×

সারাদেশ

মৃত্যুর ৪ বছর পর বরাদ্দ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:১৯ এএম

মৃত্যুর ৪ বছর পর বরাদ্দ

জীবিত অবস্থায় ভাতা গ্রহণ করে যেতে পারেননি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব হাওলাদার। সেই ভাতা বরাদ্দ হলো মৃত্যুর ৪ বছর পর। সেখানেও ঘটে বিপত্তি। দেখা দেয় নাম বিভ্রাট। মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে তার নাম মো. আ. রব হাং এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে আব্দুর রব হাওলাদার। এই ত্রুটির কারণে ৬ বছর ধরে ঝুলে আছে ভাতার কার্যক্রম। ২০১৪ সালে ২৩ ডিসেম্বর শরণখোলা উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে মুক্তিযোদ্ধা রবের সম্মানী ভাতার অর্থ তার স্ত্রী খাদিজা বেগমের নামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু নামে সামান্য ত্রুটির কারণে সমাজসেবা অফিস থেকে তা আটকে দেয়া হয়। এরপর থেকে মৃত ওই মুক্তিযোদ্ধার পরিবার উপজেলা প্রশাসন থেকে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত বহুবার ছোটাছুটি করেও ভাতার জট খুলতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর প্রথম ২০০৪ সালে বাগেরহাট জেলা যাচাই-বাছাই কমিটি আব্দুর রব হাওলাদারকে একজন প্রকৃত যোদ্ধা হিসেবে শরণখোলা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ১৮ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত করে। ২০০৫ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত গেজেটের ৩৮৩৮ নম্বর তালিকায়ও তার নাম রয়েছে। ২০১০ সালের ৬ জুলাই উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের উত্তর কদমতলা গ্রামের নিজ বাড়িতে মারা যান ওই মুক্তিযোদ্ধা। মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন এবং সরকারি অনুদান হিসেবে তার পরিবারকে ৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে তার স্ত্রী খাদিজা বেগমের নামে ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রবের স্ত্রী খাদিজা বেগম (৬০) জানান, তার স্বামী একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সরকারি কোনো সহযোগিতা পাননি। তারা স্বামী-স্ত্রী এবং ৪ মেয়ে, ১ ছেলেসহ বিশাল এক সংসার চালাতে গিয়ে তাকে মানুষের বাড়ি বাড়ি দিনমজুরি করতে হয়েছে। জীবনের শেষ সময়ে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে মারা গেছেন তিনি। তিনি আরো জানান, তার স্বামী বেঁচে থাকতে ভাতার মুখ দেখে যেতে পারেননি। মৃত্যুর পর ভাতা বরাদ্দ হলেও তিনি ভোগ করে যেতে পারবেন কিনা তাও তার জানা নেই। বৃদ্ধ শরীর নানা রোগে আক্রান্ত। টাকার অভাবে ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে পারছেন না। একমাত্র ছেলে আ. রহমান জসিম স্যানিটারি মেকানিকের কাজ করে যা আয় করে তা দিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। এ অবস্থায় তার স্বামীর নামে বরাদ্দকৃত ভাতা যাতে ছাড় পেতে পারেন তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়েছেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অতীশ সরদার বলেন, নাম সংশোধনীর জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। সংশোধিত নাম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হলে ভাতা পেতে আর কোনো বাধা থাকবে না। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হলে তিনি অবশ্যই ভাতা পাবেন। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App