×

অর্থনীতি

সুন্দরবন বাঁচাতে বর্জ্য দূষণ ঠেকানোর উদ্যোগ সরকারের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:০৫ এএম

সুন্দরবন বাঁচাতে বর্জ্য দূষণ ঠেকানোর উদ্যোগ সরকারের
সুন্দরবন বাঁচাতে বর্জ্য দূষণ ঠেকানোর উদ্যোগ সরকারের

সুন্দরবনে দূষণ। ছবি: ফাইল

সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর চ্যানেল ও মোংলা বন্দর দিয়ে যাতায়াতকারী জাহাজের বর্জ্য ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এদিকে দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নেয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এতে নৌযান সংশ্লিষ্ট, প্রকৌশলী, স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থান সম্পর্কে তাদের সামগ্রিক ধারণা দিতে হবে।

‘মোংলা বন্দরের আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ নামের এ প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদন পেলেই আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার কথা। যা চলবে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। প্রাথমিকভাবে এতে খরচ ধরা হয়েছে ৪০১ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে পশুর চ্যানেল ও মোংলা বন্দরের আশপাশের নদীগুলোতে ছড়িয়ে পড়া তেল দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে অপসারণ করা সম্ভব হবে। এ জন্য একটি অয়েল রিকভারি ফ্লিট গঠন করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ২৮ আগস্ট প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দেয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। এটি এখন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রকল্পটি সম্পর্কে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বলছে, মোংলা বন্দরে চলাচলকারী বিভিন্ন বাল্ক, কন্টেইনার, ট্যাংকার ও অন্যান্য জলযান থেকে নিঃসৃত তেল ও পেট্রোলিয়াম জাতীয় ব্লিজ, স্লাজ, ব্যালাস্ট, পানি ও অন্যান্য আবর্জনা সংগ্রহ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অয়েল, প্লাস্টিক অন্যান্য সলিড গার্বেজ আলাদা করে বিক্রি করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে সুরক্ষা হবে পরিবেশও। মোংলা চ্যানেল বা মোংলা বন্দর ও সুন্দরবনের আশপাশের নদীগুলোতে তেলবাহী ট্যাংকার বা জাহাজ দুর্ঘটনায় পড়ে তেল নিঃসরণ হলে তা ছড়িয়ে পড়ার আগে বুমের মাধ্যমে আটকে ফেলা হবে। পাশাপাশি তেল অপসারণকারী ভেসেলের মাধ্যমে এই নিঃসৃত তেল সংগ্রহ করে আইবিসি ট্যাংকে জমা হবে।

আইবিসি ট্যাংক পূর্ণ হলে ফ্লোয়েটিং স্টোরেজ ট্যাংকে জমা করা হবে। এভাবে নিঃসৃত তেল সংগ্রহের পর তা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় ট্রিটমেন্ট করে পানি ও অন্যান্য দূষিত পদার্থ আলাদা করে ব্যবহার উপযোগী করে সংরক্ষণ করা হবে। এ ছাড়া ভেসেলগুলো নিরাপত্তা পরিদর্শনের কাজ, জরুরি পাইলটিং এবং নিয়মিত চ্যানেল পরিদর্শনের কাজে ব্যবহার করা হবে।

প্রকল্পের আওতায় থাকবে একটি বর্জ্য সংগ্রহকারী জলযান, দুটি তেল অপসারণকারী ভেসেল, এক সেট ওয়ার্কশপ ক্লিনিং ইকুইপমেন্ট, দুটি ডাম্প, একটি পিকআপ ভ্যান, ২টি ডাম্প বার্জ, একটি সেল্ফ প্রপেল্ড ভেসেল, একটি সার্ভিস টাগ বোট, একটি মুরিং গিয়ারসহ পন্টুন, একটি ফর্কলিফট, ২টি মোবাইল ক্রেন, ৫টি কন্টেইনার, ৫০টি ২০০ লিটারের কন্টেইনার, পোস্ট রিসিপশন ফ্যাসিলিটিজ, এক সেট ইয়ার্ড ক্লিনিং ইকুইপমেন্ট, জেটি ১৫০০ বর্গমিটার, শেড ২০০ বর্গমিটার এবং ৩০০ বর্গমিটারের বার্ন হাউস নির্মাণ করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরের আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা ও দক্ষতা বাড়বে। সুরক্ষা হবে পরিবেশ।

এ ছাড়া মোংলা বন্দরে আসা সমুদ্রগামী জাহাজের বর্জ্য দূষণ থেকে সুন্দরবনকে রক্ষা এবং পশুর চ্যানেল ও মোংলা বন্দরের আশপাশের নদীগুলো নিঃসৃত তেল হতে দূষণমুক্ত রাখতে ভ‚মিকা রাখবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App