কর্ণফুলী উপজেলার (মুক্তিযোদ্ধা নামধারী) পেয়ার মোহাম্মদ (৫৮) ও মো. রেজাউল করিম নামে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছেন কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান তালুকদার। ঢাকার বিজ্ঞ সিএমএম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ‘ল’ রিপোটার্স ফোরাম কার্যালয়ে মামলায় অভিযুক্তরা সংবাদ সম্মেলন করেন। পরের দিন ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় ধারাবাহিক শিরোনাম ‘বসতভিটা ফিরে পেতে চান চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা পেয়ার মোহাম্মদ’ ও বসত ভিটা ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ সম্মেলন করা ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে তাতে বলা হয়, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান তালুকদার তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে বসত বাড়ি ভেঙে ১০ বিঘা সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। এমনকি দলের নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগের সভাপতি তার মামলায় উল্লেখ্য করেন, তিনি একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে তোলা আসামিদের প্রকাশিত অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। বরং সনদধারী মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও পেয়ার মোহাম্মদ অবৈধ সুযোগ ভোগের জন্য মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে এবং অপর আসামি রেজাউল করিম বিভিন্ন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছেন। এতে সোলায়মান তালুকদারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও উল্লেখিত জাতীয় দৈনিকে তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করে বিভিন্ন পদ পদবি ও ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে পরিবারের সম্মান ক্ষুন্ন করেছেন। এতে তিনি রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। যার আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ (দুই) কোটি টাকা। বাদিপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আশরাফ উদ্দিন আহমেদ জানান, ‘পেয়ার মোহাম্মদসহ ২ জনের বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটিকে আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের আদেশ প্রদান করেছেন।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদি মোহাম্মদ সোলায়মান তালুকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চলমান শুদ্ধি অভিযানে আমাকে ও আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে বিব্রত করতে একটি স্বার্থন্বেষী মহল ও অভিযুক্তরা মিলে আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন সংবাদ সম্মেলন ও খবর প্রকাশ করেছে। এতে আমার প্রচুর মান সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে। আমি আসামিদের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালতে মানহানি মামলা করেছি। কর্ণফুলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, কর্ণফুলীতে পেয়ার মোহাম্মদ নামের কোন ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম নেই। যদি এ নামে কেউ মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে তা হলে তা হবে অবৈধ ও ভূয়া। মানহানি মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পেয়ার মোহাম্মদ বলেন, জায়গাটি নিয়ে মামলা রয়েছে। সোলায়মান তালুকদার কোনো ক্রেতা বা বিক্রেতা নয় তা সত্য কিন্তু তার আশ্রয় প্রশ্রয়ে আমাদের জমি বেদখল হয়েছে। আমি মুক্তিযুদ্ধে করলেও অক্ষর জ্ঞান না থাকার কারণে পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নিবন্ধন নিতে পারেননি।