×

আন্তর্জাতিক

সেই ছবিতেই পাল্টে যায় ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৩৮ পিএম

সেই ছবিতেই পাল্টে যায় ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক
সেই ছবিতেই পাল্টে যায় ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক

শেখ হাসিনা ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। পাশে মনমোহন সিং। ছবি: ফাইল।

সেই ছবিতেই পাল্টে যায় ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক

শেখ হাসিনা ও সোনিয়া গান্ধী। ছবি: ফাইল।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীর নাতনি প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। ছবিতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে বুকে জড়িয়ে ধরে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবিটি টুইট করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সেই ছবিই পাল্টে দিয়েছে ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক।

ভারত সফরকালে শেখ হাসিনা গত ১৭ অক্টোবর কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে নয়াদিল্লিতে সাক্ষাৎ করেন। তবে সেখানে সোনিয়া কন্যা প্রিয়াঙ্কার উপস্থিত থাকার কোনো কথা ছিল না। শেখ হাসিনার আগ্রহেই ইন্দিরা গান্ধীর নাতনি সেখানে এসেছিলেন।

হোটেল কক্ষে ঢুকতেই প্রিয়াঙ্কাকে বুকে জড়িয়ে ধরছিলেন শেখ হাসিনা। আর পাশে দাঁড়িয়ে সেই ভালোবাসা ও আন্তরিকতার সাক্ষী হয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কার মা কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আর কংগ্রেসের আরেক নেতা আনন্দ শর্মা।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বড় ভূমিকা রাখা ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পরিবারের প্রতি সেদিন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেননি শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা-প্রিয়াঙ্কার আলিঙ্গনাবদ্ধ সেই ছবি আবেগভরে টুইট করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী নিজে। যেটা ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

সেই ঘটনাটিকে ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন কূটনীতিকরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের নতুন এক অধ্যায় সেদিনই শুরু হয়েছিল। সেই ঘটনার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, মোদী সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখার পাশাপাশি নেহরু-গান্ধী পরিবারের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চান।

সেই ঘটনা কিছুটা অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে ফেলে মোদী শিবিরে। এরপরের ঘটনাগুলোতে তারই আলামত পাওয়া গিয়েছিল। ভারত-বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট দেখতে গত ২২ নভেম্বর কলকাতায় গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে দিল্লি থেকে কোনো মন্ত্রী বা শীর্ষ কূটনীতিককে আসতে দেখা যায়নি।

[caption id="attachment_188733" align="aligncenter" width="700"] শেখ হাসিনা ও সোনিয়া গান্ধী, পেছনে মনমোহন সিং। ছবি: ফাইল।[/caption]

মোদী সরকারের এ আচরণে যথেষ্ট ক্ষুণ্ণ হয় ঢাকার কূটনৈতিক মহল। তারা কলকাতা সফরের আগে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরকালীনও যে মোদী সরকারের উদাসীনতা ছিল সে ব্যাপারে কঠোর সমালোচনা করছেন।

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আসামে এনআরসি নিয়ে অশান্তি আর পরে নাগরিকত্ব আইন পাশ করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর মধ্যে জাতিসংঘে অধিবেশন চলাকালে এনআরসি নিয়ে মোদীর কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন শেখ হাসিনা। তবে নাগরিকত্ব বিল পাস কারনোর সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদের দুই কক্ষে বার বার পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশকে একই অবস্থানে রাখেন। এতেও তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয় ঢাকায়।

অপ্রীতিকর এসব পরিস্থিতির কারণে পর পর দুই মন্ত্রী ও প্রতিনিধি দলের ভারত সফর বাতিল করেন শেখ হাসিনা। এমনকি ভারত-বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিটির বৈঠকও স্থগিত করা হয়েছে। কূটনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে ইসলামীভাবধারার কট্টরপন্থি একটা অংশ রয়েছে। তিস্তা চুক্তিতে সাড়া না পাওয়ার পরেও শেখ হাসিনা কেন ভারত সম্পর্কে উদারতার পরিচয় দিচ্ছেন সেটা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। এ কারণেই ভারতের নাগরিকত্ব আইনের প্রভাব জটিল হয়ে পড়ছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App