কোটি গ্রাহকের উদ্বেগের অবসান
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২০, ০৩:৪৩ পিএম
মোবাইল নেটওয়ার্ক
ভারত সীমান্ত থেকে বাংলাদেশের ভেতরে অন্তত এক কিলোমিটার এলাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়ার পর দুই দিনের মাথায় তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি। ফলে মোবাইল ফোন সেবা নিয়ে এ দেশের প্রায় এক কোটি গ্রাহকের মধ্যে যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল- সেটির অবসান ঘটেছে।
ভারতের নাগরিক পঞ্জি ইস্যুতে এ দেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি ঠেকাতে গত রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিটিআরসি এ সংক্রান্ত নির্দেশনাটি জারি করেছিল। এতে সীমান্তবর্তী এলাকার অন্তত এক কিলোমিটার ভেতর পর্যন্ত মোবাইল ফোনের কাভারেজ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয় ৪ অপারেটরকে।
নির্দেশনার জারির পর দিন মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন এ্যামটব জানায়, নেটওয়ার্ক বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে তারা। তবে এতে বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের অসুবিধা হওয়ার কথাও জানায় সংগঠনটি।
সূত্রমতে, কভারেজ বিঘ্নিত হওয়ার এলাকায় প্রায় এক কোটি গ্রাহক রয়েছে যারা নেটওয়ার্ক বন্ধের সঙ্গে সঙ্গেই কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েন। এ নিয়ে দেশে ব্যপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এদিকে, ওই সিদ্ধান্তের দুদিনের মাথায় মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে বিটিআরসি তা প্রত্যাহারের নির্দেশনা জারি করে অপারেটরদের চিঠি দেয়। বিটিআরসি থেকে চিঠি পাওয়ার পর বুধবার (১ জানুয়ারি) সীমান্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক চালু করতে কাজ শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, সীমান্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক বন্ধে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল, বুধবার থেকে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
নতুন নির্দেশনা আসার পর অপারেটর রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম জানান, বিটিআরসির নির্দেশনা পাওয়ার পর সীমান্তবর্তী এলাকার বেস ট্রান্সিভার টাওয়ারগুলো (বিটিএস) চালুর কাজ শুরু করেছি। যেহেতু এখানে অনেক বিটিএস জড়িত, সবগুলো একই সময়ে চালু করতে একটু সময় লাগতে পারে।
অবশ্য মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ ও চালুর এ নির্দেশনা নিয়ে সরকারের কেউ স্পষ্ট বক্তব্য দেননি। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ বিষয়ে জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে বিটিআরসি এ নির্দেশনা জারি করেছিল।
তবে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বলেন, একটা সিদ্ধান্ত পাওয়া গেছে উচ্চ পর্যায় থেকে। কিছুটা অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে ইন্ডিয়াতে। সেটি বোধ হয় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে জহুরুল হক বলেন, ভারতের নাগরিকপঞ্জী নিয়ে যেন কোনো অসন্তোষ সৃষ্টি না হয়, কেউ যেন প্রোপাগান্ডা বা গুজব রটনা না করতে পারে, সেজন্য সরকার তৎপর আছে। কিন্তু এর সঙ্গে বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্কের কি সম্পর্ক এমন প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, বর্ডার বিটিএস তো, এপাশের কথা ওপাশে যায়। হয়তো কিছু প্রোপাগান্ডা করার মতো খবর সরকারের কাছে আছে। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট আছে যে গুজব রটনা করতে পারে।