×

মুক্তচিন্তা

ধর্ষক যেন কোনোভাবেই ছাড় না পায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২০, ০৮:২৭ পিএম

দেশে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে নারী লাঞ্ছনা-ধর্ষণের ঘটনা। গত রবিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস থেকে বাসায় যাওয়ার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এছাড়া প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী-শিশু ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ঘটনা আমাদের সামাজিক সুস্থতা এবং নারীর নিরাপত্তা দুটোকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় টঙ্গী রুটের ঢাবির দোতলা ‘ক্ষণিকা’ বাসে করে ওই ছাত্রী বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন। তিনি সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নেমে পড়েন। এ সময় অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক তার মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এরপর ধর্ষণের এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফেরার পর একটি সিএনজি নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন তিনি। এরপর রাত ১২টার দিকে তার সহপাঠীরা খবর পেয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। গতকাল সোমবার সকালে অজ্ঞাতনামা আসামিকে অভিযুক্ত করে ক্যান্টনমেন্ট থানায় ছাত্রীর বাবা মামলা করেন। এদিকে ধর্ষককে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। সন্ধ্যার সময় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এভাবে পৈশাবিকতার ঘটনা মানা যায় না। ওই সময় আশপাশে অনেক মানুষ ছিল। এছাড়া রাজধানীতে মোড়ে মোড়ে পুলিশ থাকে, তাদের টহল গাড়িও থাকে। কিন্তু রক্ষা পায়নি মেয়েটি। শুধু ধর্ষণ নয়, একই সঙ্গে ধর্ষণ ও হত্যার বেশ কিছু ঘটনা ঘটছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না ধর্ষকদের থাবা থেকে। জাতীয়ভাবে বড় প্রতিবাদ না হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন জোরালো ভ‚মিকা দেখা যায় না। স্বীকার করতেই হবে যে, ধর্ষকরাও আমাদের সমাজেরই কোনো না কোনো পরিবারের সদস্য। তাদের বখে যাওয়ার দায় রয়েছে পরিবার-সমাজেরও। তরুণদের সুস্থ-সুন্দর মন ও মূল্যবোধ সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে পরিবার, শিক্ষাসহ সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ ভ‚মিকা রাখতে পারছে না, এটাও স্পষ্ট। মাদকের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গেও এরকম অপরাধের হার বৃদ্ধির যোগসূত্র আছে বলে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ যে মাত্রায় বেড়েছে, লাগাম টেনে না ধরা গেলে তা সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নেবে। ধর্ষণ প্রতিরোধে জরুরি অপরাধীর যথার্থ শাস্তি নিশ্চিত করা। দুর্বল ভিকটিমদের পক্ষে রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে হবে। অপরাধ তদন্তে ও অপরাধীদের বিচারাধীন করায় পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সামাজিক প্রতিরোধ গড়তে এগিয়ে আসতে হবে ব্যক্তি-সংগঠনকে। ঘরে-বাইরে সর্বত্র নারীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। আমরা চাই ঢাবির শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনার অপরাধীকে দ্রুত খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App