×

সারাদেশ

আজ বগুড়া মুক্ত দিবস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:২৮ এএম

আজ বগুড়া মুক্ত দিবস
আজ ১৩ ডিসেম্বর বগুড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহরের ফুলবাড়ী এলাকায় পাক বাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণের মধ্য দিয়ে বগুড়াকে হানাদার মুক্ত করেন। একই দিন হানাদার মুক্ত হয় বগুড়ার নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলাও। বগুড়া বাংলাদেশের একমাত্র জেলা যার দখল নিতে পাক বাহিনীর সময় লেগেছিল ২৩ দিন। এরপর নির্ভীক মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে পাক বাহিনীর বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ সকালে রংপুর থেকে পাক বাহিনী সড়ক পথে এসে বগুড়া দখল নিতে আক্রমণ চালায়। টানা পাঁচ দিন যুদ্ধের পর মুক্তিবাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের মুখে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। পাক বাহিনীকে বগুড়া থেকে হটিয়ে দিতে ওই কদিনে আজাদ, টিটু, তোতা, তারেকসহ প্রায় ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়। ১৭ এপ্রিল সড়ক এবং আকাশ পথে হামলা চালিয়ে আবারও বগুড়ার দখল নেয় পাক বাহিনী। এর পরপরই শুরু হয় তাদের নারকীয় হত্যাকাণ্ড। শহর এলাকা ছাড়াও তারা বগুড়ার শাজাহানপুরের বাবুর পুকুর এলাকায় সাতজন মুক্তিযোদ্ধাসহ ১৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ভোর থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা বগুড়াকে শত্র“ মুক্ত করার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। এজন্য তারা শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে নওদাপাড়া, চাঁদপুর ও ঠেঙ্গামারা এলাকায় নিজেদের অবস্থান সুসংহত করে। পরে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর ৬৪ মাউন্টেন্ট রেজিমেন্টের বিগ্রেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার প্রেম সিংহের নেতৃত্বে ট্যাংক নিয়ে তারা শহরের দিকে এগুতে থাকে। ওইসব এলাকার অসংখ্য যুবকও সেদিন তাদের সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১৩ ডিসেম্বর সকালে তারা শহরের ফুলবাড়ী এলাকায় পৌঁছার পর পাক বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। তবে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পাক বাহিনী পিছু হটে। পরে ওইদিন দুপুরে ফুলবাড়ী সংলগ্ন শহরের বৃন্দাবন পাড়া এলাকায় পাক বাহিনীর প্রায় ৭০০ সৈন্য আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। তাদেরকে বন্দী করে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয়ে মিত্র বাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়। শহরের ফুলবাড়ীতে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের স্মরণে ২০০৫ সালে ‘মুক্তির ফুলবাড়ী’ নামে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। এছাড়া নভেম্বর মাসে শহরের বাড়ি বাড়ি তল­াশি করে বাবুরপুকুর নামক স্থানে ধরে নিয়ে গিয়ে যে ১৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে হানাদার বাহিনী সেই বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নির্মিত হয়েছে এক স্মৃতিসৌধ। এছাড়া বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বীরশ্রেষ্ঠ স্কয়ার। সেখানে দেশের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের ছবি ও নাম শোভা পাচ্ছে। তাদের সেই বীরগাঁথা কাহিনী আজকের এই দিনে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে বগুড়াবাসী। তবে বিজয়ের ৪৮ বছর পার হয়ে গেলেও বগুড়ার বেশ কিছু বধ্যভূমিগুলো এখনো অযত্ন এবং অবহেলায় পড়ে আছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App