×

অর্থনীতি

দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ানো হচ্ছে পেঁয়াজচাষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:৩১ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ানো হচ্ছে পেঁয়াজচাষ

পেঁয়াজ। ছবি: ফাইল

দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ানো হচ্ছে পেঁয়াজচাষ

জমিতে পেঁয়াজ। ছবি: সংগ্রহ।

ভারত হঠাৎ করেই রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার পর পেঁয়াজ নিয়ে দেশে অসহনীয় সংকট সৃষ্টি হয়। গেল কয়েক মাসেও লাগাম টানা যায়নি পেঁয়াজের দামের। আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে তাই দেশজ উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে এবার দক্ষিণাঞ্চলে পেঁয়াজের আবাদ বাড়ানো হচ্ছে।

দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলায় এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা গেল বছরের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। সরকারি প্রণোদনা ছাড়াও প্রজেক্টের মাধ্যমে পেঁয়াজ উৎপাদনে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন। ফলে চলতি মৌসুমে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গেল বারের চেয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্ধশত হেক্টর বাড়িয়ে এক হাজার ১০৬ হেক্টরে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রমতে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো বরিশাল অঞ্চলেও পেঁয়াজ আবাদ এবং উৎপাদন হলেও তুলনামুলকভাবে তা অনেক কম। পাশের ফরিদপুর জেলায় যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে তার অর্ধেকও ফলছে না দক্ষিণের ছয় জেলায়। পেঁয়াজের উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে উপযুক্ত মাটি না থাকা আর চাষীদের অনাগ্রহকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা এসব সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সূত্রমতে, চলতি মৌসুমে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় যে এক হাজার ১০৬ হেক্টর জমি পেঁয়াজ চাষের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ভোলা জেলায়। এ জেলায় ৬১০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হবে। আর সবচেয়ে কম লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ঝালকাঠিতে, মাত্র পাঁচ হেক্টর জমিতে।

কৃষি সম্প্রসারণের দায়িত্বশীল সূত্রমতে, বিগত বছরের তুলনায় এবারের লক্ষ্যমাত্রা যে বাড়ানো হয়েছে তা আগামীতে অব্যাহত থাকবে। গেল বছরে বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলার এক হাজার ৫৭ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। দক্ষিণের আট জেলায় উৎপাদন হয়েছিল আট হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ।

[caption id="attachment_191299" align="aligncenter" width="700"] জমিতে পেঁয়াজ। ছবি: সংগ্রহ।[/caption]

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের অভিমত, সিন্ডিকেটের কারণে দেশের পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিদেশি পেঁয়াজ না আশায় দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ, তিনগুণ। সে কারণে দেশীয় পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে জেলা ভিত্তিক পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়লে বাজারে পেঁয়াজের দামও কমে আসবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আফসার উদ্দিন বলেন, পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত মাটি প্রয়োজন। যা আমাদের অঞ্চলে নেই। কম্পোস্ট বেশি আছে এমন বেলে- দো-আঁশ উঁচু জমিতে পেঁয়াজের উৎপাদন বেশি হয়। কৃষিবিদ আফসার উদ্দিন আরো বলেন, বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চল নিচু হওয়ায় কম্পোস্ট কমে থাকে আর পানি বেশি থাকে। সে কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হয়। সে কারণে চাষীদের আগ্রহও কম।

আফসার উদ্দিন বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে সে ভাবেই কাজ করছি। কৃষকদের পেঁয়াজ চাষে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি ১৮টি প্রজেক্টের মাধ্যমে পেঁয়াজসহ মশলা জাতীয় ফসল উৎপাদনে কাজ করছি। এতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো দক্ষিণেও পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়বে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App