×

সম্পাদকীয়

ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা জরুরি

Icon

nakib

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:৩১ পিএম

কারখানায় আগুন আমাদের জন্য ভয়াবহ এক আতঙ্কের ব্যাপার। বিশেষ করে তাজরীন ফ্যাশন অগ্নিকান্ড, নিমতলী রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকান্ড চরম ভয়াবহতার যে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে, তাতে আর কোনো কারখানায় আগুন লাগার খবর শুনলে আতঙ্কিত না হয়ে পারা যায় না। তারপরও আগুন আমাদের পিছু ছাড়ে না। গত বুধবার ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানায় ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ হয়ে ১৩ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থনে কারখানায় বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। যা বহু শ্রমিকের জীবন বিপন্ন করছে, সম্পদ বিনষ্ট করছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ও শ্রমিক নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। এটা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। ভোরের কাগজসহ গতকালের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত অগ্নিকান্ডের সংবাদ থেকে জানা যায়, বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের প্রাইম পেট এন্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর টিনশেড কারখানাটিতে আগুন ধরে যায়। কারখানার শতাধিক শ্রমিক দৌড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। এ সময় ভেতর থেকে আগুনের ফুলকি বের হতে দেখা যায়। ঘটনার পরপরই আশপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রথমে ৫-৭ জনকে কারখানা থেকে বের করেন তারা। আগুনে ঘটনাস্থলেই এক যুবক নিহত হন। বাকি ১১ জনের বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। কারখানাটিতে গত দুই বছরে তিনবার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার দুটোই ঘটেছে চলতি বছরে। প্রতিটি অগ্নিকান্ডে ছিল ভয়াবহ। এরপরও কর্তৃপক্ষ সতর্ক হয়নি। মালিক পক্ষের অসাবধানতা বা যান্ত্রিক ত্রুটি যে কোনো কারণেই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ উঠছে। কারখানায় নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কিনা বা সেখানে অগ্নিকান্ড ঘটলে নিরাপদ আশ্রয় নেয়ার মহড়া হতো কিনা আমাদের জানা নেই। অগ্নিকান্ডের কারণের সঙ্গে এ বিষয়গুলোরও তদন্ত হওয়া দরকার। ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করাও জরুরি। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের নিরাপত্তার বিষয়টি কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে, বাস্তবে এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা হয়নি। দুর্ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসলেও তাতে যে সুফল মিলছে না। অভিজ্ঞজনদের মতে, তদারকি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির পাশাপাশি অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়াও কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বাড়ার কারণ। দেশে এ সংক্রান্ত আইনের বিভিন্ন ফাঁক-ফোকর থাকার ফলে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে না। দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে এসব অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা দরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App