×

মুক্তচিন্তা

আমি আমার বোনের পাশে আছি

Icon

nakib

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:৪২ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বোন ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর মিডিয়া, প্রশাসন, শিক্ষার্থী উত্তাল। ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে সবাই যখন এক কাতারে। তখন মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) একটি হিসাব চোখে পড়ল, ২০১৯ সালে ১ হাজার ৪১৩ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৩২ জন। অর্থাৎ ২০১৮ সালের তুলনায় ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে দ্বিগুণ! এই যে হাজারে ঘরের অঙ্কটা এটা শুধু ধর্ষণের শিকার ওইসব নারীর সংখ্যা, যারা ধর্ষণের পর তা প্রকাশ করেছেন। এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সংখ্যক নারী রয়েছেন যারা ধর্ষণের শিকার হয়ে সমাজ ও পরিবারের ভয়ে তা গোপন করেছেন। আর শ্লীলতাহানি বা ইভটিজিংয়ের হিসাবটা একবার চিন্তা করতে পারেন? রাস্তা-ঘাটে কিংবা যানবাহনে প্রতিনিয়তই নারীদের পড়তে হয় নানা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো নারী যৌন হয়রানি বা লাঞ্ছিত হচ্ছেন। কখনো কখনো কেউ সাহস নিয়ে প্রতিবাদ করেন। আবার কখনো প্রতিবাদ করাটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু কেন? এই বাংলাদেশ তো সেই তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ নয়। অর্থনীতি, শিক্ষার হার তো দিন দিনই বাড়ছে। তাহলে মানসিকতার এত অধঃপতন কেন? এর অনেক কারণই থাকতে পারেÑ অভিভাবকদের অসচেতনতা, মাদক, পর্নো আসক্তি, ক্ষমতার অপব্যবহার ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে বেশি যেটা প্রভাব পড়ে তা হচ্ছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বা বিচারের ধীরগতি। এক তনু হত্যা মামলার সুষ্ঠু বিচার যদি জাতি পেত তাহলে তার পরের নামগুলো হয়তো আর আসত না। তনুকে ধর্ষণের পর যে নরপশুরা হত্যা করেছিল তারা কি রাষ্ট্রের চেয়েও বেশি ক্ষমতাবান? যার কারণে এত দিনও রাষ্ট্র পারল না তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে? বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদবে কেন? অপরাধী কাঁদতে পারে না নিভৃতে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে? তনু সঠিক বিচার পেলে হয়তো নুসরাত আজো বেঁচে থাকত। তবে নুসরাত হত্যা মামলার রায়ের পর এতটুকু বলা যায় ফেনীতে অন্তত কেউ একই কাজ করার আগে দুবার ভাববে। একটা ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে একদল আন্দোলন করে বিচারের দাবিতে, অন্যদল আবার খোঁজা শুরু করে মেয়েটির পোশাক কী ছিল। আন্দোলনের এই দলাদলি বাদ দিয়ে সবার উচিত একই কাতারে এসে প্রতিবাদ করা। প্রশাসন, সরকারকে বাধ্য করানো ধর্ষণের শাস্তির নতুন আইন করা, দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনাল করে বিগত সময়ে সংঘটিত সব ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করা। যতদিন বিচার না হবে ততদিন ধর্ষণ বাড়বেই। আজ তনু, নুসরাত, মিতু বা ...। কাল কিন্তু হবে আপনার, আমার মা-বোন। শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App