চলতি মৌসুমে সিরাজগঞ্জ জেলায় রেকর্ড পরিমাণ সরিষার আবাদ হয়েছে। আর এই সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে এখন ব্যস্ত মৌ-চাষীরা। সিরাজগঞ্জের চলনবিল অঞ্চলসহ জেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ। এসব ক্ষেতের পাশে বসানো হয়েছে সারি সারি মৌ-বক্স। আর এসব বক্সে থাকা মৌমাছির গুনগুন শব্দে মুখরিত চারদিক। মৌ চাষীরা ব্যস্ত সময় পার করছে মধু সংগ্রহে।তবে আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় চাহিদা মতো মধু সংগ্রহ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মৌ-চাষিরা। মধু শিল্পের উন্নয়নের জন্য আর্থিক ঋণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানিয়েছেন মৌ চাষিরা। জেলার সংগ্রহ করা উন্নতমানের মধু পাইকারী ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৌ চাষীরা। কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর প্রায় ২০ হাজার মৌ বক্স স্থাপন করা হয়েছে। এ বছর সর্বোচ্চ মধু উৎপাদন করে সারা দেশের মধ্যে প্রথম হবে সিরাজগঞ্জ জেলা। তবে মধুর কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় লোকসানের আশংকা মৌ চাষীদের। মৌ চাষী আশরাফুল ইসলাম জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মধু সংগ্রহ করতে আসেন পাইকার ব্যবসায়ীরা। তবে মধু সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ার অভিযোগ মৌ চাষীদের।আদর্শ মৌ খামারের মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, ২৫০ টি মৌ বক্স থেকে প্রতি সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ মন মধু সংগ্রহ করা যায়। সরিষার ক্ষেত্রে মৌ-বক্স স্থাপনের কারণে সরিষার ফলনও বৃদ্ধি পায়। খাঁটি মধু ক্রয় করতে অনেকেই চলে আসেন মাঠে। মাঠে মধু ক্রয় করতে আসা আল-আমিন বলেন, প্রতি বছরই আমি মাঠে থেকে ভাল মধু সংগ্রহ করি। এ বছর প্রায় ১০ কেজি মধু সংগ্রহ করব। এই মধু সারা বছর পরিবার নিয়ে ব্যবহার করি। মাঠ থেকে মধু ক্রয় করলে ভেজাল মুক্ত মধু পাওয়া যায়।সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. হাবিবুর হক জানান, সারা দেশের মধ্যে এ বছর জেলায় সর্বোচ্চ মধু উৎপাদন হওয়ার আশা করছেন কৃষি বিভাগ। চলতি বছর জেলায় ৫০ হাজার ৮’শ ৭০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৩’শ হেক্টর বেশী। ফলে জেলায় এ বছর প্রায় ২শ মেট্রিক টন মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় মধু সংগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।