×

সারাদেশ

৩ জনের ধর্ষণে মা হলো শিশু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৩০ এএম

৩ জনের ধর্ষণে মা হলো শিশু

কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে ধর্ষণের শিকার পঞ্চম শ্রেণির সেই শিশু ছাত্রী (১২)। শনিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে নবজাতকের জন্ম হয়। নবজাতকের শ্বাসকষ্ট থাকায় তাকে শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নবজাতকের মা সুস্থ আছে। তবে তার সন্তানের বাবা কে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সবাই। ধর্ষণের শিকার শিশুটির ভাষ্য, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাবুল চাপরাশী এবং একই বাড়ির চাচা সম্পর্কের জুয়েল ও রনির ধারাবাহিক ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে শিশুটি। ১০ ডিসেম্বর থেকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ তলায় গাইনি-২ বিভাগে ভর্তি রয়েছে সে। হাসপাতালের প্রশাসনসহ তার চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছে ভোলা ব্লাড ডোনার্স ক্লাব নামের একটি সংগঠন।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভোজমহল গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান এই স্কুলছাত্রী। চার ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। তার মা বিভিন্ন বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন এবং বাবা সবজি বিক্রি করেন। ভোলা ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের পক্ষে সার্বক্ষণিক হাসপাতালে অবস্থান করছেন কলেজছাত্র সুজন। তিনি বলেন, শনিবার সকালে হাসপাতালের চিকিৎসকদের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাভাবিক প্রসবে ঝুঁকি থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন করার সিদ্ধান্ত হয়। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কন্যা শিশুর জন্ম হয়। শিশুটির বাবা গ্রামের বনজঙ্গল থেকে কচুসহ যাবতীয় শাক-সবজি তুলে বিক্রি করে সংসার চালান। গর্ভে বয়স ৪ মাস থাকাকালীন শিশুটির মা জানতে পারলেও অর্থের অভাবে চিকিৎসা এবং ধর্ষকদের প্রভাবে মুখ খুলতে না পারায় আজ এ পর্যায়ে পৌঁছে। এখন বড় দুশ্চিন্তা হলো কে নেবে এই নবজাতক ও শিশু মায়ের দায়িত্ব। আর কে এই নবজাতকের বাবা!

ধর্ষণের শিকার শিশুটি জানায়, প্রায় এক বছর আগে প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেন বিদ্যালয় ভবনের ৩ তলায় লাইব্রেরি কক্ষে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর প্রায়ই সহকারী শিক্ষিকা রেবাকে দিয়ে তাকে লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক ধর্ষণ করত। রেবা লাইব্রেরির বাইরে পাহারায় থাকত। পরে একই বাড়ির সম্পর্কে চাচা জুয়েলও বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে তাকে ধর্ষণ করত। এ ছাড়া রনি নামে এক প্রতিবেশীও তাকে ধর্ষণ করে। গর্ভের ৪ মাসের সময় শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন হলে মায়ের চাপের মুখে তার কাছে সবকিছু খুলে বলে। তখন প্রধান শিক্ষকের চাপের মুখে শুধু জুয়েলকে আসামি করে মামলা করেন শিশুটির মা।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শুধু জুয়েলকে আসামি করে মামলা করেন। ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে সে এ মামলায় কারাগারে। এ ছাড়া ওই শিশু শুধু জুয়েলকে দায়ী করে ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার চার্জশিটও দেয়া হয়েছে। এখন প্রধান শিক্ষকের নাম আসা প্রসঙ্গে ওসি বলেন, জুয়েল শিশুটির নিকটাত্মীয়। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে প্রধান শিক্ষকের নাম আসতে পারে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বাবুল চাপরাশীর মোবাইল ফোন বন্ধ ও আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তার স্বজনরা বলছেন, তিনি স্থানীয় রাজনীতির শিকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App