বাবা থেকেও নেই। ছোট মেয়েটার ঘাড়ে সংসারের দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে আলাদা হয়ে গেছেন। মানসিক রোগী মা আর ভাইয়ের দেখভালের ভার এখন সবটাই সামলাতে হচ্ছে তাকে। পাশাপাশি এগিয়ে নিচ্ছেন নিজের পড়াশোনাটাও। ভারতের তামিলনাড়– রাজ্যের পাত্তুকোট্টাইয়ে একটি সরকারি স্কুলের ছাত্রী জে জয়ালক্ষ্মী। একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। সায়েন্সের ওপর বরাবরই তার আগ্রহ। মেধাবী এই ছাত্রী এবার নিজের চেষ্টাতেই নাসায় গিয়ে মহাকাশচারীদের সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের মে মাসেই তিনি নাসায় যাচ্ছেন। কীভাবে এলো এই বিরল সুযোগ?

বাড়িতে অসুস্থ মা আর ভাইয়ের যাবতীয় খরচ তাকেই টানতে হয়। পড়াশোনার ফাঁকে সে জন্য তাকে বাদাম বিক্রি করতে হয়। গৃহত্যাগী বাবা কখনো কখনো মন চাইলে টাকা পাঠান। বাকিটা তাকেই উপার্জন করতে হয়। তাই বাদাম বিক্রির পাশাপাশি টিউশনিও করতে হয় তাকে। অষ্টম আর নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পড়ান। একদিন হঠাৎ কাগজের একটা খবরে চোখ আটকে যায় তার। গোগুরু নামে একটি সংস্থা নাসা যাওয়ার জন্য সব পড়–য়াদের সুযোগ দিতে একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছে। খবরটা দেখেই আর বসে থাকতে পারেননি জয়ালক্ষ্মী। সব কাজ ফেলে দৌড়ে বাড়ি গিয়ে প্রতিযোগিতার জন্য ফর্ম পূরণ করেন। নিজের মতো করে বাড়িতেই প্রস্তুতি নেন।

আর সেই পরীক্ষায় সফলও হয়ে যান অবশেষে। তাতেও অবশ্য সমস্যার সমাধান হয়নি। সমস্যা এবার অন্য জায়গায়। নাসায় ঢোকার টিকেট তো পেয়ে গিয়েছেন, কিন্তু যাতায়াত খরচ! সেও তো অনেক টাকা। কয়েকজন শিক্ষক আর সহপাঠীরা মিলে পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়েছে তার। পাসপোর্ট অফিসারও তাকে কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন। কিন্তু সেটাও যথেষ্ট নয়। এখন জেলা শাসকের কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছেন জয়ালক্ষ্মী।