×

বিনোদন

চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হবে ৭৪ দেশের সিনেমা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২০, ০৩:৩০ এএম

চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হবে ৭৪ দেশের সিনেমা

সংবাদ সম্মেলন। ছবি: ভোরের কাগজ।

চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হবে ৭৪ দেশের সিনেমা

সংবাদ সম্মেলন। ছবি: ভোরের কাগজ।

‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’- এই স্লোগান সামনে রেখে ১১ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব- ২০২০। রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের আয়োজনে বরাবরের মতোই এবারের উৎসবেও এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন ফিল্মস্, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগে ৭৪টি দেশের ২২০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানালেন আয়োজকরা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উৎসব কমিটির চেয়ারপারসন কিশওয়ার কামাল, উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল, উৎসব কমিটির নির্বাহী সদস্য মফিদুল হক, উৎসব কমিটির নির্বাহী সদস্য ম. হামিদ, উৎসব কমিটির প্রধান প্রোগ্রামার জোর্জোমালি, উৎসব কমিটির নির্বাহী সদস্য ড. নাজমুল এ কলিমুল্লা।

সংবাদ সম্মেলনে উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল জানান, শনিবার পর্দা উঠছে অষ্টাদশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। সভাপতিত্ব করবেন উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

উদ্বোধনী চলচ্চিত্র ‘উইন্ডো টু দ্য সি’। স্পেন ও গ্রীসের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল জিমেনেজ। উৎসবে উপস্থিত থাকবেন তিনি এবং এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগে জুরি’র দ্বায়িত্ব পালন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরই চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে। এবারের উৎসবে দেখানো হবে মোট ২২০টি চলচ্চিত্র। এরমধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য (৭০ মিনিটের বেশি) চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১১৭টি, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১০৩টি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আছে ২৬টি যার মধ্যে ১৮টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন এবং ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য।

উৎসবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর স্থানসমূহ: জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা মিলনায়তন, অঁলিয়াস ফ্রঁয়েজ মিলনায়তন, মধুমিতা সিনেমা হল ও স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধারা সিটি ও সীমান্ত স্কোয়ার।

প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনীর বিভাগসমূহ হচ্ছে- প্রতিযোগিতা বিভাগ (এশিয়ান কম্পিটিশন): এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১৯টি চলচ্চিত্র নিয়ে গঠিত (নূন্যতম ৭০ মিনিট ব্যাপ্তির ফিকশন ফিল্ম) প্রতিযোগিতা বিভাগ সেরা চলচ্চিত্র নির্ধারণে থাকবে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য পুরস্কার হিসেবে থাকছে একটি ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং এক লক্ষ টাকা। এছাড়া শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা-অভিনেত্রী, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক এবং শ্রেষ্ঠ নিত্রনাট্যের জন্য পুরস্কার হিসেবে থাকছে একটি সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট।

রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ: পোলিস নির্মাতা দম্পতি জোয়ানা কস-ক্রাউজে ও ক্রিজস্টফ ক্রাউজের আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ৪টি চলচ্চিত্র নিয়ে সাজানো হয়েছে রেট্রোস্পেটিভ বিভাগ। ক্রাউজে দম্পতির চলচ্চিত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট হলো চরিত্র ও দৃশ্যের সমন্বয়ে একটি মানবিক গল্প বলা। ১২০টির বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন তারা। এই বিভাগে জোয়ানা কস-ক্রাউজে ও ক্রিজস্টফ ক্রাউজের ৪টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

বাংলাদেশ প্যানোরোমা: উৎসবের এ বিভাগে বাংলাদেশের ৮টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রচার-প্রসার ও আন্তর্জাতিক বাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে উৎসব কমিটি এই বিভাগটি পুনরায় সংযোজন করেছে। এই বিভাগে বাংলাদেশের নির্মাতাদের নির্মিত বাছাইকৃত দশটি চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার সুযোগ পাবে। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচক ফেডারেশন- ফিপ্রেসি বাংলাদেশ প্যানোরমা বিভাগে সমালোচক পুরস্কার দেবেন। ফিপ্রেসি-এর ৩ সদস্য বিশিষ্ট জুরি বোর্ড নির্বাচিত চলচ্চিত্রগুলো থেকে ‘শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র’ জন্য একটি পুরস্কার প্রদান করবেন। পুরস্কার হিসেবে থাকছে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট।

[caption id="attachment_194359" align="aligncenter" width="2560"] সংবাদ সম্মেলন। ছবি: ভোরের কাগজ।[/caption]

সিনেমা অব দ্য ওর্য়াল্ড বিভাগ: এই বিভাগে বিভিন্ন দেশের সমকালীন সেরা ৪৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এই বিভাগের জন্য দর্শক জরিপে একটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্বাচিত হবে। চলচ্চিত্রের জন্য পুরস্কার থাকবে সার্টিফিকেট এবং ক্রেস্ট।

চিলড্রেনস বিভাগ: এই বিভাগে ১৫টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। বরাবরের মতো এবারও সব শিশুর জন্য এই প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের এই বিভাগের চলচ্চিত্রগুলো দেখার বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। এই বিভাগ থেকে একটি চলচ্চিত্র ‘বেস্ট জুভেনাইল অডিয়েন্স বাদল রহমান অ্যাওর্য়াড’র জন্য মনোনীত হবে। এই পুরস্কার হিসেবে থাকছে সনদ ও ক্রেস্ট।

স্পিরিচুয়াল ফিল্মস: এই বিভাগে প্রায় ৩৮টি ছবি প্রদর্শিত হবে। মূলত ধর্মীয় বিশ্বাস, অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মানবতাবাদী চলচ্চিত্র এ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ বিভাগটির ছবিগুলোর মাধ্যমে আন্তঃধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তৈরিই আয়োজকদের প্রধান উদ্দেশ্য। এ বিভাগের জন্য ইন্টারফেইথ্ জুরি একটি শ্রেষ্ঠ কাহিনীচিত্র ও একটি শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্র নির্ধারণ করবেন। পুরস্কার হিসেবে থাকছে একটি সার্টিফিকেট ও একটি ক্রেস্ট।

উইমেন ফিল্ম মেকারস্ সেশন: দেশ ও বিদেশের নারী নির্মাতাদের চলচ্চিত্র নিয়ে এই বিভাগটি সাজানো হয়েছে। এতে দেশি-বিদেশি ২৯টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। একটি শ্রেষ্ঠ কাহিনীচিত্র ও একটি শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্রকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হবে। পুরস্কার হিসেবে থাকছে সনদ ও ক্রেস্ট।

শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্মস্ বিভাগ: ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নবীন ও স্বাধীন চলচ্চিত্র নিমার্তাদের তথ্যচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্রসমূহ প্রদর্শিত হবে। এতে দেশি-বিদেশি ৫৮টি ছবি প্রদর্শিত হবে। এতে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করতেই এই বিভাগটি উৎসবে উন্মুক্ত করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App