×

সারাদেশ

বালু কেটে সৈকত ঝুঁকিপূর্ণ করছে ‘সিকো’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:১৯ পিএম

বালু কেটে সৈকত ঝুঁকিপূর্ণ করছে ‘সিকো’

কুয়াকাটায় সৈকত থেকে বালু সংগ্রহ। ছবি: প্রতিনিধি।

বালু কেটে সৈকত ঝুঁকিপূর্ণ করছে ‘সিকো’

কুয়াকাটায় সৈকত থেকে বালু সংগ্রহ। ছবি: প্রতিনিধি।

বালু কেটে সৈকত ঝুঁকিপূর্ণ করছে ‘সিকো’

কুয়াকাটায় সৈকত থেকে বালু সংগ্রহ। ছবি: প্রতিনিধি।

সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য দেখার বেলাভূমি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে হাজার হাজার টন বালু কেটে নিয়ে যাচ্ছে চায়না সিকো কোম্পানি। সরকার একদিকে সমুদ্র সৈকত রক্ষার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে বিদেশি ওই কোম্পানি রাতের আঁধারে ট্রাকের পর ট্রাক ভর্তি করে বালু তুলে নিয়ে সৈকতকে করে তুলছে ঝুঁকিপূর্ণ।

সমুদ্রের কোল ঘেঁষে থাকা স্থানীয়রা যেখানে নিজেদের প্রয়োজনে এক ভ্যান বালুও ব্যবহার করতে পারছে না, সেখানে জেলা বা স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই বিদেশি ওই কোম্পানি হাজার হাজার সিএফটি বালু ট্রাক ভরে নিয়ে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধ মেরামতের নামে অবৈধভাবে সমুদ্রের বালু নিয়ে অন্যত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।

গত এক সপ্তাহ ধরেই চলছে এমন অবৈধ কর্মকাণ্ড। যদিও সিকো কোম্পানির স্থানীয় প্রতিনিধি মি. জ্যাং-এর মুখপাত্র ইমন ইসলাম জানান, তাদের এ বালু নেয়ার অনুমতি দিয়েছে প্রকল্পে কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রকৌশলীরা। তাবে পাউবো প্রকল্পের ৪৮নং পোল্ডারের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী বালু নেয়ার অনুমতি কাউকে দেয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন। দুই পক্ষ থেকে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। এতে পুরো বিষয়টি নিয়েই যে লুকোচুরি খেলা চলছে তা নিয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছে।

উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১ (সিইআইপি-১) এর আওতায় বর্তমানে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া ঝুকিঁপুর্ণ ৪৮নং পোল্ডারের সংস্কার কাজ চলছে। এ বাঁধ নির্মাণ কাজেরই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না সিকো কোম্পানি। এ কোম্পানির দায়িত্বরত প্রকল্প ইনচার্জ মি. জ্যাং কাজের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম কানুনই মানছেন না। যেমন খুশি তেমন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কাজের মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।

সূত্রমতে, বিদেশি ওই কোম্পানির স্থানীয় প্রতিনিধিদের সহায়তায় বেড়িবাঁধের কোলঘেঁষে অবস্থিত হোটেল সাগর কন্যা, বেঙ্গল গেস্ট হাউজ ও সিভিউ হোটেলের সম্মুখভাগ থেকে রাতেদিনে সমুদ্রের বালু ট্রাকে ভরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র। প্রায় বিশ থেকে পঁচিশটি ট্রাকে করে গেল এক সপ্তাহ ধরে বালু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে লতাচাপলী ইউনিয়নের আমখোলাপাড়া এলাকায়।

এর আগেও কোম্পানিটি সমুদ্র সৈকত থেকে বালু নিয়ে অন্যত্র কাজে লাগিয়েছে। পরে উপজেলা প্রশাসনের বাধার মুখে বালু নেয়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কিছুদিন বন্ধ থাকলেও এখন আবারো নেয়া হচ্ছে সমুদ্রের বালু।

[caption id="attachment_189768" align="aligncenter" width="700"] কুয়াকাটায় সৈকত থেকে বালু সংগ্রহ। ছবি: প্রতিনিধি।[/caption]

মুজিবুল হক ওরফে মধু, সাউথ বিচ হোটেলের কেয়ারটেকার আনোয়ারসহ একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, গত কয়েকদিন ধরে রাতে ও দিনে ২০-২৫টি ট্রাকে করে স্কুভিটার (ভেকু) দিয়ে বালু কেটে নেয়া হচ্ছে। ১০ চাকার এসব ট্রাকের প্রতিটিতে ৬শ থেকে ৭শ ফুট বালু ধারণ ক্ষমতার ভারী যানের শব্দে রাতে পর্যটকসহ স্থানীয়দের ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে।

চায়না সিকো কোম্পানির মিং জ্যাং-এর মুখপাত্র দো-ভাষী ইমন ইসলাম বলেন, বেড়িবাঁধের স্লোপের নিচের বালু নেয়ার অনুমতি রয়েছে তাদের। অনুমতিপত্র আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, পাউবোর প্রকল্প প্রকৌশলীর অনুমতিতেই বালু অন্যত্র নেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপকূলীয় বাধঁ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১ (সিইআইপি-১) ৪৮ এবং ৪৭/২ পোল্ডারের দায়িত্বরত প্রকল্প প্রকৌশলী মজিবর রহমান (সিএসই) বলেন, বেড়িবাঁধের কোলঘেঁষে থাকা সমুদ্রের বালু নেয়ার বিষয় তিনি জানেন না। আর এ বালু নেয়ার অনুমতি তিনি বা তার অফিস কাউকে দেয়নি। চায়না প্রজেক্টের ইনর্চাজের মুখপাত্র মিথ্যা বলেছেন বলে তিনি দাবি করেন। তিনি ফোনে বালু নিতে নিষেধ করে দিবেন বলেও জানান।

[caption id="attachment_189769" align="aligncenter" width="700"] কুয়াকাটায় সৈকত থেকে বালু সংগ্রহ। ছবি: প্রতিনিধি।[/caption]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App