ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলায় পক্ষিয়া ইউনিয়নে ১ মাস পূর্বে ৩ সন্তানের জননী বিবি মরিয়ম (৩৭) এর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় ভোলা কোর্টে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে জামাই বলে অভিযোগ করেন মেয়ের বাবা। তিনি ১ মাস পর্যন্ত মেয়ের কবরের পাশে বসে কাঁদছেন, আর দাবি করছেন তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় মেয়ের হত্যাকারীর বিচার যেনো দেখে যেতে পারেন। এদিকে এলাকার একটি প্রভাবশালীরা মোটা অংকের অর্থের বিনিময় এ হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিহতের বাবা পক্ষিয়া ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. বাদশা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ১৬/১৭ বছর পূর্বে একই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মো. জাহাঙ্গীর ওরফে ঠাণ্ডির সাথে আমার মেয়ে বিবি মরিয়ম এর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই আমার মেয়েকে মারধর করতো মেয়ের জামাই। সন্তানদের মুখের দিকে থাকিয়ে সকল কষ্ট বুক বুজে সহ্য করে নিতো। গত ২৮ নভেম্বর সকালে আমার মেয়েকে বেদম মারধর করে জামাই জাহাঙ্গীর। এরপর (২৯ নভেম্বর) রাতে আমার মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে পিটিয়ে মেরে পাশ্ববর্তী ইউসুফ এর ঘরের পাশে ফেলে রেখে ওই রাতেই পালিয়ে যায় মেয়ের জামাই জাহাঙ্গীর। আমার একটি মাত্র মেয়েকে ও পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি ওর ফাঁসি চাই। এদিকে কোন ভাবে এ হত্যা মেনে নিতে পারছে না মেয়েটির পরিবার ও এলাকাবাসী।

তাদের দাবি আমাদের মেয়ে কে পিটিয়ে হত্যা করে পাশের বাড়ির ইউসুফের ঘরের পাশে নিয়ে ফেলে রেখে পালিয়েছে জামাই জাহাঙ্গীর। এ ঘটনার পর থেকেই সে পালিয়ে রয়েছে। আমরা জাহাঙ্গীরের উপযুক্ত শাস্তি চাই। তারা বলেন, মেয়েটি যদি নিজে আত্মহত্যা করতো তাহলে কিভাবে তার লাশ পাশের বাড়িতে পাওয়া যায়। তাদের পরিবারের দাবি স্বামী তাকে মেরে আত্মহত্যা বলে প্রচার করতে চায়। আমরা সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে সবোর্চ্চ শাস্তির দাবি জানান।

এ ঘটনায় ভোলা কোর্টে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং ৮০৮/১৯। এলাকাবাসী জানান, মেয়েটিকে হারিয়ে বৃদ্ধ বাবা বাদশা মিয়া প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একমাত্র মেয়েটির কবরের পাশে বসে থাকে। মেয়েটিকে হারিয়ে বৃদ্ধ বাবা দিশেহারা। তার একটাই চাওয়া জীবিত অবস্থায় তার মেয়ের হত্যারকারীর বিচার যেনো দেখে যেতে পারেন।

এব্যপারে নিহতের মেয়ে জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী সেলিনা আক্তার বলেন, মাকে বাবা ওই দিন সকালে একটি লাথি মেরেছে। আর কিছু করেনি। ওই দিন রাতে মায়ের সাথে আমরা দুই বোন ঘুমিয়ে গেছি। আর কিছু বলতে পারি না। গভীর রাতে পাশের বাড়ীতে মায়ের লাশের কথা শুনে আমরা কান্নায় ভেঙ্গে পরি। এব্যপারে বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইন-চার্জ ম. এনামুল হক জানান, ভোলা কোর্টে মামলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খুব গভীর ভাবে তদন্ত করছি। পোষ্ট ম্যাডাম রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা উৎদঘাটন হবে।