পুঠিয়ায় বৃষ্টিতে খেজুরের গুড় উৎপাদন ব্যাহত
nakib
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:৫৬ পিএম
সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীসহ এর আশেপাশের উপজেলা গুলোতে বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্ভাবাসে জানা গেছে, এ বৃষ্টি আরো দু’একদিন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। শীতের মধ্যে আকস্মিক বৃষ্টির প্রভাবে কপালে ভাঁজ পড়েছে জেলার পুঠিয়া উপজেলার খেজুর গুড় উৎপাদনকারীদের। তবে তাদের কপালে ভাঁজ পড়লেও বৃষ্টিতে হাসি ফুটেছে এ উপজেলার পেয়াজ, রসুন, সড়িষা, গম, আলু চাষীসহ অন্যন্য ফসল উৎপাদনকারী কৃষকের মুখে।
এদিকে বৃষ্টির প্রভাবে বেকায়দায় পড়ে সারাদিন অলস সময় পার করছেন এখানকার নিম্ন আয়ের মানুষেরা। সকালে বৃষ্টি ছেড়ে গেলেও বৃষ্টির কারনে কাজে যেতে পারেননি শ্রমিকরা। ফলে কৃষক শ্রমিক এক সাথে মিলে বিভিন্ন বাজারে চায়ের দোকানে আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার সকালে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শেষে হাল্কা বাতাসের সাথে ঝলমলে রোদ দেখা মেলেছে। ঠান্ডা বাতাস উপেক্ষা করে কেও কেও বেড়িয়ে পড়েছেন ফসলের মাঠে। তবে খেজুর গুড় উৎপাদনকারী গাছি ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলো বিভিন্ন বাজারে বসে চায়ের আড্ডায় অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। উপজেলা সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ধনঞ্জয়পাড়া গ্রামের বদরের মোড়ে বসে আড্ডা দেয়া দিন মজুর রবিউল ইসলাম জানান, কাজ থাকলেও হঠাৎ বৃষ্টির কারনে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও বৃষ্টি ছাড়তে অনেক দেড়ি হয়েছে ততক্ষনে কাজের সময় পার হয়ে গেছে। ফলে কাজে যাওয়া সম্ভব হয়নি তারা বাড়ির টুকটাক কাজ শেষ করে বাজারে বসে অলস সময় পার করছিলেন।
স্থানীয় পেয়াজ, রসুন ,সড়িষা, গম ও আলু চাষীরা জানান, মাঠে এগুলো ছাড়াও বিভিন্ন প্রকারের ফসল রয়েছে তবে বৃষ্টিতে কোন ফসলেরই তেমন কোন ক্ষতি হয়নি বরং সকল ফসলের জন্যই বৃষ্টিটা প্রয়োজন ছিলো। সদ্য বেড়িয়ে আসা পেঁয়াজ রসুন আলু ও গমের গাছ গুলো এখন দ্রুত বড় হয়ে উঠবে। বৃষ্টির পর গাছের শক্তি বৃদ্ধি করতে জমিতে তারা এখন সার প্রয়োগ করছেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন খেজুর রস সংগ্রহকারীরা তারা জানান, বৃষ্টির পানি পড়ে রসের হাড়ি ভড়ে গেছে। এতে রস নষ্ট হওয়া ছাড়াও গাছ ভিজে থাকায় নতুন করে রস সংগ্রহের কর্মযজ্ঞও চালাতে পারেনি তারা। এতে দু’দিনের খেজুর গুড় উৎপাদন বন্ধ আছে। বৃষ্টি চলা অবস্থায় রস আহরন বন্ধ থাকে।
৬ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাকে ঘিরে গড়ে ওঠা পুঠিয়া উপজেলার পুরোটা জুড়েই খেজুর গুড় উৎপাদন হয়ে থাকে। সেই গুর ঝলমলিয়া হাট ও বানেশ্বর হাটের বিভিন্ন আড়ৎদারের কাছে গাছিরা ৬৫ টাকা থেকে শুরু করে ৭০ টাকা কেজি দড়ে বিক্রি করেন।
ঝলমলিয়া হাটের আড়ৎদার ওসমান আলী প্রতিদিন কি পরিমান গুড় উৎপাদন হয় বা হাটে কি পরিমান গুড় বিক্রি হয় সে হিসেব জানাতে না পারলেও সপ্তাহে ১২ ট্রাক গুড় ঝলমলিয়া হাট থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে যায়। তবে চাহিদা অনুযায়ী দাম ওঠা নামাও করে। তিনি বলেন, দু’দিন গুড় উৎপাদন বন্ধ থাকলে আগামি হাটে অনেক কম গুড় চালান হবে।