×

জাতীয়

ঢাকাকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:০২ এএম

ঢাকাকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলব
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ চলছে। অপরিকল্পিত ঢাকাকে পরিকল্পিত স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে সব ধরনের চেষ্টা করব। ৯ মাসের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, নগরবাসীকে নিয়ে ‘ক্লিন এবং গ্রিন ঢাকা’ গড়ার কাজে সফল হয়। সম্প্রতি ভোরের কাগজকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। বিগত ৯ মাসের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো প্রাচীনতম দল থেকে মনোনয়ন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিদিন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি। কোন জায়গায় কী ঘাটতি আছে সেগুলো ছক করেছি। জলাবদ্ধতা, মশক নিয়ন্ত্রণসহ স্মার্ট সিটির প্ল্যান করেছি। আমি মনে করি আওয়ামী লীগ অবশ্যই বিবেচনা করবে যে দায়িত্বগুলো দেয়া হয়েছিল তা আমি সঠিকভাবে, নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছি কিনা। আমার বিশ্বাস আওয়ামী লীগ আবারো আমাকে সুযোগ দিবে। উপনির্বাচনের টেস্ট কেসে নিজেকে অনেকটাই সফল মনে করেন আতিকুল ইসলাম। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্রথম দিন থেকেই নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি। তবে পুরো সাফল্য আনতে না পারলেও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর সময় এসেছে। দল মনোনয়ন দিলে এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে তাদের প্রত্যাশা পূরণে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাব। দ্বিতীয় দফায় মেয়র নির্বাচিত হলে আগামীর পরিকল্পনা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা একটি অপরিকল্পিত শহর। এখানে প্রথম বা দ্বিতীয় বলে আসলে কিছুই নেই। জলাবদ্ধতা, ডেঙ্গু, যানজট, বায়ুদূষণ, ফুটপাত, ১৮টি নতুন ওয়ার্ডকে সাজানোসহ অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে করতে হচ্ছে। এগুলো এক একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে থেকেও নতুন প্রজন্মের জন্য নতুন কিছু করার চেষ্টা থাকবে। একটি ক্লিন এবং গ্রিন সিটি আমি তাদের উপহার দিতে চাই। তিনি বলেন, সিটি প্ল্যানের মাধ্যমে নাগরিকরা কী চায় সেই মাফিক কাজ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। মহানগরের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি। এবার ‘ক্লিন এবং গ্রিন ঢাকা’র কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করব। এ লক্ষ্যে ৫৪টি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে নগর উন্নয়নে কাজ করা হবে। অপরিকল্পিত শহরকে পরিকল্পিত করতে সব চ্যালেঞ্জ নিতে আমি প্রস্তুত রয়েছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৯ মার্চ যখন প্রথম দায়িত্ব নেই আবরার হত্যা নিয়ে যে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল তখন রাস্তায় নেমে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছি। এরপরেই এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড ঘটল। সেটা যেতে না যেতেই গুলশানে আগুন। সেটা শেষ না হতেই ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। এসব চ্যালেঞ্জে পিছপা হইনি। কালশী খাল সংস্কার করেছি। আমি বিবেকের কাছে পরিষ্কার। যতদিন দায়িত্বে ছিলাম একটা দিনের জন্য অবহেলা করিনি। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আনিসুল হক যে স্বপ্নগুলো দেখেছিলেন আর আমরা আজ যে স্বপ্ন দেখছি সেখানে কোনো পার্থক্য নেই। আমি সম্পূর্ণ পারিনি। তবে চেষ্টা করেছি। এলইডি লাইট, ইউলুপসহ অনেকগুলো প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এরপরও ইউলুপের ফাইল অনুমোদন করেছি। ২৪টি পার্ক হাতে নিয়েছিলাম ১টা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। আমি চাই না নির্বাচনী প্রচারণায় ‘শোআপ’ করার জন্য তড়িৎ গতিতে কাজ করতে গিয়ে সব নষ্ট হয়ে যাক। প্রতিটি প্রজেক্ট টেকসই করে ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছি। আমি নগরবাসীকে গ্যারান্টি দিতে চাই, ঢাকা শহরের একটা রাস্তাও কাচা থাকবে না। আনিসুল হকের প্রতিটি স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের নাগরিকদের সমস্যা সমাধানের কর্মপরিকল্পনা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের নাগরিকদের জন্য আসলেই কিছু করা হয়নি। তবে আমার বিশ্বাস ১৮টি ওয়ার্ডও একদিন গুলশানের মত আধুনিক হবে। ১৮টি ওয়ার্ডকে ৫টি অঞ্চলে ভাগ করে কাজ করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি অঞ্চলে নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিজেকে ব্যর্থ বলতে নারাজ মেয়র আতিকুল ইসলাম। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ব্যর্থ বলব না। তবে হুট করে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সামনে আসায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। সে সময়ে আমি ২৪ ঘণ্টা মাঠে কাজ করেছি। নগরবাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। তবে দায়িত্বে থেকে কাজ করতে গেলে ভুল-ভ্রান্তি থাকে। কিন্তু আমি সজ্ঞানে দায়িত্বে অবহেলা করিনি। ডেঙ্গুর বিষয়টি ভোটের মাঠে প্রভাব ফেলবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App