×

সারাদেশ

সূর্যের দেখা নেই, দিশেহারা চরাঞ্চলবাসী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:৫৭ পিএম

সূর্যের দেখা নেই, দিশেহারা চরাঞ্চলবাসী

খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা। ছবি: প্রতিনিধি।

সূর্যের দেখা নেই, দিশেহারা চরাঞ্চলবাসী

শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেই কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছীর এক কৃষক জমি চাষের চেষ্টা করছেন। ছবি: প্রতিনিধি।

কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে হালকা শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ায় জন-জীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ অবস্থায় কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন খুব একটা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত ৩ দিন ধরে দিনের বেলা সূর্যের দেখা না মেলায় ঠাণ্ডার তীব্রতা বেড়েই চলেছে। শীতের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বৃদ্ধ ও শিশুরা সব চেয়ে বেশি ঠাণ্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে । গরম কাপড়ের অভাবে চরাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষ গুলো নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। কাজে বের হতে না পারায় আর্থিক কষ্টের মুখে পরেছে বিপুল সংখ্যক দিন মুজুর শ্রেণির শ্রমজীবী মানুষ।

শৈত্য প্রবাহের কারণে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমর, ফুলকুমরসহ সবগুলো নদ-নদী অববাহিকার চরাঞ্চলে বেশির ভাগ মানুষ খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। কনকনে ঠাণ্ডায় জেলার অসহায় দারিদ্র মানুষেরা জবুথুবু হয়ে দিন পাড় করলেও সরকারি বা বেসরকারি ভাবে শীত বস্ত্র বিতরণের কোন তৎপড়তা চোখে পড়ছে না।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিস সুত্রে জানা গেছে, শুক্রবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও উত্তরের হিমেল হাওয়া অব্যাহত থাকায় শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিস। তার সাথে ঘন কুয়াশায় ভোগান্তি বাড়ছে মানুষের।

[caption id="attachment_188242" align="aligncenter" width="700"] খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা। ছবি: প্রতিনিধি।[/caption]

কুড়িগ্রাম শহরের ভ্যান চালক আলী জানান, কনকনে ঠাণ্ডায় ঘর হতে বের হওয়া যায় না। তেমন গরম কাপড় না থাকায় ফুটপাথ থেকে কেনা একটা পুরাতন সুয়েটার ও বাড়ির একটি পুরানো চাঁদর গায়ে পেঁচিয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু তেমন ভাড়া মিলছে না। আর ভাড়া না পেলে তো খাবারও উপায় থাকে না।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর গ্রামের আবুবক্কর, পারবতীপুর গ্রামের আব্দুর রহিম ও তিন হাজারীর চরের সুলতান জানান, শীতের সাথে হিমেল হাওয়া চরাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়েছে। কেন না আমরা দারিদ্র মানুষরাই চরাঞ্চলে বসবাস করি এবং আমাদের সবার গরম কাপড় কেনার সাধ্য নেই। এজন্য ছোট ছোট বাচ্চা ও বৃদ্ধদের নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে জানান তারা।

জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখার তথ্য অনুযায়ী জেলায় এ পর্যন্ত ৫১ হাজার ৫১৪ পিচ কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা ৯ উপজেলায় বন্টন করা হয়েছে। নতুন করে আরো বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। শীত মোকাবেলার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App