×

মুক্তচিন্তা

ধর্ষণরোধে ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চা

Icon

nakib

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:৪৮ পিএম

দেশব্যাপী আন্দোলন, প্রতিবাদ হলেও ধর্ষণের মতো জঘন্য, বর্বরোচিত, অমানবিক, ধর্মবিরোধী এবং একজন নারীর জীবনের মূল্যবান সম্পদ তার সম্ভ্রম কেড়ে নেয়ার বিরুদ্ধে সেসব কথিত ধর্মপ্রাণ মানুষের কোনো উচ্চবাচ্য কিংবা প্রতিবাদ তেমন একটা দেখা যায় না। অথচ ধর্মীয়ভাবেও ধর্ষণের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান আছে এবং ধর্ষককে নিকৃষ্ট ব্যক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ধর্ম যেখানে ধর্ষণকে নিকৃষ্ট কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে, ধর্ষকের শাস্তি যেখানে মৃত্যুদণ্ড হিসেবে ঘোষণা করেছে, ধর্ষককে যেখানে জাহান্নামি হিসেবে ঘোষণা করেছে, সেখানে মুসলিমপ্রধান দেশ হয়েও বাংলাদেশে ধর্ষণের মহামারি আকার ধারণ করেছে, ন্যায়বিচার না হওয়া, অপরাধীরা পার পেয়ে যাওয়া এবং ধর্মীয় বিধানের তোয়াক্কা না করাই এর বড় কারণ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর তথা ২০১৯ সালে ১ হাজার ৪১৩ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৩২ জন। উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ২৫৮ জন। উত্ত্যক্তের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ১৮ নারী। এ পরিসংখ্যানই বলে দেখে বাংলাদেশে ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজ কতটা মহামারি আকার ধারণ করেছে। ২০২০ সালের আগমনে ধর্ষণের মতো জঘন্য কাজ আর দেখতে না চাওয়ার স্বপ্ন থাকলেও বছরের শুরুতেই দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। ধর্ষণ প্রত্যেকটি ধর্মমতেই নিকৃষ্ট কাজ। ধর্ষণের মাধ্যমে সমাজে বিশৃঙ্খলা ছড়ায়, একটি মেয়ের জীবন বিপন্ন হয়। ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইনে ধর্ষকের কঠোর শাস্তি বিধান থাকলেও সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ নিজেদের বিবেককে অন্ধ বানিয়ে মনের কুপ্রবৃত্তির হাসিল করে, যার মাধ্যমে একটি মেয়ে, একটি পরিবার, একটি স্বপ্নের করুণ মৃত্যু হয়। ধর্ষকরা এতটাই ভয়াবহ রূপ ধারণ করে যে, ধর্ষণ করেই ক্ষ্যান্ত না হয়ে নিজেদের অপরাধ ধামাচাপা দেয়ার জন্য ধর্ষিতাকে মেরে ফেলে। শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত রেহাই পায় না পাষণ্ডদের হাত থেকে। বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যেখানে ধর্ষকরা শিশুর যৌনাঙ্গ বে্লড দিয়ে কাটার মাধ্যমে তাদের যৌন কামনা চরিতার্থ করে। ধর্ষকদের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান থাকলেও আইনের প্রয়োগ নেই, নানাভাবে পার পেয়ে যায় ধর্ষকরা, ফলে নতুন করে আবারো অপরাধ করে তারা, কিছুই হবে না ভেবে নতুন ধর্ষকের জন্ম হয়, যা দিন দিন মহামারি আকার ধারণ করছে। কাজেই ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে হবে। কোনোভাবেই যেহেতু ধর্ষণ বন্ধ করা যাচ্ছে না সেহেতু ধর্ষণের মতো জঘন্য বর্বরোচিত কাজকে চিরতরে বন্ধ করার মানসে ধর্মপ্রাণ মানুষ কর্তৃক দেশব্যাপী ধর্ষণবিরোধী ওয়াজ-মাহফিল, ধর্মীয় সমাবেশ, মসজিদে মসজিদে ধর্ষণের কুফল ও পরিণাম সম্পর্কে আলোচনা, ধর্ষণ করব না মর্মে ধর্মীয় রীতিতে শপথ গ্রহণসহ রাষ্ট্রীয়ভাবে সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ধর্ষণের ভয়াবহতা প্রচারসহ ধর্ষণের মতো বর্বরোচিত কাজে যেন কেউ আর কোনোদিন জড়িত না হয়, ধর্ষণের মনমানসিকতা তৈরি না হয়, সে ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি। শিক্ষার্থী,বিজম, ঢাকা

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App