×

মুক্তচিন্তা

কৃষির হালচাল ও উত্তরণের উপায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:৪২ পিএম

কৃষির হালচাল ও উত্তরণের উপায়

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের মাটি উর্বরতায় অতুলনীয় গুণসম্পন্ন হওয়ায় এখানে খুব সহজেই ফসল উৎপাদন করা যায়। বাংলাদেশের আশিভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে ও আমাদের দেশের অর্ধেক মানুষ এখনো কৃষিজীবী। আমাদের সরকারের অতৎপরতায় দেশের জিডিপিতে কৃষির প্রবৃদ্ধির হার দিন দিন কমে যাচ্ছে। কৃষিতে এ দেশের অর্থনীতিতে জিডিপির হার ৭০ শতাংশ থেকে কমে ১৪ শতাংশে এলেও কৃষির সম্ভাবনা কোনো দিন এ দেশ থেকে কমে যাওয়ার উপায় নেই। আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কৃষির উন্নয়নের বিকল্প নেই। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এ দেশে পেশাজীবীদের মধ্যে কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। একই সঙ্গে ভালো ফলন পেতে হলে যে কীটনাশক, রাসায়নিক সার ও সেচের প্রয়োজন হয় সেগুলো আমাদের দেশের কৃষকের কাছে অপ্রতুল। আমাদের দেশে বেশিরভাগ কৃষি কাজ গ্রামেই করা হয়ে থাকে। কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোন পদক্ষেপ নিতে হলে গ্রামে গিয়ে মাঠ পর্যবেক্ষণ করা দরকার। গ্রামে গেলে দেখা যায় কৃষকরা বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জমিতে চাষাবাদ শুরু করে। আবার একই জমির ফসল কাটা ও মাড়াই করার কাজটা তাদের ফসলের আগাম দাম ধার নিয়ে করা লাগে। আমাদের কৃষির বর্তমান অবস্থা চরম দুর্গতির মুখে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। গ্রামাঞ্চলে কৃষিতে সেচ প্রয়োগের জন্য যে খালগুলো ব্যবহার করা হতো, সেগুলো এখন বেশিরভাগ জায়গায় রাঘববোয়ালদের দখলে কিংবা দীর্ঘদিন খনন না করার ফলে মরে যাচ্ছে। কৃষির উন্নয়নের লক্ষ্যে এসব খাল দখলমুক্ত ও খনন করা দরকার। তা ছাড়াও আমাদের কৃষকদের ফসল উৎপাদনের অন্যতম এক প্রতিবন্ধক হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রতি বছর বন্যার পানিতে ডুবে ও ঝড়ে ফসলের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এসব দুর্যোগের হাত থেকে ফসলকে রক্ষার্থে বন্যা প্রতিরোধে নদীর দুধারে উঁচু বাঁধ নির্মাণ ও কৃষকদের দুর্যোগ পূর্বকালীন আগাম সচেতন করার প্রয়োজন রয়েছে। এক সময় বাংলাদেশকে বলা হতো সোনালি আঁশের দেশ। এ দেশের আঁশের পণ্যের চাহিদাও ছিল বিশ্বব্যাপী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশের পাটকলগুলো অচল হয়ে যাওয়াতে কৃষকরা পাট চাষ করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই বললেই চলে। কেবল আমাদের দেশেই দেখি পাটকল শ্রমিকরা দিনের পর দিন বেতনের জন্য ধর্মঘট করে পথে না খেয়ে মরে যেতে। আরো দেখি ফসলের আশানুরূপ দাম না পেয়ে ক্ষোভে নিজের পাকা ধানের খেতে আগুন জ্বালিয়ে দিতে। তাদের দুঃখের কাহিনী বলে শেষ করা যাবে না। বাংলাদেশকে বলা হয় সোনার বাংলা। অথচ যে সোনালি ধানের সমারোহ দেখে কবিগুরু সোনার বাংলা নাম দিয়েছিলেন আজ সেই সোনালি ধানে ভরা মাঠ কৃষকের বিরহের স্থান। শিল্পের পাশাপাশি কৃষির চালিকা শক্তিকে প্রখর করলে আমাদের আবাদি জমিগুলো থেকে দেশের অর্থনীতিকে দারুণ এক শক্তি জোগাবে বলে আশা করা যায়। আমাদের দেশে আবার কৃষির স্বর্ণ যুগ ফিরিয়ে আনতে কৃষকের কৃষিকাজের যাবতীয় চাহিদা পূরণে ও কৃষির উন্নয়নে সরকারের এগিয়ে আসা অতি প্রয়োজন। সাতক্ষীরা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App