকে ঘিরে সিনেমার কাহিনী গড়ে উঠেছে, যাকে ১৯৭১ সালে রাজাকাররা হত্যা করে। সিনেমাতে ত্রিশ দশকের স্বদেশী আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন, রাজশাহী জেলের খাপড়া ওয়ার্ডে কমিউনিস্টদের হত্যাসহ বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ একজন বিপ্লবীর জীবনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্মিত হয় এই সিনেমা। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে সিনেমার শুটিং শুরু হয় এবং একই বছর ৯০ শতাংশ শুটিংয়ের কাজ শেষ হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ শুটিং শেষ হয় গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর। এত দীর্ঘ সময় নিয়ে কেন সিনেমার ১০ শতাংশ কাজ করা হলো? জানতে চাইলে সিনেমাটির নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল বলেন, আমাদের সিনেমার কিছু দৃশ্য ছিল যা ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে করতে হবে। যার জন্য আমরা অনুমতি চাই। কিন্তু সে অনুমতি পেতে দেরি হয়, যার ফলে সিনেমার বাকি কাজটুকু করতে এতটা সময় লেগে যায়। বর্তমানে সিনেমার ডাবিংয়ের কাজ চলছে। নির্মাতা জানান, এ বছরের মার্চেই সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে পারে।

শনিবার বিকেল হলি আর্টিজানের দুর্ধর্ষ জঙ্গি হামলার ঘটনাকে অবলম্বন করে নির্মাতা মুস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মাণ করেন ‘শনিবার বিকেল’। ২০১৮ সালে সিনেমার কাজ শেষ হয় এবং সেন্সরে জমা দেয় হয়। কিন্তু সিনেমাটির ছাড়পত্রের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সেন্সর বোর্ড। মাত্র ৭ দিনে টানা শুটিং করে নির্মাণ করা হয় সিনেমাটি। যার ফলে দর্শক মনে কৌত‚হলের এক সিনেমা শনিবার বিকেল। নির্মাতা মুস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, সিনেমাটি শীঘ্রই মুক্তি পাবে। তবে কবে নাগাদ মুক্তি পাবে তা এখনই জানাচ্ছি না।

ঊনপঞ্চাশ বাতাস নাট্য নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের এটি প্রথম সিনেমা। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন শার্লিন ফারজানা ও ইমতিয়াজ বর্ষণ। ২০১৭ সালের অক্টোবরে শেষ হয় সিনেমার শুটিং। তবে প্রেক্ষাগৃহে এখনো আসে নি সিনেমাটি। কী কারণে মুক্তি পায়নি সিনেমাটি তার কারণ জানালেন নির্মাতা। তিনি বলেন, আমাদের সিনেমার যে দুর্দিন চলছে সেখানে দাঁড়িয়ে অনেক প্রযোজক, পরিচালক ভয় পায় সিনেমা নির্মাণ করতে। আমি সে ভয়ের ভেতর থেকে বের হতেই সিনেমাটি নির্মাণ করেছি এবং এতটা সময় নিয়ে কাজ করছি। খুঁজতে চেষ্টা করছি আসলে কী কারণে সিনেমায় লাভ হচ্ছে না। যার ফলে এতটা সময় অতিবাহিত করতে হয়েছে ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’কে। তবে আশা করছি আগামী মাসেই সিনেমাটি মুক্তি দিতে পারব।

আদি ২০১৬ সালে তানিম রহমান অংশুর প্রথম সিনেমা ‘আদি’ মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও এখনো মুক্তি পায় নি সিনেমাটি। সিনেমাপ্রেমীরা সিনেমার টিজার দেখে আগ্রহ নিয়ে বসেছিলো প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমাটি দেখার জন্য। কিন্তু দর্শকের সে আশা পূরণ হয় নি। সিনেমাটি কবে মুক্তি পাবে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্মাতা অংশু জানান, ‘সিনেমাটির প্রযোজক দুজন। তারা কিছু বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় আছেন। এখন তারা কেন বা কী কারণে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না তা আমি জানি না।’

বিউটি সার্কাস বাংলাদেশ সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত ও ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ‘বিউটি সার্কাস’ সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। টেলিভিশন নাটক নির্মাতা মাহমুদ দিদার পরিচালিত এই সিনেমাতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। প্রাথমিক অবস্থায় সিনেমাটির ৩০ শতাংশ কাজ করার পর পরই সিনেমাটি আর্থিক সংকটে পড়ে।  পরবর্তী সময়ে সে সংকট কাটিয়ে সিনেমার শুটিং শেষ করে সম্পাদনা টেবিলে উঠে সিনেমাটি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জানানো হয় সম্পাদনার কাজ শেষ হলে সিনেমাটি মুক্তি দেয়া হবে। কিন্তু গত বছর পেরিয়ে গেলেও সম্পাদনা টেবিল ছেড়ে প্রেক্ষাগৃহে আসেনি সিনেমাটি। কিন্তু কেন গত বছর সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে আসেনি কিংবা কবে নাগাদ মুক্তি পাবে সিনেমাটি জানতে চাইলে সিনেমার নির্মাতা মাহমুদ দিদার জানান, সিনেমার সম্পাদনার কাজ এখনো শেষ হয়নি। কিছু টুকটাক কাজ বাকি আছে। আর কবে মুক্তি পাবে সে বিষয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্ম বিস্তারিত বলতে পারবে।

যৈবতী কন্যার মন ২০১২-১৩ অর্থ বছরে সরকারী অনুদান পাওয়া সিনেমাটি আঁটকে আছে প্রায় আট বছর ধরে। নির্মাণ কাজ শেষ হলেও প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় নি সিনেমাটিও। গত বছরে সিনেমাটি মুক্তির বিষয়ে জানান গেলেও মুক্তি পায় নি। কেনো এত সময় লাগছে সিনেমাটি মুক্তির জন্য?

নির্মাতা প্রশ্নের প্রেক্ষিতে জানান, প্রথম দিকে সময় লেগেছে চিত্রনাট্যের জন্য। সেলিম আল দীনের এত বড় ক্যানভাসের কাহিনীকে পর্দার উপযোগী করতে সময় লেগেছে। তারপর অনুদানে টাকায় এত বড় কাজ একটু কষ্টসাধ্য। তবু কাজ শেষ হয়েছে। গত বছর মুক্তি দেয়ার কথা থাকলেও কিছু কারণে দেয়া যায় নি। আশা করছি এ বছর সমস্যা কাটিয়ে সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে আসবে।

মেড ইন বাংলাদেশ ২০১৮ সালের এপ্রিলে শুরু সিনেমার শুটিং। টানা ৩৬ দিনে শেষ হয় শুটিং। এরপর মাঝে কেটে যায় ১ বছর, কিন্তু প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি সিনেমাটি। কিন্তু বিদেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রশংসার সঙ্গে চলছে রুবাইয়াৎ হোসাইনের মেড ইন বাংলাদেশ। বর্তমানে সিনেমাটি ৬ সপ্তাহ ধরে ফ্রান্সের ৮০টি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে। সিনেমাটি বাংলাদেশে কেন মুক্তি দেয়া হয়নি?  জানতে চাইলে নির্মাতা বলেন, বাংলাদেশে সেন্সর নিয়ে কিছু নিয়ম-কানুন থাকে। কিন্তু বিদেশে এ বিষয়টি নেই। যার কারণে বাংলাদেশের বাইরে প্রথমে সিনেমাটি মুক্তি দিয়েছি।  তবে এ বছরই সিনেমাটি বাংলাদেশে মুক্তি দেয়ার ইচ্ছে আছে। তাই খুব শিগগিরই সিনেমাটি সেন্সরে জমা দেব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App