×

জাতীয়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সিরিয়াস নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২০, ১২:০৭ পিএম

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সিরিয়াস নয়

জাতীয় চিত্রশালায় ‘ফ্ল্যাশ অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড’ ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অতিথিরা। ছবি: ভোরের কাগজ।

মিয়ানমার সরকার ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বার বার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়নে তারা সিরিয়াস নয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের রাজনৈতিক দুই নেতা সুচি ও সেনা প্রধানের মধ্যে মতনৈক্য রয়েছে। তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবার কথা বার বার বললেও তা বাস্তবায়ন করছে না।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে শিল্পকলা একাডেমিতে ‘ফ্ল্যাশ অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড’ শীর্ষক ফটোগ্রাফি প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা মাদকসহ টেরিরিজমে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের জন্য কক্সবাজার অঞ্চলে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। সেখানে আমাদের কর্মসংস্থান কমে যাচ্ছে। স্কুল কলেজের ড্রপ আউট বেড়ে ৬৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, শ্রীলংকার রাষ্ট্রদূতসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়ার মামলার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ওআইসির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছি। সেখানে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবার কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু নিচ্ছে না। আমরা দুই লাখ লোকের লিস্ট দিয়েছি। তারা আট হাজার নিতে চায়। কিন্তু রোহিঙ্গারা নিরাপত্তার কারণে সেখানে যেতে চাচ্ছে না। আমরা বলেছি, রোহিঙ্গাদের নেতাদের নিয়ে বোঝাতে, তারা সেটাও করছে না।

[caption id="attachment_192115" align="aligncenter" width="700"] জাতীয় চিত্রশালায় ‘ফ্ল্যাশ অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড’  প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ছবি: ভোরের কাগজ।[/caption]

বিশ্বের অন্তত ১৩৪টি দেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পক্ষে ভোট দিয়েছে উল্লেখ করে ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আমরা বিশ্ব জনমত এক করার চেষ্টা করছি। বিশ্বের ১৩৪টি দেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আমাদের পক্ষে ভোট দিয়েছে। মাত্র সাতটি দেশ ভোট দানে বিরত ছিল।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাই। মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এবং বিশ্ব জনমত এক করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে চাই। তবে এদের জন্য আমাদের প্রায় ৫ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া মাদক বিস্তার ও টেরিরিজম ছড়াতে পারে বলে আমরা চিন্তিত।

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পালিয়ে আসার চিত্র ধারন বিষয়ে অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন চিত্র সাংবাদিক কে এম আসাদ। পরে রোহিঙ্গা সম্পর্কিত একটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর জাতীয় চিত্রশালায় আয়োজিত ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখেন প্রধান অতিথিসহ বিশেষ অতিথি ও রাষ্ট্রদূতরা।

আটদিন ব্যাপী ‘ফ্ল্যাশ অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড’ শীর্ষক ফটোগ্রাফি প্রদর্শনীতে চারজন চিত্রসংবাদিক কে এম আসাদ, সুমন পাল, মাহমুদ হোসেন অপু ও সালাউদ্দিন আহমেদ পলাশের তোলা ১২১টি চিত্র স্থান পেয়েছে। উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশে বিদেশের দর্শনার্থীরা ভিড় জমান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App