×

মুক্তচিন্তা

মুদ্রায় বিজয় দিবসের চেতনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:২৪ পিএম

মুদ্রা হচ্ছে অর্থনীতির প্রধান বিনিময় মাধ্যম এবং একটি দেশের সার্বভৌমত্বের অন্যতম নিদর্শন। কোনো দেশের মুদ্রা যেমন সেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বর্ণনা করে, তেমনি সেই দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক এবং ভৌগোলিক ছবিও তুলে ধরে।বাংলাদেশের মুদ্রাও তার ব্যতিক্রম নয়। এ দেশের মুদ্রায় জাতির জনক, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা, আবহমান বাংলার সংস্কৃতি, ভাষা আন্দোলন এবং বিশেষত স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মারক অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাদ যায়নি পাকিস্তানি শাসনের সাড়ে ২৩ বছরের শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে ছিনিয়ে আনা বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন মহান বিজয় দিবস। স্মারক ধাতব ও কাগুজে মুদ্রায় জাতির জনক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাত বীরশ্রেষ্ঠ এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি ব্যবহার করে বাঙালির মহান এ অর্জনকে নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবসের অর্জন ও আনন্দকে স্মরণীয় করে রাখতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পর্যন্ত পৃথক দুটি স্মারক রৌপ্যমুদ্রা ও দুটি স্মারক কাগুজে নোট প্রকাশ করেছে। সর্বপ্রথম ১৯৯১ সালে ২০তম বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক এক টাকা অভিহিত মূল্যের একটি স্মারক রৌপ্যমুদ্রা প্রকাশ করে। যার মুখ্য পিঠে রয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং গৌণ পিঠে রয়েছে সাত বীরশ্রেষ্ঠের মুখাবয়ব। এরপর ১৯৯৬ সালে বিজয় দিবসের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে বাজারে দশ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রচারিত (ঈরৎপঁষধঃবফ) স্মারক নোট ছাড়া হয়। লুৎফর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত এ নোটটির মুখ্য দিকে (ডানে) টাঙ্গাইলের বিখ্যাত আতিয়া জামে মসজিদের ছবি এবং (বামে) জলছাপের নিচের দিকে ‘বিজয় দিবস রজতজয়ন্তী ’৯৬’ কথাটি মুদ্রিত রয়েছে। আর গৌণ দিকে রয়েছে কাপ্তাই বাঁধের স্পিলওয়ের ছবি। এরপর দীর্ঘদিন বিরতি দিয়ে ২০১১ সালে বিজয় দিবসের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চল্লিশ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক নোট ও দশ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক রৌপ্যমুদ্রা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। স্মারক দুটির এক পাশে স্থান পেয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তর্জনী অঙ্গুলি তোলা প্রতিকৃতি এবং অপর পাশে অস্ত্র উঁচিয়ে দণ্ডায়মান জাতির সূর্য সন্তান ৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি। মূলত স্মরণ থেকেই স্মারক শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, স্থান এবং ঘটনাগুলোকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনিয়মিত ও অবিনিময়যোগ্য যে মুদ্রার প্রচলন করে তাই স্মারক মুদ্রা। এই মুদ্রা কোনো প্রকার বিনিময় মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট দেশে বেড়াতে গেলে, তাদের কাছে নিজের দেশের ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্যই এসব স্মারক মুদ্রা উপহার হিসেবে দেয়া হয়। তবে যে কোনো নাগরিক শখের বশে নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে এসব মুদ্রা ক্রয় করতে পারে। স্মারক মুদ্রা সংশ্লিষ্ট দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং নির্দিষ্ট সময়ের সাক্ষী। এগুলোর মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া সময় ও অতীতকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা সম্ভব। শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App