×

অন্যান্য

নতুন বছর সফলতার পথে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:১৯ পিএম

নতুন বছর ২০২০। নতুন মানেই আনন্দের-উচ্ছ্বাসের। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি ও যোগ-বিয়োগের। নতুন বছর শিশু শিক্ষার্থীদের কাছে নতুন বই পাওয়ার উৎসব। নতুন বছর তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে নতুন ক্লাসে ওঠার প্রয়াস। নতুন বছর শিক্ষকের কাছে নতুন বই পড়ানোর আনন্দ। নতুন বছর চাকরিজীবীদের কাছে পদোন্নতি পাওয়ার আশ্বাস। আর কৃষকের কাছে নতুন বছর নতুন ফসল ও ন্যায্য মজুরি পাওয়ার প্রত্যাশা। সবার জীবনেই নতুন বছর অর্থই যেন নতুন প্রাপ্তি। তার মাঝেও আমরা পুরনোকে যে ভুলে যাব তা কিন্তু নয়। কারণ অতীতকে ভুলে গেলে বাস্তব বা বর্তমান জীবন চলবে না। পৃথিবীতে অতীত থেকে যারাই শিক্ষা নিয়েছে তারাই সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। আমরা বিভিন্ন মনীষীর জীবনী থেকে যা জানি তাতে দেখি সবাই অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। যা তাদের পরবর্তী জীবনে সফলতার সোপান হিসেবে কাজ করেছে। কারণ পরাজয়ের গ্লানি জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। আমরা হয়তো রাজা রবার্ট ব্রুশের কাহিনী জানি। তিনি বারবার যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন শত্রু পক্ষের দ্বারা। এক পর্যায়ে তিনি আশাহত হয়েছিলেন। এমন সময় তিনি দেয়ালে একটি মাকড়সাকে দেখলেন বারবার বেয়ে ওঠার চেষ্টা করছিল। সাত সাতবার মাকড়সাটি উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু মাকড়সাটি থেমে থাকেনি। অদ্যম মনোবলের কারণে অষ্টমবার মাকড়সাটি দেয়াল বেয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছিল। মাকড়সার সেই প্রচেষ্টা রবার্ট ব্রুশের মনে স্বপ্ন দেখিয়েছিল। মাকড়সার সেই মনোবল তার মনোবলকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। সেই কারণে শেষ প্রচেষ্টায় রাজা জয়ী হয়েছিলেন। এই যে একটি ছোট্ট প্রাণীর থেকে শেখা তাকে অনেক সফল মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার শিক্ষা দিয়েছিল। বাস্তব জীবনেও আমাদের শেখার অনেক জায়গা আছে। তবে বেদনার অতীতকে ভুলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলাই উত্তম। প্রকৃতির বিভিন্ন বস্তু বা প্রাণী থেকেই আমরা শিক্ষা নিতে পারি। কিন্তু আমরা অনেকে লক্ষ্যটা নির্ধারণ করতে পারি না। ফলে লক্ষ্যহীনভাবে চলি। গল্পে পড়েছি নাবিকবিহীন জাহাজ কিন্তু সঠিক গন্তব্যে পৌঁছায় না বা সঠিক পথে চলে না। ঠিক মানব জীবনও তেমনি। লক্ষ্যটা ঠিক বা নির্দিষ্ট না হলে জীবনে কিন্তু সফলতার মুখ দেখা কঠিন। জাহাজের লাইন থেকে আমরা কিন্তু এমনটাই ইঙ্গিত পাই যে কাজ তোমার জন্য প্রস্তুত। সত্যই আজ যারা বিভিন্ন সফল ব্যক্তির জীবনী পড়েন আমার বিশ্বাস তারা আমার সঙ্গে একমত হবেন যে তারা কীভাবে এসেছেন। তাদের সাফল্যটা কীভাবে এলো। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে আবেদের কথাই ভাবুন। সিলেটের হবিগঞ্জের বানিয়াচং তার গ্রামের বাড়ি। আজ থেকে ৫ বছর আগে আমি আমার এক বড় ভাইয়ের চাকরির সূত্রে গিয়েছিলাম বানিয়াচং থানায়। তাও আবার ব্র্যাকেই তার চাকরির যোগদানের জন্য। কী গ্রাম? তখনো জানতাম না এই সাফল্যমণ্ডিত মানুষটির বাড়ি এই অঞ্চলে। তিনি মারা যাওয়ার সময় যখন শুনলাম তখন অবাক হলাম। কতটা মেধা থাকলে এটা সম্ভব? আজ সারাদেশে ব্র্যাকের নামে ভালো ভালো স্থানে জমি রয়েছে। অথচ তার গ্রামের বাড়ি একটি অচিনপুর গ্রামের মতো গ্রামে। যেখানে গিয়ে আমি চালকদের কথা বুঝতে পারিনি। মনে হয়েছিল কোথায় যেন এলাম। এই ফজলে আবেদই সিলেটের বিভিন্ন অনুন্নত এলাকাকে উন্নত এলাকায় পরিণত করেছেন। অর্থনীতির মাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলাকে। আসলে চেষ্টা আর মনোবল থাকলে কিনা সম্ভব? নতুন বছরে আমার প্রত্যাশা নতুন বছর সব বিষাদ দূর হয়ে সুখের প্রাপ্তি হোক। কথায় আছে, সুখ কে নাহি চাই। আমরা সবাই কিন্তু সুখ চাই এবং সুখের জন্যই কাজ করি। তবে এর মাঝেই কেউ কেউ পথ ভুল করে দুঃখের পথকে বেছে নিই। সবাই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিই। সঠিক পথে চলি। লক্ষ্যকে ঠিক করি। নতুন উদ্যোমে পথ চলি। নতুন বছর হোক সফলতার অগ্রদূত। ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App