×

জাতীয়

উপকারী মানুষটির এমন করুণ মৃত্যু!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২০, ১২:৫৩ পিএম

উপকারী মানুষটির এমন করুণ মৃত্যু!

নিহত ডা. শরীফুল ইসলাম

উপকারী মানুষটির এমন করুণ মৃত্যু!

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর সদরের মল্লিকপুরে যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হয়-ভোরের কাগজ।

সমাজসেবী, পরোপকারী, সাদা মনের মানুষ ছিলেন ডা. শরীফুল ইসলাম। কেউ দূরারোগ্যে ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে, কারো বাড়ি আগুনে পুড়ে গেলে বা কারো ছেলেমেয়ে স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না এমন খবর পেলেই তার বাড়িতে ছুটে যেতেন তিনি। মোটকথা, এলাকার অসহায় মানুষদের সহায় ছিলেন ডা. শরীফুল। এছাড়া বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় আর্থিক সহযোগিতা করা ছিল তার নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় অসময়ে এই মহৎ মানুষটি না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় এলাকায় এখন বইছে শোকের মাতম।

গতকাল সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে ঢাকায় যাচ্ছিলেন ডা. শরীফুল। সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুর সদর উপজেলার মল্লিকপুরে একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষে ডা. শরীফুল ইসলাম (৪০) ও তার পরিবারের ৩ জনসহ ৬ জন নিহত হন। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তার স্ত্রী রিমি আক্তার। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নিহত অন্যরা হলেন- ডা. শরীফুলের মেয়ে তাবাচ্ছুম (৮), ভাগ্নি তানজিলা (১৮), শ্যালিকা তাকিয়া আক্তার (১৩), শরিফুলের বন্ধু ঢাকা হেডকোয়ার্টারে কর্মরত পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মো. ফারুক (৩৫) ও মাইক্রোবাসের ড্রাইভার নাহিদ (২৬)।

[caption id="attachment_193485" align="aligncenter" width="700"] ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর সদরের মল্লিকপুরে যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হয়-ভোরের কাগজ।[/caption]

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ডা. শরীফুল ইসলাম পেশায় একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। পাশাপাশি শরীফ হার্ডওয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। এছাড়া একটি কিন্ডারগার্টেন ও মাদ্রাসা পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন তিনি। রোজগারের বেশিরভাগ অর্থই ব্যয় করতেন মানবসেবায়।

ডা. শরীফুল ইসলাম ইসলামের জন্মস্থান মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলায়। ১৭ বছর আগে তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আসেন। পরে পৌরসদরের ছোলনা গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক। দুর্ঘটনায় তার সঙ্গে কন্যাও মারা গেছেন।

স্থানীয় সাংবাদিক লিটু সিকদার জানান, ডা. শরীফুল অসহায়দের পাশে সবসময় দাঁড়াতেন। রোজগারের অধিকাংশ অর্থই তিনি মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছেন। মসজিদ-মাদ্রাসায় অনুদান, শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো- এগুলো ছিল তার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।

দুপুর ১২টার দিকে ডা. শরীফুলের মরদেহ পৌর সদরের ছোলনা মাদ্রাসা মাঠে নেয়া হয়। তাকে শেষবারের মতো দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় জমায়। কান্নায় ভেঙে পড়ে উপস্থিত অনেকেই। তাদের কান্নায় আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। বাদ মাগরিব নামাজে জানাজা শেষে ছোলনা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App