×

সারাদেশ

টেনশনে ক্রেতারা, খুশিতে ডিলাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২০, ০৮:৫০ পিএম

টেনশনে ক্রেতারা, খুশিতে ডিলাররা

বরিশালে টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে উপচে পড়া ভিড়। ছবি: প্রতিনিধি।

টেনশনে ক্রেতারা, খুশিতে ডিলাররা

আগের মতোই সিটির পেঁয়াজ কিনতে দীর্ঘ লাইন। ছবি: প্রতিনিধি।

টিসিবির পেঁয়াজ নিয়ে তিন তিনেক আগেও চরম বিপাকে পড়েছিলেন ডিলাররা। গুদামে পচে যাচ্ছিল টিসিবির পেঁয়াজ। বেশ কয়েকটি জায়গায় পচা পেঁয়াজ ফেলে দেয়ার দৃশ্যও দেখা গেছে। দাম নিয়ন্ত্রণে আসার পর টিসিবির পেঁয়াজে কিনতে একদম আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন ক্রেতারা। গেল প্রায় এক মাস ধরে পিকাপ বোঝাই পেঁয়াজ নিয়ে ঝিমাতে দেখা যাচ্ছিল ডিলারদের। ছিল না দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতাদের পেঁয়াজ কেনার প্রতিযোগিতা। পিকাপ বোঝাই পেঁয়াজ নিয়ে গোমড়া মুখে ঘরে ফিরতে হয়েছিল অনেক ডিলারকে।

তবে হঠাৎ করেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। একশ টাকা কেজির পেঁয়াজ এক লাফে বেড়ে উঠে যায় দুইশ টাকায়। হঠাৎ বাজারে চড়া মূল্য দেখে আঁতকে ওঠেন ক্রেতারা। কম দামে পেঁয়াজ পেতে তারা আবারো টিসিবির ডিলারদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। আগের পরিস্থিতি পাল্টে ডিলাররা আবারো উন্মুক্ত বাজারে বস্তা বস্তা পেঁয়াজ নিয়ে আসেন। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বরিশালে আবারো লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে দেখা গেছে ভোক্তাদের।

নগরীর নগরভবনের সামনে, সিএন্ডবি রোড চৌমাথা, জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বর, বটতলা মোড়সহ সাতটি স্থানে ট্রাকে করে ডিলারদের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রি করেছে টিসিবি। সাতজন ডিলার সাত স্থানে সাত টন পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। ক্রেতা প্রতি সর্বোচ্চ দুই কেজি করে কিনতে পেরেছেন ৩৫ টাকা কেজি দরে। তবে ক্রেতার তুলনায় পেঁয়াজের সরবরাহ কম বলে জানিয়েছেন টিসিবি’র ডিলার লাল মিয়া।

টিসিবি বরিশালের অফিস প্রধান মো. আনিচুর রহমান জানান, প্রতি ডিলারকে প্রতিদিন এক টন করে পেঁয়াজ সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, নতুন করে ১০০ টন পেঁয়াজ এসেছে। এখন গোডাউনে যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ ডিলারদের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে।

বর্তমানে বরিশালে পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের কেজি দেড়শ’ টাকা ছুঁই ছুঁই। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা দরে। সাম্প্রতিক বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়লেও মৌসুম শুরু হওয়ায় শিগগিরই দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। এদিকে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি থাকায় আবারো দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবির পেঁয়াজ কিনছেন ক্রেতারা।

পেঁয়াজ নিয়ে যখন সারাদেশে হুলুস্থুল কাণ্ড তখন বরিশালের বাজারে কেজি প্রতি আড়াইশ’ টাকা ছাড়িয়েছিলো। বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারের আমদানি এবং দেশীয় নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করায় দাম নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে জানুয়ারির শুরুর দিকে পেঁয়াজের বাজার আবার অস্থির হয়ে ওঠে।

[caption id="attachment_193367" align="aligncenter" width="1440"] আগের মতোই সিটির পেঁয়াজ কিনতে দীর্ঘ লাইন। ছবি: প্রতিনিধি।[/caption]

সোমবার বরিশালে পেঁয়াজের পাইকারী বাজার পেঁয়াজ পট্টিতে মিয়ানমারের পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় এবং তুরস্ক ও পাকিস্তানি পেঁয়াজ প্রতিকেজি র্বোচ্চ ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর খুচরা বাজারের কেজি প্রতি আরো ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়েছে।

পেঁয়াজের মৌসুম শুরুর পরও দামের ঊর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে বরিশাল পেঁয়াজ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন বলেন, দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজে চাহিদা পূরণ হয় না। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের পাশাপাশি আগে ভারতীয় পেঁয়াজ দিয়ে চাহিদা পূরণ হতো। কিন্তু ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে।

তবে মিয়ানমার, তুরস্ক ও পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পেঁয়াজও চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই পেঁয়াজের বাজারে সংকট রয়েছে। মৌসুমের শুরুর দিকে বাজারে কিছু দেশীয় পেঁয়াজ এলেও সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। এ কারণে গত কয়েকদিন বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও আবারো দাম কমছে বলে দাবি করেন পেঁয়াজের পাইকারী ব্যবসায়ী এনায়েত হোসেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App