হর্ন থামানো যায়নি সচিবালয় এলাকায়
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০২:১৩ পিএম
মেগা প্রকল্পের পাশাপাশি ঢাকা মেগাসিটি জুড়ে যে হারে ব্যক্তিগত পর্যায়ে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলছে তাতে প্রত্যেকটা অলিগলিই এখন ভয়াবহ শব্দ সন্ত্রাসের শিকার। আজ (মঙ্গলবার) ১৭ ডিসেম্বর থেকে সচিবালয় এলাকায় হর্ন বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সচিবালয়েই আজই বেশি শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে সেখানে। হর্ন না বাজানোর জন্য প্রচারণা চালানো হলেও অধিকাংশ চালক সে ব্যাপারে অবগত নয়।
সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সেখানে সকাল থেকেই প্রচারণা চালিয়েছেন। যানচালকদের সচেতন করে তুলতে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এ কাজে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরাও। তবে শব্দের মানমাত্রা সেখানে কমানো সম্ভব হয়নি। অজান্তেই হর্ন থেকে সহনশীল মাত্রার বেশি শব্দ তৈরি হচ্ছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, হর্ন বাজানোর কারণে সচিবালয় ও আশপাশ এলাকায় আজ শব্দের মাত্রা ৭০ থেকে ১০০ ডেসিবল পর্যন্ত রয়েছে। কোথাও আবার সে মাত্রাও অতিক্রম করে গেছে। শুধু সচিবালয়ই নয়, রাজধানীর প্রত্যেকটা পয়েন্টেই শব্দের মাত্রা ৭০ থেকে ১০০ অতিক্রম করছে। যা সহনশীল মাত্রার দেড়গুণ থেকে দ্বিগুণ।
এর আগের দিন বিজয় দিবসে শহরের অলিগলিতে যেহারে অপরিকল্পিত শব্দ উৎপাদন বা মাইক বাজানো হয়েছে তা ছিল ভয়াবহ মাত্রার। নীরব এলাকাগুলোতে সহনশীল শব্দের মানমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ ডেসিবলের নিচে। অথচ কোথাও কোথাও তা অতিক্রম করে দ্বিগুণ, তিনগুণ পর্যন্ত দেখা গেছে।
চিকিৎসরা বলছেন, সাধারণত ৬০ ডেসিবল মাত্রার শব্দ শরীর ও মনের জন্য প্রচণ্ডরকম ক্ষতিকর। সেখানে রাজধানীর প্রত্যেকটি এলাকায় প্রতি মুহূর্তে ১০০ ডেসিবল পর্যন্ত শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে। যা সহনশীল মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এতে ভয়াবহ শব্দ দূষণের শিকার হয়ে অনেকক্ষেত্রে নাগরিকদের আচরণই পাল্টে যাচ্ছে নেতিবাচকভাবে।
একে তো নগরে ভয়াবহ বায়ুদূষণ চলছে। যা পৃথিবীর অন্য শহরগুলোকে টেক্কা দিচ্ছে, তার ওপর শব্দ দূষণ নীরব ঘাতক হয়ে কেড়ে নিচ্ছে আমাদের স্বাভাবিক আবেগ, অনুভূতি ও ধৈর্য। নগরবাসীর অনেকেই আচার-আচরণের স্বাভাবিকত্ব হারিয়ে ফেলছেন। একইভাবে মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসক ও ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্টরাও।
আগামী ২০২০ সালের মধ্যে রাজধানীর এক তৃতীয়াংশ অধিবাসী (অন্তত ৭০ লাখ মানুষ) শব্দ দূষণে বধিরতা, হৃদরোগ, অস্বাভাবিক আচরণসহ নানা রোগে আক্রান্ত হবেন বলে বিশেষজ্ঞ পর্যায় থেকে সতর্ক করা হয়েছে।