আত্রাই’য়ে যান্ত্রিকতায় হারিয়ে যাচ্ছে পালতোলা নৌকা
nakib
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৪:৫২ পিএম
সময়ের বিবর্তণ, জৌলুস হারানো নদ-নদীর করুণ অবস্থা আর যান্ত্রিক সভ্যতা বিকাশের ফলে বিলুপ্তির পথে আবহমান গ্রাম বাংলার অন্যতম ধারক ঐতিহ্যবাহী পাল তোলা নৌকা। হাতে গোনা দু’একটা পালের নাও চোঁখে পড়লেও তাদের নৌকায় আগের মতো আর মানুষ ওঠে না।
নতুন বধূ শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য পাল তোলা নৌকার বায়না আর ধরে না। যমুনা, আত্রাই নদীবেষ্টিত নওগাঁর আত্রাই বেশি ভাগ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে নিবিড় ভাবে সম্পৃক্ত ছিল নদী আর পালের নাওয়ের সম্পর্ক। দেড় যুগ আগেও যমুনা, আত্রাই নদীর নৈসর্গ রূপের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে সারি সারি নৌকা। এসব নৌকায় ছিল রঙিন পাল।
নওগাঁর বুক চিরে বয়ে চলা যমুনা, আত্রাই নদী আর অনেক গুলো খাল বিলে, তার পাড়ে দল বেঁধে মানুষ পাল তোলা নৌকার সে দৃশ্য দেখে চোঁখ জুড়িয়ে আসতো। আর মাঝনদী ও বিল থেকে ভেসে আসা ভাটিয়ালি গানের সুর শুনে মন তৃপ্ত হতো। এসব নদীকে ঘিরে এক সময় পাল তোলা নৌকা ছিল যাতায়াতের মাধ্যম। এ-পাড় থেকে ও-পাড়ের যাত্রীদের ভাসিয়ে নিয়ে যেত নৌকা।
তবে কালের পরিক্রমায় এসব নৌকা এখন অতীত। নদীতে যেটুকু সময় পানি থাকে বিশেষ করে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে নৌকা চলাচল করে। তাতে পালতোলা নৌকার দেখা মিলে না। এক সময় সাম্পন, কোষা নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা-সহ বিভিন্ন ধরণের পালের নাওয়ের ব্যবহার ছিল।
যান্ত্রিক সভ্যতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে পালতোলা নৌকা। কদর নেই মাঝি-মাল্লাদেরও। নৌকায় পাল এবং দাঁড়-বৈঠার পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজেলচালিত ইঞ্জিন। মাঝে মধ্যে দু’একটা পালের নাও এখনো নদ-নদীতে দেখা যায়। পালের নাওকে উপজীব্য করে যুগে যুগে কবি-সাহিত্যিকরা রচনা করেছেন কবিতা, ছড়া, গল্প, গান পালা ইত্যাদি।
আত্রাই সদর উপজেলার আত্রাই ফেরীঘাট এলাকার বৃদ্ধ পরেশ চন্দ্র বলেন, পাল তোলা নৌকা ছিল আদি বাহন। কিন্তু এখন আর এসব নৌকার কদর নেই। আমার মনে হয় এক সময় পরবর্তী প্রজন্মের শিশুরা ভুলে যাবে, ‘পালের নাও, পালের নাও..