জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব পাশ
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গ্রেপ্তার, নির্যাতন, ধর্ষণ, হেফাজতে মৃত্যুসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করেছে জাতিসংঘ। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের যুদ্ধাপরাধ তদন্ত করে দেখার জন্য তহবিল বরাদ্দ করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। তিনশো সাত কোটি ডলারের তদন্ত তহবিলে প্রথমবারের মতো সিরিয়া ও মিয়ানমারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পেশ করা হয়। প্রস্তাবে ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৩৪টি দেশ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এবং নয়টি দেশ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিপক্ষে ভোট দেয়। এসময় ভোট দেয়নি ২৮টি দেশ। প্রস্তাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হয়েছিল।
প্রস্তাবে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা প্রশমনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মিয়ানমার সরকারকে আহবান জানানো হয়েছে। এই প্রস্তাব পাশকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হাও দো সুয়ান মানবাধিকার লঙ্ঘনের নামে আরেকটি বৈষম্যমূলক ও বিশেষভাবে বাছাই করার দ্বৈত আচরণ বলে অভিহিত করেন।
এসময় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বলেন, এই প্রস্তাবটি রাখাইন রাজ্যে জটিল পরিস্থিতি সমাধানে কোন ভূমিকা রাখবে না। এ ধরণের প্রস্তাব অবিশ্বাসের বীজ বপন করবে। প্রস্তাবটি ওই অঞ্চলে নানা সম্প্রদায়ের মধ্যে আরো মেরুকরণ তৈরি করবে।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের তীব্রতা ভয়াল রুপ ধারণ করলে মিয়ানমারে থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা দেশের সিমানা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর রোহিঙ্গাদে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমার হতে কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি এবং নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারে ফিরবেনা বলে রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এর আগে চলতি বছরের নভেম্বর মাসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মামলায় হাজিরা দেন অং সান সু চি। সেই সঙ্গে গণহত্যার অভিযোগে গত ১১ই নভেম্বর আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।