×

খেলা

আরচারিতে সাফল্য শতভাগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৩২ এএম

আরচারিতে সাফল্য শতভাগ
আরচারিতে সাফল্য শতভাগ
দেখতে দেখতে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের পাতা শেষ হয়ে এলো। তাই দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২০২০। ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে যাওয়া ২০১৯ সালের ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। আরচারির কারণে নেপালে অনুষ্ঠিত ১৩তম এসএ গেমসে পদক জয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। এবারের গেমসে ১৯টি স্বর্ণ জিতেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা সাফল্য। আগের ১২টি আসরের মধ্যে ২০১০ সালে দেশের মাটিতে ১৮টি স্বর্ণ জিতেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বিদেশের মাটিতে ১৯৯৫ সালে ৭টি স্বর্ণ জিতে বাংলাদেশ। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার ১৯টি স্বর্ণ জয়ের পেছনে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেছে আরচারি ইভেন্ট। এ ইভেন্টে দশে দশ পেয়েছে রোমান-ইতিরা। এবার সদ্য সমাপ্ত ১৩তম এসএ গেমসে ২৭টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৬টিতে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা। যেখানে ২৬ ডিসিপ্লিনের মধ্যে আরচারিতে শতভাগ সাফল্য পেয়েছে রোমান-ইতিরা। এসএ গেমসে আরচারিতে দশে দশ পেয়ে আরচাররা জানিয়ে দিয়েছেন সঠিক পরিকল্পনা এবং কঠোর অনুশীলনের সুফল তারা অর্জন করেছেন। বাংলাদেশে আরচারি এত জনপ্রিয়তা এবং সাফল্যের পেছনে যার নামটি না বললেই নয় তিনি হলেন কাজী রাজিব উদ্দিন চপল। তিনি আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। কাজী রাজিব উদ্দিন আহমেদ চপল এশিয়ান আরচাররি ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দক্ষিণ এশিয়ান আরচারি ফেডারেশনের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া ওয়ার্ল্ড আরচারির কন্সালটেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আরচারির উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ খেলাগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০১৯ সালের শুরু থেকেই মাঠে ছিল আরচারি। বছরের শুরুতে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে তৃতীয় আইএসএস আন্তর্জাতিক সলিডারিটি র‌্যাঙ্কিং আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপ। এ প্রতিযোগিতায় স্বাগতিকরা ২টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ্য এবং ৪টি ব্রোঞ্জ জিতে রানার্সআপ হয়। আর ৪টি স্বর্ণ এবং ৩টি করে রৌপ্য এবং ব্রোঞ্জ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। আরচারিতে সাফল্য পেতে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জামার্ন কোচ মার্টি ফ্রেডরিককে নিয়োগ দেয়া হয়। রোমান সানার ২০১৯ সালের সাফল্যের পথে যাত্রা শুরু ইসলামিক সলিডারিটি আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে। আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং প্রতিযোগিতায় রিকার্ভ একক ইভেন্টে রৌপ্য জয় করেন ২৪ বছর বয়সী খুলনার এ তীরন্দাজ। পরবর্তী সময়ে নেদারল্যান্ডসে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জেতেন। এ আসর দিয়েই টোকিও অলিম্পিকের টিকেট পান। বাংলাদেশের প্রথম আরচার হিসেবে কোটা প্লেস পেয়েছেন রোমান। এর মধ্য দিয়ে গলফার সিদ্দিকুর রহমানের পর মাত্র দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এমন কৃতিত্ব দেখালেন এ আরচার। পরবর্তী সময়ে ফিলিপাইনে এশিয়া কাপ আরচারিতে একক ইভেন্টে স্বর্ণ, দলীয় ইভেন্টে রুপা ও মিশ্র দ্বৈত ইভেন্টে ব্রোঞ্জপদক পান রোমান। পদকের হিসেবে সবচেয়ে বড় সাফল্য বছরের শেষ দিকে এসএ গেমসে পান এ তীরন্দাজ। নেপালে অনুষ্ঠিত আসরে তার পাশাপাশি উজ্জ্বল ছিলেন সতীর্থরাও। আরচারির ১০ ইভেন্টে শতভাগ সাফল্য পায় বাংলাদেশ। একক, দলীয় ও মিশ্র দ্বৈত ইভেন্টে স্বর্ণ জয় করে ত্রিমুকুট মাথায় তোলেন রোমান। ত্রিমুকুট পান রিকার্ভ ডিভিশনের ইতি খাতুন ও কম্পাউন্ড ডিভিশনের সোহেল রানাও। তীর ধনুকের খেলায় যিনি ক্রীড়া বিশ্বের বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন তার নাম রোমান সানা। সেপ্টেম্বর ফিলিপাইনে রোমানের হাত ধরে রিকার্ভ এককে স্বর্ণপদকের পাশাপাশি দলগত বিভাগে রৌপ্য এবং মিশ্র দ্বৈতে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে বাংলাদেশ। ২০২০ সালে টোকিওতে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকেও পদক জয়ের স্বপ্ন দেখেন তিনি। আরচারিতে যার হাত ধরে এত সাফল্য সেই রোমান সানাকে ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গণভবনে মিষ্টি মুখ করিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এশিয়া কাপ ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিং (স্টজ-৩) আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণজয়ী আরচার রোমান সানার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোমান সানার স্বপ্নপূরণে নানাবিদ উদ্যোগ নিয়েছেন। ¯¦র্ণজয়ী সানার মায়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। নিশ্চিন্ত জীবনের জন্য অর্থ পুরস্কারের ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন। দেশের ক্রীড়া উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত আন্তরিক ও উদার হস্ত। সরকারের উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতায় এখন আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পর্যায়ের খেলা যেমন ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং হচ্ছে রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী ও অন্যত্র। খেলাধুলার উন্নয়নে জাতীয় বাজেট বরাদ্দও বেড়েছে। অন্তত ৫০টি জেলায় ৫০টি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App